প্রশ্নপত্র ফাঁস করল দুষ্টচক্র। কিন্তু তার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। প্রশ্ন ফাঁসের জেরে সিবিএসই দ্বাদশের পড়ুয়াদের আবার বসতে হচ্ছে অর্থনীতির পরীক্ষায়। যুদ্ধশেষের পরে ফের যুদ্ধের আতঙ্কে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন বহু পরীক্ষার্থী।
নতুন ভাবে প্রস্তুতি চালানোর ঝক্কি তো আছেই। তার উপরে পরীক্ষা-পরবর্তী যাবতীয় পরিকল্পনাই বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। অনেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। বেড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বহু পড়ুয়া। ফের পরীক্ষার বোঝা কাঁধে চাপায় সবই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হতাশা থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ মনোরোগ চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছেন। ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছেন মনোবিদেরা।
প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় সিবিএসই দ্বাদশের অর্থনীতির পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। শুক্রবার সিবিএসই জানায়, ২৫ এপ্রিল ফের পরীক্ষায় বসতে হবে পরীক্ষার্থীদের। পড়ুয়াদের বক্তব্য, প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পরীক্ষা চলার পরে এমনিতেই ধৈর্য রাখা বেশ মুশকিল হয়ে পড়ে। তার উপরে একই পরীক্ষা যদি দু’বার দিতে হয়, সেটা বড্ড বেশি ঝক্কির। এবং দুর্ভাগ্যের।
সাউথ পয়েন্ট হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থী সৌম্যদীপ চন্দ্র বলেন, ‘‘১৫ এপ্রিল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি চালাচ্ছিলাম। মে মাসে প্রেসিডেন্সিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা রয়েছে। তার মধ্যে ফের অর্থনীতির জন্য প্রস্তুত হতে হবে ভেবেই বিরক্ত লাগছে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আমাদের তো কোনও দোষ নেই। অথচ আমরাই ভুগছি!’’ অশোক হল গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্রী অর্ণা দীর্ঘাঙ্গীর কথায়, ‘‘আবার ২২টা অধ্যায় পড়ে পরীক্ষা দিতে হবে ভেবেই বিরক্ত লাগছে। মন স্থির রাখতে পারছি না। ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতিও চালাতে পারছি না।’’
মনোবিদদের পরামর্শ
• সবই পড়া আছে, শুধু এক বার ঝালাই।
• অনেকেরই অসুবিধা হচ্ছে। সকলে পারলে তুমিও পারবে।
• আগের ভুল শুধরে নেওয়া সুযোগ পাচ্ছ। আনন্দে থাকো।
• পরের প্রশ্ন কঠিন হবে, এই ধারণাটাই ভুল।
এর মধ্যে ২২ এপ্রিল এ রাজ্যের জয়েন্ট বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা। তার প্রস্তুতি ব্যাহত হবে ভেবেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তা-ও বিশ বাঁও জলে।
পড়ুয়া আর অভিভাবকদের এই উটকো সঙ্কটে ধৈর্যই একমাত্র প্রতিষেধক বলে জানাচ্ছেন মনোবিদেরা। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলেন, ‘‘সকলকে ভাবতে হবে যে, ঝক্কিটা তাঁর একার নয়। বহু পরীক্ষার্থীর একই অসুবিধা হচ্ছে। এটা ভেবে নিতে পারলে কষ্ট কমে যাবে। তা ছাড়া বিষয়টি তো তাঁদের পড়াই আছে। পরীক্ষার আগে শুধু এক বার ঝালিয়ে নিলেই হবে। এটাকে সমস্যা হিসেবে দেখার প্রয়োজন নেই।’’ ধৈর্য ধরে পরিস্থিতির মোকাবিলার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেক অধ্যক্ষ-অধ্যক্ষা। ‘‘ধৈর্য রাখতে হবে। হতাশ হলে চলবে না,’’ বললেন গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের প্রিন্সিপাল ইন্দ্রাণী মিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy