চাই একটা হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট। আর মাত্র ৫০০ টাকা। তা হলেই আপনার হাতের মুঠোয় যে কারও আধার-তথ্য।
সুরক্ষার যাবতীয় সরকারি আশ্বাসকে তুড়ি মেরে হ্যাকারদের হাতে হাতেই নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে একশো কোটিও বেশি নাগরিকের নাম-ঠিকানা-সহ বায়োমেট্রিক্সের মতো অত্যন্ত ব্যক্তিগত তথ্য। তবে আধার কার্ড প্রস্তুতকারী সংস্থা ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই)-র দাবি, আধার কার্ডের তথ্য চুরির মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। বরং এ দিন বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, “বায়োমেট্রিক ডেটা-সহ আধার কার্ডের সমস্ত তথ্যই সুরক্ষিত।”
সর্বভারতীয় দৈনিক সংবাদপত্র ‘দ্য ট্রিবিউন’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য-হ্যাক সংক্রান্ত এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ওই দাবি অস্বীকার করলেও বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ইউআইডিএআই। এ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে কারিগরি পরামর্শদাতাদেরও সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এমনকী, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করাও হয়েছে।
গত নভেম্বরেই ইউআইডিএআই জানিয়েছিল, আধার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের সময় যে সব তথ্যাদি নাগরিকেরা প্রকাশ করেন তা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। তথ্য ফাঁসের একাধিক অভিযোগ উঠলেও এ নিয়ে আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রও। কিন্তু, ‘দ্য ট্রিবিউন’-এর দাবি, মাস ছয়েক আগেই অসংখ্য আধার কার্ডের তথ্য চলে গিয়েছে হ্যাকারদের হাতে। ৫০০ টাকার বিনিময়ে তা হাতে পেতে পারেন যে কোনও ব্যক্তি। তথ্যাদি বিক্রির জন্য বেনামে একাধিক হোয়াট্অ্যাপ গ্রুপও তৈরি করা হয়েছে। পেটিএম-এর মাধ্যমে টাকা দিলেও ওই ধরনের হোয়াট্অ্যাপ-এ পাঠিয়ে দেওয়া হয় লগ-ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড। তা দিয়েই সরাসরি আধার পোর্টালের প্রবেশাধিকার মিলবে। যে কোনও আধার নম্বর দিয়ে পাওয়া যাবে ওই নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যসকল তথ্য। শুধু তা-ই নয়, ৩০০ টাকা দিলেই মিলবে একটি সফ্টওয়্যারও। যার সাহায্যে যে কোনও আধার কার্ডের প্রিন্টআউট নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন
জিগ্নেশ-উমরের বিরুদ্ধে এফআইআর, মুম্বইয়ের সমাবেশ বাতিল পুলিশের
আধার কার্ড তৈরির জন্য ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক দায়িত্ব দিয়েছিল তিন লক্ষ গ্রামীণ সংস্থা (ভিএলই)-কে। গোটা দেশ জুড়েই কমন সার্ভিস সেন্টারস স্কিম-এর আওতায় ওই দায়িত্ব পালন করেন ভিএলই-তে কর্মরত অসংখ্য কর্মীরা। নিরাপত্তার খাতিরে গত নভেম্বরে ভিএলই-র হাত থেকে ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসগুলিকে আধার কার্ড তৈরির দায়িত্ব দেয় কেন্দ্র। আধার কার্ডের তথ্য হাতাতে ওই ভিএলই-দেরই নিশানা করে হ্যাকাররা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই ভিএলই সংস্থার কর্মীরাই বেআইনি ভাবে তথ্য বিক্রির কাজে যুক্ত। পঞ্জাব বা রাজস্থানের বাসিন্দাদের আধার কার্ডের তথ্যাদি যে এ ভাবেই নয়-ছয় হচ্ছে তা জানিয়েছে ওই সংবাদপত্রটি। ‘আধার ডট রাজস্থান ডট গভ ডট ইন’ নামে একটি পোর্টালের মাধ্যমেই আধার কার্ডের প্রিন্টআউটও নেওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে ওই পোর্টালটি সত্যিই রাজস্থান সরকারের কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন
অসমে মমতার বিরুদ্ধে এফআইআর, গ্রেফতারের দাবি
ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষের মতে, এটি জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনেরই সামিল। আধার নিয়ে যে ফাঁক-ফোকর রয়ে গিয়েছে তা মেনে নিয়েছেন চণ্ডীগড়ে ইউআইডিএআই-এর আঞ্চলিক শাখার অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জয় জিন্দল। তবে তাঁর আরও দাবি, “ডিরেক্টর জেনারেল এবং আমি ছাড়া পঞ্জাবের তৃতীয় কোনও ব্যক্তির পক্ষে সরকারি পোর্টালের লগ-ইন অ্যাকসেস পাওয়া সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন
‘বদলা’ নিল ক্ষিপ্ত বিএসএফ, পাক রেঞ্জার্সের অন্তত ১২ জওয়ান হত
এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন
এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে তা নিয়ে তদন্তের পরই যথাযথ ভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ইউআইডিএআই। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, ইউআইডিএআই আধার কার্ড সংক্রান্ত ব্যবস্থার সমস্ত পরিসংখ্যান রেকর্ড করার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে, যদি কোনও ব্যক্তি এর অপব্যবহার করেন তা সহজেই খুঁজে বার করা যাবে। এমনকী, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy