নীরব মোদী। ফাইল চিত্র।
বিস্তর গোসা হয়েছে আর এক মোদীর!
পাইপয়সা ধার মিটিয়ে দেবেন বলে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ককে (পিএনবি) কথা দিয়েছিলেন তিনি। তার জন্য তৈরি ছিলেন নিজের ব্যবসা বিক্রি করতেও। কিন্তু টাকা ফেরত পাওয়ার তাড়াহুড়োয় তাঁকে কার্যত পথে বসিয়েছে ব্যাঙ্কই। তাই এখন সেই ধারের টাকা কী ভাবে ফেরত দেবেন, তার রাস্তা খোঁজা নাকি কঠিন হচ্ছে তাঁর নিজের পক্ষে। পিএনবি-কে পাঠানো চিঠিতে উল্টে ব্যাঙ্ককেই কাঠগড়ায় তুললেন যাবতীয় বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা নীরব মোদী।
চিঠিতে প্রায় ১১,৪০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত এই হিরে ব্যবসায়ীর অভিযোগ, পিএনবি-র কাছে তাঁর বা তাঁর সংস্থার বকেয়ার অঙ্ক মোটেও অত টাকা নয়। বরং তা ৫,০০০ কোটি টাকার নীচে। তাঁর দাবি, ‘‘ধারের টাকা ফেরত পেতে ব্যাঙ্কের এই অকারণ তাড়াহুড়োয় দেশ জুড়ে তল্লাশি হয়েছে বিভিন্ন বিপণি, অফিসে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিভিন্ন সামগ্রী। সংবাদমাধ্যমে ছেয়ে গিয়েছে খবর।... কার্যত বন্ধ ফায়ারস্টার ইন্টারন্যাশনাল এবং ফায়ারস্টার ডায়মন্ড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবসা। ধাক্কা খেয়েছে ভাবমূর্তিও।’’ ফলে টাকা শোধ দেওয়া কী ভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি।
নীরবের এই যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট মহল। তাঁদের বক্তব্য, নীরবের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুধু ধার নিয়ে শোধ না দেওয়ার নয়, বেআইনি ভাবে ধার নেওয়ার। ফলে এই শোরগোল, তদন্ত তো স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: কলমের ধার ৩৬৯৫ কোটি
এখন নীরব কোথায়, তা নিয়ে তোলপাড় সারা দেশ। কেউ বলছে তিনি দুবাইয়ে, সংবাদমাধ্যম আবার কখনও আমেরিকায় আবিষ্কার করছে তাঁকে, কখনও আবার বেলজিয়ামে। এই টানটান নাটকের মধ্যে এ দিন কম নাটকীয় নয় নীরবের সরব হওয়াও। আর সেখানে শুধু আত্মপক্ষ সমর্থনে থেমে না থেকে এই পরিস্থিতি তৈরির যাবতীয় দায় উল্টে কার্যত পিএনবি-র উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি। বোঝাতে চেয়েছেন, ধার শোধ না করার কোনও ইচ্ছে তাঁর ছিল না। কিন্তু এখন তাঁর ব্র্যান্ড যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছে, তাতে এই ঋণ শোধ করার রাস্তা খোঁজা কঠিন হচ্ছে তাঁর পক্ষে।
তদন্ত দিনভর
• পিএনবি-র আধিকারিকদের বক্তব্যে খুশি নয় সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন। নয়া নির্দেশিকা পাঠানো হবে সব ব্যাঙ্ককে
• পিএনবি-র তিন আধিকারিক গ্রেফতার। ১৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ। নীরব মোদীর সংস্থার ৩ আধিকারিককে জেরা
• এফআইআরে নাম থাকায় ইস্তফা গীতাঞ্জলির দুই কর্তা চন্দ্রকান্ত কারকারে ও পানখুরি ওয়ারাঙ্গের
• অর্থ মন্ত্রকের সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিসও তদন্তে
• আরও অভিযান। নীরবের বাড়ি থেকে ৫৭১৬ কোটির সামগ্রী মিলল। গীতাঞ্জলি গোষ্ঠী, মেহুল চোক্সীর ৭টি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কিংগ্ফিশার কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরে একই ভাবে ধার শোধের ইচ্ছের কথা বলেছিলেন বিজয় মাল্যও। কিন্তু সেই ‘ইচ্ছেপূরণ’ আর হয়ে ওঠেনি।
নীরব লিখেছেন, তাঁর সংস্থার সঙ্গে ব্যবসা করে কোটি-কোটি টাকা আয় করেছে পিএনবি। অথচ তারাই ঋণ বাকি পড়ার কথা চাউর করেছে এ ভাবে। যে ভাবে এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর ভাই, স্ত্রীকে জড়ানো হয়েছে, তা নিয়েও ক্ষুব্ধ তিনি।
সব দেখে রাজনৈতিক মহলে টিপ্পনী, ‘‘কেলেঙ্কারি নিয়ে অন্তত এই মোদী মুখ খুললেন। দিল্লির মোদীও কবে খুলবেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy