কে সুধাকর এবং স্ত্রী রাজেশ্বরী।
‘ডাকিনী বিদ্যা’ প্রয়োগ করে পরিবারের ক্ষতি করা হচ্ছে, এই অভিযোগে নিজের দাদা-বৌদিকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল তাঁরই ভাইয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেই সময়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি কেউই। বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদ থেকে ১১৭ কিলোমিটার দূরে তেলঙ্গানার দুবাক্কা গ্রামে। অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত রয়েছে নিহতের ভাই ছাড়া আরও চার আত্মীয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তদের সকলেই পলাতক।
দীর্ঘ দিন ধরেই দুবাক্কা গ্রামে বসবাস করতেন কে সুধাকর (৫৬) এবং রাজেশ্বরী (৫২)। ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল ছিল না সুধাকরদের। মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা লেগে থাকত। ঘটনার দিনও তেমনই ঘটেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রথমে দু’ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। তার কিছু পরে ভাই এবং আরও চার আত্মীয় সুধাকরদের টানতে টানতে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসে। বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে তাঁদের বেঁধে ফেলা হয়। তারপর দু’জনের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।
এই জায়গাতেই পুড়িয়ে মারা হয় তাঁদের
সুধাকরদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। সুধাকরের ছেলে এমনকী তাঁর ভাইয়ের ছেলেমেয়েরাও তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আকুতি-মিনতি করতে থাকে। ছেড়ে দিলে তাঁরা ওই গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। সবার চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মারা যান ওই দম্পতি।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগে চম্পট দেয় পাঁচ অভিযুক্তই। সুধাকর এবং স্ত্রী রাজেশ্বরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। শরীরের ৮০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে যাওয়ায় দু’জনেরই মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: সামার সারপ্রাইজ বাতিলের পরেও তিন মাস ফ্রি ডেটা পাবেন কী ভাবে?
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরেই ওই ঘটনা।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ডাকিনী বিদ্যার প্রয়োগ করা হচ্ছে এই অভিযোগে খুনের ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি। ২০০২ থেকে ২০১২ শুধুমাত্র এই দশ বছরেই অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গনায় ৩৫০টি খুনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ২০১৫ সালেই খুন হন ১৩৫ জন।
ছবি: টুইটার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy