আগামী সপ্তাহে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুলের অভিষেকের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা নিয়ে আগামী কাল ১০ জনপথে সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসবেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সরকারি ভাবে অভিষেকের আগেই অবশ্য হঠাৎ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন রাহুল গাঁধী। প্রায় রোজই সূক্ষ রসবোধের সঙ্গে তীক্ষ্ণ বিদ্রুপ মিশিয়ে বিঁধছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ-বিজেপিকে। যার ফলস্বরূপ, সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদীর থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে থাকলেও সম্প্রতি তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়ছে হু-হু বাড়ছে। সম্প্রতি মোদীর তুলনায় তাঁর টুইটগুলি বেশি রিটুইটও হচ্ছে।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপট দেখাতে শুরু করেছিলেন মোদী। আজ সেখানেই রাহুলের থাবা পড়েছে দেখে কপালে ভাঁজ বিজেপির। এর মোকাবিলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দলকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সভাপতি অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদেরই দাপট ছিল, আমাদেরই থাকবে।’’
আরও পড়ুন: কেদার-প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মুখে রাজনীতি
বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের অতি-সক্রিয়তা চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। এখনও পর্যন্ত @OfficeOfRG নামেই টুইটার অ্যাকাউন্ট চালান রাহুল। কিন্তু সভাপতি পদে অভিষেকের আগে সেই নামটি আরও সরল করার ভাবনাচিন্তা চলছে। স্রেফ রাহুল অথবা রাহুল গাঁধীর নামে টুইটার অ্যাকাউন্টটি রাখা হতে পারে। কারণ, @OfficeOfRG নামে সংশয় তৈরি হয়েছে, সম্প্রতি রাহুল যে টুইটগুলি করছেন, সেগুলি কি তিনিই করেন না কি অন্য কেউ?
কন্নড় অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হওয়া দিব্যা স্পন্দনা ওরফে রামিয়াকে কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন রাহুল। দিব্যার কথায়, ‘‘সব টুইট রাহুল নিজেই করেন। যাঁরা তাঁকে চেনেন, তাঁরা জানেন ব্যক্তিগত জীবনেও এমনই রসবোধ ওঁর।’’
আজও টুইটারে সক্রিয় হয়েছেন রাহুল। এ দিন কেদারনাথে গিয়ে মোদী অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু অমিত শাহের ছেলে জয়ের ব্যাপারে কোনও শব্দ খরচ করেননি। ক’দিন আগেই বিজেপি সভাপতির ছেলেকে ‘শাহ-জাদা’ বলে ডেকে মোদী-অমিত দু’জনকে এক সঙ্গে বিঁধেছিলেন রাহুল। তা ছাড়া, গত লোকসভা ভোটের প্রচারে কংগ্রেসের সঙ্গে দুর্নীতিকে জুড়ে দিয়ে মোদী বলতেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা!’’ টুইটারে সেই দুই সুর মিলিয়ে মোদীকে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গের হুল ফুটিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘‘মিত্রোঁ, শাহ-জাদার ব্যাপারে না আমি বলব, না কাউকে বলতে দেব!’’
বিজেপি নেত্রী সায়না এন সি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার ব্যঙ্গ করে ভোটে লড়া যায় না। ভোট লড়ার জন্য মাটিতে নেমে ঘাম ঝরিয়ে পরিশ্রম করতে হয়। আর তার সঙ্গে জোরালো বিষয়বস্তু দরকার।’’ কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটে জেতার কথা দল ভাবে না। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বিজেপিই এই সোশ্যাল মিডিয়াকে জনমত গঠনের আর একটি বিকল্প মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে। কংগ্রেস সেই দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। সবে যাত্রা শুরু করেই প্রবল সাড়া পাচ্ছে। আর তাতেই ভয় পাচ্ছে বিজেপি।
কংগ্রেসের মতে, মোদী যে এখন রাহুলের সভা ও টুইটের উপর নজর রাখছেন, সেটি স্পষ্ট। দলের এক নেতা বলেন, সম্প্রতি গুজরাতের এক সভায় রাহুল মুখ ফস্কে বলেছিলেন, ‘এর উত্তরের প্রশ্ন দিতে হবে’। এটি নিছকই ভুল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গুজরাতের সভায় তা নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘‘প্রশ্নের জবাব দিতে পারি, জবাবের প্রশ্ন কী করে দেওয়া যায়?’’ কংগ্রেসের মতে, আজ বিজেপি রাহুলের বিদ্রুপ নিয়ে হল্লা করছে, অথচ সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচার আর ব্যঙ্গের জনক তো তারাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy