পোষা ছাগলকে বাঁচাতে লাঠি নিয়েই বাঘের সঙ্গে লড়লেন এই তরুণী।
বাঘে নিয়ে যাচ্ছিল আদরের পোষ্যকে। তাকেই বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন বছর তেইশের তরুণী। কিন্তু, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে লড়তে অস্ত্র কোথায়? হাতের কাছে সম্বল একটি মাত্র লাঠি। তাই নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের গায়ে বসিয়ে দিয়েছিলেন মোক্ষম কয়েকটি ঘা।
শেষমেশ শিকার ছেড়ে তরুণীকেই আক্রমণ করে বসে বাঘ। তরুণীও কম যান না। লাঠি নিয়েই তাড়া করেন বাঘবাবাজিকে। পাল্টা আক্রমণে ভড়কে গিয়ে শিকার ছেড়ে চম্পট দেয় বাঘ। শুধু তাই নয়, বাঘকে তাড়িয়ে ঘরে ঢুকে আগে নিজের রক্তাক্ত মুখের নিজস্বী তুলে রেখেছেন অসমসাহসী এই তরুণী!
ছাগলটিকে বাঁচানো যায়নি। কিন্তু, লাঠি নিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়ে খবরের শিরোনামে চলে এসেছেন মহারাষ্ট্রের ওই তরুণী রূপালি মেশরম।
ঘটনাটি গত সপ্তাহের। সম্প্রতি এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছে বিবিসি। সাংবাদিকদের ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বারে বারেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছিলেন তরুণী। চোখে-মুখে ফুটে উঠছিল আতঙ্কের ছাপ।
আরও পড়ুন:
অনশনের মাঝেই বিরিয়ানি! অস্বস্তিতে এআইএডিএমকে
বৈবাহিক ধর্ষণ: আইনে সংস্কার চায় আদালত
কী ভাবে বাঘের সঙ্গে লড়েছিলেন তিনি?
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের নেহাতই ছাপোষা ঘরের তরুণী রূপালি। বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রূপালি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন পোষা ছাগলটির পরিত্রাহী চিৎকার শুনে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। দেখেন, ছাগলটিকে বাঘে ধরেছে। পোষ্যের ওই পরিণতি দেখে আর মাথার ঠিক রাখতে পারেননি। বাঘ খেদাতে লাঠি নিয়েই তেড়ে যান। ওই দিনের ঘটনায় আতঙ্কের রেশ যে এখনও কাটেনি তা স্পষ্ট হয় রূপালির মা জিজাবাইয়ের কথায়। বাঘের আক্রমণ থেকে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আঘাত পেয়েছেন তিনিও। তিনি বলেছেন, ‘‘ভেবেছিলাম মেয়েটা মরেই যাবে। লাঠি নিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়ছিল। হাত, মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল। পিছন থেকে ওকে টেনে ঘরে না ঢোকালে বড় বিপদ হয়ে যেত।’’
মায়ের সঙ্গে রূপালি।
রূপালি জানিয়েছেন, বাঘের সঙ্গে লড়তে গিয়ে তাঁর মাথায়, মুখে, হাতে-পায়ে চোট লাগে। বাঘ তাড়িয়ে ঘরে ঢুকেই আগে নিজের রক্তাক্ত মুখের নিজস্বী তুলে রাখেন তিনি। তারপর মায়ের সঙ্গে যান হাসপাতালে। তরুণীর অবস্থা দেখে চমকে ওঠেন চিকিৎসকেরাও। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাথায় চোট লাগায় ওই তরুণীর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তবে তরুণী এবং তাঁর মা, দু’জনের অবস্থাই এখন স্থিতিশীল। কিন্তু, দু’জনকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy