পীযূষ গয়াল ও স্মৃতি ইরানি
লোকসভা ভোটের আর এক বছর বাকি। ঠিক এই সময় মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ রদবদল ঘটালেন নরেন্দ্র মোদী।
অরুণ জেটলি সুস্থ না হয়ে ওঠা পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে। যিনি শিল্পপতিদের একাংশের বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক থেকে স্মৃতি ইরানিকে সরিয়ে দিলেন। স্মৃতির হাতে থাকল শুধুই বস্ত্র মন্ত্রক।
আজকেই জেটলির কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হলেও তাঁর সুস্থ হয়ে উঠতে অন্তত দেড় থেকে দু’মাস সময় লাগবে। জেটলি অর্থ ছাড়াও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্বেও ছিলেন। জেটলিকে নিয়ে শিল্পমহলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেই তুলনায় বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের লোক গয়াল পুরোপুরি শিল্প-বন্ধু বলে পরিচিত। খাতায়-কলমে সাময়িক ভাবে হলেও গয়ালকে অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়ে মোদী শিল্পপতিদের একাংশকেই ইতিবাচক বার্তা দিলেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও গয়ালের নামে এর আগে দু’বার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেস তাঁর বরখাস্তের দাবিও করেছিল। কিন্তু মোদী এ দিন বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর আস্থা অটুট। গয়াল এখন রেল ও কয়লার মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে অর্থ ও কর্পোরেট মন্ত্রক যোগ হওয়ায় মোদী সরকারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠলেন তিনি।
অন্য দিকে, রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, নানা বিতর্কে জড়িয়ে এর আগে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে সরতে হয়েছিল স্মৃতিকে। এ বারও তা-ই হল। মোদী সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে— এমন ভাবমূর্তি তৈরি করে ফেলার মূল্য দিতে হল তাঁকে। কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘ভুয়ো খবর’ পরিবেশনের অভিযোগ উঠলে তাঁর সরকারি অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড সাময়িক ভাবে বাতিল করার হুমকি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল স্মৃতির মন্ত্রক। বিরোধীদের আক্রমণের মুখেও অনড় ছিলেন স্মৃতি। শেষে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই নির্দেশিকা জারি করে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে বলা হয়। সেদিনই স্মৃতির অপসারণ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে বিজেপির নেতাদের মত। সেই সঙ্গে জাতীয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির থাকা-না থাকা ঘিরে এ বার যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তার দায়ও স্মৃতির উপরে কিছুটা বর্তেছে। ফলে তাঁর জায়গায় আনা হচ্ছে রাজ্যবর্ধন রাঠৌরকে। যিনি এত দিন ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মোদীর সরকারে রাজ্যবর্ধন এই মন্ত্রকে পঞ্চম মুখ। ভোটের আগে সরকারের কাজ ও সাফল্য প্রচারে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাঠৌরের উপর সেই আস্থা রাখছেন মোদী।
দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকেও পানীয় জল ও নিকাশের প্রতিমন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে তাঁর পছন্দের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। অহলুওয়ালিয়া বিজেপিতে ‘গুগল-আঙ্কল’ বলে পরিচিত। কেরলের কে আলফোন্স এখন থেকে শুধুই পর্যটন মন্ত্রক সামলাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy