রাকেশ আস্থানা।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআইকে বেছে বেছে বিরোধী দলের নেতাদের পিছনে কাজে লাগানোর অভিযোগ নতুন নয়। এ বার বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাঁর আস্থাভাজন আইপিএস অফিসার রাকেশ আস্থানাকে সিবিআইয়ের বিশেষ অধিকর্তার পদে বসিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে। কারণ আস্থানার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনেই অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে আস্থানার নামে ভিজিল্যান্স কমিশনের নিয়োগ কমিটিতেও আপত্তি ওঠে বলে অভিযোগ। একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে মেলা ডায়েরিতে রাকেশ আস্থানার নাম পাওয়া গিয়েছিল। সিবিআই নিজেই যে মামলায় এফআইআর দায়ের করেছে। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বেআইনি। অবশ্যই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে।’’ আস্থানা এত দিন সিবিআইয়ের অতিরিক্ত অধিকর্তা ছিলেন। বিশেষ অধিকর্তা হয়ে তিনি সিবিআইয়ের দু’নম্বর ব্যক্তি হয়ে উঠলেন। রবিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্তের পরে আস্থানার পদোন্নতির নির্দেশিকা জারি হয়। তাৎপর্যপূর্ণ হল, মন্ত্রিসভার এই কমিটির সদস্য মাত্র দু’জন। মোদী নিজে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। মোদী রবিবার সারাদিন গুজরাতেই ছিলেন। সন্ধ্যার পরে তিনি দিল্লি ফেরেন। কেন গভীর রাতে বৈঠক ডেকে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এই ধরনের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের নিয়োগ কমিটির ছাড়পত্র প্রয়োজন হয়। যে কমিটিতে মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার ছাড়াও অন্য দুই কমিশনার, স্বরাষ্ট্রসচিব, কর্মিবর্গ দফতরের সচিব, সিবিআইয়ের অধিকর্তা রয়েছেন। সূত্রের খবর, শনিবার এই কমিটির বৈঠকেও আস্থানার নামে আপত্তি ওঠে। একটি সূত্রের দাবি, কমিটির বৈঠকে সিবিআই অধিকর্তাই আস্থানার নামে আপত্তি জানান। অন্য একটি সূত্রের দাবি, আপত্তি উঠেছিল ঠিকই। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। সোমবার ফের কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। তার আগেই কেন মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি সিদ্ধান্ত নিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আস্থানা রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। সবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডেরও তদন্তে ছিলেন তিনি। আস্থানাকে সিবিআইয়ে নিয়ে এসে তাঁকে অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার দুর্নীতি ও লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কপ্টার দুর্নীতিতে সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেলের নামও জড়িয়েছে।
আস্থানাকেই অন্তর্বর্তী সিবিআই প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছিল মোদী সরকার। সরিয়ে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের তৎকালীন দ্বিতীয় শীর্য কর্তা আর কে দত্তকে। তা নিয়েও সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। চাপের মুখে মোদী সরকার পিছু হটলেও এ বার তাঁকে বিশেষ অধিকর্তা করে বস্তুত ভবিষ্যতে সিবিআই প্রধানের পদই নিশ্চিত করা হলো বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy