Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ভারতরত্নের প্রস্তাব কারিয়াপ্পাকে, ফের বিতর্কে সেনাপ্রধান

১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পশ্চিম প্রান্তে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কারিয়াপ্পা।

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

তাঁর কথা নিয়ে আগেও জলঘোলা হয়েছে। আরও এক বার বিতর্কের কেন্দ্রে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।

স্বাধীন ভারতের সেনাবাহিনীর প্রথম ‘কম্যান্ডার-ইন চিফ’ প্রয়াত ফিল্ড মার্শাল কোডান্ডেরা মাডাপ্পা কারিয়াপ্পাকে আজ মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রাওয়ত। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০২২-এর স্বপ্ন ফেরি নীতি আয়োগেরও

১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পশ্চিম প্রান্তে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কারিয়াপ্পা। দু’বছরের মাথায়, ১৯৪৯ সালে প্রথম কম্যান্ডার-ইন-চিফ নিয়োজিত হন তিনি। ব্রিটিশ সেনার কাছ থেকে তিনিই প্রথম ভারতীয় সেনাবাহিনীর দায়িত্ব হাতে নেন। ১৯৯৩ সালে ৯৪ বছর বয়সে বেঙ্গালুরুর সেনা হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর ছেলে কে সি কারিয়াপ্পা ভারতীয় সেনার স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন। বাবার মতো তিনিও ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধে গুলি লাগে তাঁর। পাক সেনাবাহিনীর হাতে বন্দিও ছিলেন তিনি।

আজ কর্নাটকের কোডাগু জেলার কাবেরী কলেজে কে এম কারিয়াপ্পার মূর্তি উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাওয়ত। সেই অনুষ্ঠানেই তিনি বলেন, ‘‘ভারতরত্ন হিসেবে ফিল্ড মার্শাল কারিয়াপ্পার নাম প্রস্তাব করার এটাই সময়।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘অন্যরা যদি পেতে পারেন, (ভারতরত্ন) তা হলে ওঁর মতো ব্যক্তিত্বের এই সম্মান না পাওয়ার তো কোনও কারণ দেখি না।’’

রাওয়তের এই মন্তব্যে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ কেন্দ্র। সরাসরি মুখে কিছু না বললেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এ ভাবে মুখ খুলে সরকারের রাস্তাটাই আরও কঠিন করে দিচ্ছেন সেনাপ্রধান। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ভারতরত্নের মতো সর্বোচ্চ সরকারি সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া থাকে। এ ক্ষেত্রে কেউ কারও নাম প্রস্তাব করতেই পারেন। কিন্তু এ ভাবে প্রকাশ্য কোনও অনুষ্ঠানে সেটা করা বাঞ্ছনীয় নয়। আর সেনাপ্রধানের মতো কোনও ব্যক্তিত্বের তো এ বিষয়ে মুখ খোলটাই অনুচিত। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কারিয়াপ্পাকে ভারতরত্ন দিলেও প্রশ্ন উঠবে, না দিলেও বিতর্ক হবে।

তবে এটাই প্রথম বার নয়। কেন্দ্রকে এর আগেও অস্বস্তিতে ফেলেছেন রাওয়ত। ডোকলাম নিয়ে ভারত-চিন সম্পর্কের টানাপড়েন যখন কিছুটা থিতিয়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময়ই যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে কেন্দ্রকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন রাওয়ত। পাকিস্তান নিয়েও একাধিক প্ররোচনামূলক কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। সেনাবাহিনীর একটি সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা বঞ্চনার অভিযোগ রয়েছে সেনার। দীর্ঘদিন কেন্দ্রের কাছে তিন বাহিনীর (জল-স্থল-আকাশ) মাথায় কাউকে (চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ) বসানোর অনুরোধ রেখে আসছে সেনা। সেনার প্রস্তাব ছিল, তাদের বাহিনী থেকেই শীর্ষ পদের জন্য কাউকে বাছা হোক। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাতে আমল দেয়নি। তাই ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ এখনও তৈরিই হয়নি। খানিকটা সেই হতাশা থেকেই রাওয়ত আজ কারিয়াপ্পাকে নিয়ে মুখ খুলে ফেলেছেন বলে ব্যাখ্যা সেনার একাংশের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE