Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sushil Kumar Modi

নীতীশের ক্ষতে প্রলেপ, শিক্ষা চিরাগকে, সুশীলকে রাজ্যসভায় মনোনীত করে ফের চমক বিজেপির

রামবিলাস পাসোয়ানের ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভা আসনটি চিরাগের হাতে য়েতে পারে বলে জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু সুশীলকুমার মোদীকে নামিয়ে সেটির দখল নিতে চলেছে বিজেপি।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
পটনা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২০ ১৫:২৫
Share: Save:

বিহারে পদ্ম ফোটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। তার পরেও নয়া সরকারে জায়গা হয়নি। তাতে অনেকের কপালেই ভাঁজ পড়েছিল। কিন্তু সেই সুশীলকুমার মোদীকে নিয়ে যে অন্য ভাবনা ছিল বিজেপির, তা এ বার প্রকাশ্যে এল। বিহারের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল তারা। তার জন্য লোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) নেতা প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের ছেড়ে যাওয়া আসনে সুশীলকে মনোনীত করা হয়েছে। তাদের এই পদক্ষেপ বিহারে গেরুয়া শিবিরের ভিত আরও মজবুত করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আগামী ১৪ জানুয়ারি রামবিলাসের ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভা আসনটিতে উপনির্বাচন। তার জন্য শুক্রবার সুশীলকে মনোনীত করেছে বিজেপি। রাজ্য বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে এই মুহূর্তে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র দখলে রয়েছে ১২৫টি। জয়ের জন্য ১২২ বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন। তাই সুশীলের জয় একরকম নিশ্চিত। তবে তাঁকে রাজ্যসভায় তুলে আনার সিদ্ধান্ত রাতারাতি নেওয়া হয়নি, বরং রীতিমতো পরিকল্পনা করে বিজেপি এগিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

বলা হচ্ছে, সুশীলকে রাজ্যসভায় তুলে আনার নামে আসলে এক ঢিলে তিন পাখি মেরেছে বিজেপি। সুশীলের মতো প্রবীণ নেতাকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম বয়সি দলের দুই প্রতিনিধিকে নীতীশ সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করেছে তারা। নবীন-প্রবীণ যাতে মাথাচাড়া না দেয়, তার জন্য ভাবনাচিন্তা করেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের হাত মজবুত করার এমন গুরুদায়িত্ব সুশীলও নিষ্ঠা সহকারে পালন করবেন।

আরও পড়ুন: নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে ২৯৪ কেন্দ্রের প্রার্থীই নিজে বাছবেন শাহ​

এই সিদ্ধান্তের ফলে নীতীশ কুমারের সঙ্গে সম্পর্ক যেমন মেরামত করা গিয়েছে, তেমনই গলায় বিঁধে থাকা চিরাগ পাসোয়ান নামক কাঁটাও বিজেপি উপড়ে ফেলতে পেরেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যান চিরাগ। তার পর থেকে লাগাতার নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গিয়েছেন তিনি। নীতীশসের ভোট কাটানোই যে তাঁদের মূল লক্ষ্য, তা নিয়ে কোনও লুকোছাপাও করেননি তিনি। কিন্তু নীতীশের অনুরোধ সত্ত্বেও নির্বাচনী প্রচারে চিরাগের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যায়নি কোনও বিজেপি নেতাকেই।

তাই নির্বাচনী ফল খারাপ হওয়ার জন্য চিরাগ পাসোয়ানকেই সরাসরি দায়ী করেন নীতীশের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ)-এর নেতারা। চিরাগকে কাজে লাগিয়ে কৌশলে বিজেপি নীতীশ কুমারকে ছোট জোট শরিকের পর্যায়ে নামিয়ে আনল বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। যে কারণে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিলেও, বিজেপির সঙ্গে জেডিইউয়ের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তাই রামবিলাসের ছেড়ে যাওয়া আসন তাঁর ছেলের হাতে না তুলে দিয়ে বিজেপি আসলে নীতীশকেই ‘বার্তা’ দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের শর্তাবলী মেনেই এলজেপি-কে ৬টি লোকসভা আসন এবং ১টি রাজ্যসভা আসন ছেড়ে দিয়েছিল বিজেপি। ২০২৪-এর ২ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যসভার আসনটিতে মেয়াদ ছিল রামবিলাসের। তাঁর মৃত্যুর পর চিরাগের হাতে সেটি তুলে দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। এমনকী তাঁকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছিল। নির্বাচনী প্রচারে প্রকাশ্যে নীতীশের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও, বিজেপির বিরুদ্ধে একটি শব্দও খরচ করেননি চিরাগ। নির্বাচনে শোচনীয় হারের পরও আফসোস করতে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং তাঁকে বলতে শোনা যায়, বিজেপিকে জেতানোই মূল লক্ষ্য ছিল, যা তাঁরা করে দেখিয়েছেন।

আরও পড়ুন: খেজুরি উত্তপ্ত, তৃণমূলের ৬ অফিস ভাঙচুর, ‘দখল’ নিল বিজেপি​

তাই চিরাগের সঙ্গে বিজেপির গোপন রফার জল্পনা আরও জোরাল হয়। কিন্তু রামবিলাসের ছেড়ে যাওয়া আসনে সুশীলকে মনোনীত করে চিরাগ ও এলজেপির সঙ্গে সম্পর্কে বিজেপি ইতি টানল বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, নীতীশের দল বিহারে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে। চিরাগকে দিয়ে কার্যসাধন করিয়ে নিয়েছে বিজেপি। রাজ্যে এলজেপি-কে আর তেমন প্রয়োজন নেই তাদের। তাই সময় বুঝে চিরাগকে ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলল তারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy