Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National news

দরজা ভাঙতেই মেয়ে দেখলেন সোফায় বাবার কঙ্কাল

৭০ বছরের ওই ব্যক্তির নাম কে পি রাধাকৃষ্ণণ। তিনি কেরলের ডেন্টাল কলেজের শিক্ষক ছিলেন। অবসরের পর থেকে তিরুঅনন্তপুরমের ওল্ড মেডিক্যাল কলেজ রোডের একটি দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ১৮:১৩
Share: Save:

সপ্তাহখানেক ধরে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তিনি। এক বার বাবার বাড়িতে এসে ঘুরেও গিয়েছেন। দরজা বন্ধ দেখে আর ডাকাডাকিতে সাড়া না পেয়ে ফিরে যান। উপায় না পেয়ে দরজা ভাঙারই সিদ্ধান্ত নেন। রবিবার দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই আঁতকে ওঠেন তিনি। বৈঠকখানার সোফায় স্থির হয়ে পড়ে রয়েছেন বাবা। পচাগলা দেহ, কোথাও আবার কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে। রবিবার কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ৭০ বছরের ওই ব্যক্তির নাম কে পি রাধাকৃষ্ণণ। তিনি কেরলের ডেন্টাল কলেজের শিক্ষক ছিলেন। অবসরের পর থেকে তিরুঅনন্তপুরমের ওল্ড মেডিক্যাল কলেজ রোডের একটি দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন। স্ত্রী অম্বিকা কোট্টায়ামে মেয়ের সঙ্গে আলাদা থাকেন। স্ত্রী অম্বিকা এবং মেয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখতেন রাধাকৃষ্ণণ। মাঝেমধ্যে এসে মেয়ে তাঁকে দেখে যেতেন।

কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে বাবার খোঁজ পাচ্ছিলেন না তিনি। ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। ফোনও বন্ধ ছিল। দরজার বাইরে বিল এবং চিঠি জমছিল। রবিবার সেগুলিই নিতে আসেন রাধাকৃষ্ণণের মেয়ে। পুলিশকেও খবর দেন তিনি। পুলিশই দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে।

মেডিক্যাল কলেজ পুলিশের এসএইচও গিরিলাল জানান, দরজা খুলতেই দুর্গন্ধে এক মুহূর্ত ভিতরে দাঁড়ানো যাচ্ছিল না। কোনও রকমে ভিতরে ঢোকেন। দেখেন সোফার উপরে ওই ব্যক্তির মৃতদেহটি পড়ে রয়েছে। পচেগলে গিয়েছিল দেহটি। কিছু কিছু জায়গায় কঙ্কালও বেরিয়ে পড়েছে। তাঁর মেয়ে মৃতদেহটি শনাক্ত করেছেন। কী ভাবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। অস্বাভাবিক খুনের মামলা রুজু করে তদন্তও শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: গরবায় তোরা কেন? দলিত যুবককে পিটিয়ে খুন গুজরাতে

কিন্তু এত দিন তাঁকে বাইরে না দেখতে পাওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশীরা কেন পুলিশকে জানাননি? কেনই বা তাঁর মেয়ে আগে পুলিশে খবর দিলেন না?

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, রাধাকৃষ্ণণ আশেপাশে কারও সঙ্গেই খুব একটা মিশতেন না। প্রয়োজন ছাড়া বাইরেও বেরোতেন না। সে কারণে প্রতিবেশীরাও তাঁর খোঁজ নেননি।

মাস দুয়েক আগে ঠিক এরকমই ঘটনা ঘটেছিল মুম্বইয়ে। প্রায় এক বছর বিনা যোগাযোগে আমেরিকায় কাটানোর পর বাড়ি ফিরে মায়ের কঙ্কাল দেখেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার ছেলে। তাঁর মা-ও ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন।

পরিবারগুলি ভাঙতে ভাঙতে এখন নিউক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে। সন্তানরা কাজের সূত্রে বাবা-মাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বহু দূরে। একাকিত্ব এবং সন্তানদের বাবা-মায়ের প্রতি চরম ঔদাসীন্যই কি এর কারণ? এই জন্যই কি ওই মৃত বৃদ্ধকে দীর্ঘ দিন ঘরবন্দি থাকতে হল? তবে কি কর্মব্যস্ত জীবনে প্রিয়জনদের পরিণতি এটাই হতে চলেছে? মুম্বই এবং তিরুঅনন্তপুরমের ঘটনাগুলি সেই প্রশ্নই সামনে নিয়ে এল।

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Skeleton Death কেরল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE