প্রতাকী ছবি।
ফেসবুকে বিজেপি সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের এক তরুণ। তার জেরে দাগি আসামিদের সঙ্গে ৪২ দিন তাঁকে কাটাতে হয়েছে মুজফ্ফরনগরের জেলে। জুটেছে ‘জঙ্গি’ তকমাও! জেলের শৌচাগার ব্যবহার করার জন্যও তাঁকে টাকা দিতে হতো বলে অভিযোগ। চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও যোগ করা হয়। ৪২ দিন পরে জামিন পেয়েছেন তিনি।
ফের এক ফেসবুক পোস্টেই এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জাকির আলি ত্যাগী নামে ওই তরুণ।
কিন্তু কেন এই গ্রেফতারি? উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটেই রয়েছে জাকিরের ফেসবুক কার্যকলাপের তালিকা বিজেপি সরকারের রামমন্দির তৈরির প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। গঙ্গার ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা রয়েছে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন জাকির। প্রশ্ন করেছিলেন, তাহলে এ বার কি গঙ্গায় কেউ ডুবে মরলে তা আত্মহত্যা হিসেবে গণ্য হবে।
এ সব ফেসবুক পোস্টের দায়েই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। জাকির জানান, গত ২ এপ্রিল স্থানীয় মাদ্রাসার একটি অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও তথ্য প্রযুক্তি আইন ভাঙার অভিযোগ আনা হয়। পরে যোগ হয় রাষ্ট্রদ্রোহ। তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তখন এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছিলেন, কয়েক ঘণ্টা পরে ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁকে।
জাকিরের অভিযোগ, ‘‘যে দিন আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সে রাতেই এক জন লক-আপে এসেছিল। তার গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না। সে এসেই আমাকে মারধর করে। সঙ্গে আমাকে ‘জঙ্গি’ তকমাও দিয়েছিল।’’ পুলিশের পেশ করা জাকিরের মেডিক্যাল রিপোর্টে মারধরের কথা কোথাও নেই।
এই ঘটনায় চাকরিও খোয়াতে হয়েছে জাকিরকে। যে সংস্থায় ওই তরুণ চাকরি করতেন, তারা তাঁর পাশে ছিলেন। কিন্তু জামিন পাওয়ার পরে সংস্থার মালিক জানান, জিএসটি চালু হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে সংস্থাটি। তার জেরেই কর্মী ছাঁটাইয়ে বাধ্য হয়েছে তারা।
সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে পোস্ট বা অন্য কার্যকলাপের জেরে গ্রেফতারি ও তা নিয়ে বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়কে নিয়ে তৈরি ব্যঙ্গচিত্র ‘ফরোয়ার্ড’ করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরের মৃত্যুর পরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই। তা নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন দুই তরুণী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy