সে দিনের সেই ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
এক বছর পেরিয়ে গেল। গত বছরের ঠিক এই সময়েই একটা ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল দেশবাসীকে। স্ত্রী-র মৃতদেহ কাঁধে হেঁটে চলেছেন ওডিশার কালাহান্ডির বাসিন্দা দানা মাঝি। পাশে হাঁটছে তাঁর ১২ বছরের মেয়ে চাঁদনি।
অ্যাম্বুল্যান্স বা শববাহী গাড়ি কিছুরই বন্দোবস্ত স্থানীয় হাসপাতাল সে দিন করেনি। পকেটে একটা কানাকড়িও ছিল না। কোনও গাড়ি ডেকে যে স্ত্রী-র দেহ নিয়ে যাবেন, ছিল না সেই সামর্থ্যও। সে দিন স্ত্রী আমঙ্গের দেহ কাঁধে ১২ কিলোমিটার হাঁটার ছবিটা ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন
রাম রহিমের সাজা ঘোষণার সময় কী বললেন বিচারক?
তবে, এক বছর পর দৃশ্যপট অনেকটাই আলাদা। অনেকটাই বদলে গিয়েছে কালাহান্ডির দানা মাঝির জীবন। সেই ঘটনার পর শুধু দেশ থেকে নয়, বিদেশ থেকেও সাহায্য পেয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা। তাঁর তিন মেয়ে চাঁদনি, প্রমিলা, সোনেই— সকলেই ভুবনেশ্বরের ‘কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস’ (কেআইএসএস)-এ পড়ছে। ৪৯ বছরের দানা দ্য টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘‘ওই ঘটনার পর আমার জীবনটাই পাল্টে গিয়েছে। সরকার এবং বিভিন্ন অসরকারি সংস্থা আমাকে নানা ভাবে সাহায্য করেছে। আমার মেয়েরা এখন ভাল স্কুলে পড়ে।’’
ওডিশা সরকার ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের একটি বাড়ি দানার জন্য বরাদ্দ করেছে। শুধু তাই নয়, বাহরাইন-এর প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স খালিফা বিন সলমন অল খালিফা দানার হাতে ৯ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন। সুলভ ইন্টারন্যাশনাল তাঁর জন্য একটি ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্টও খুলে দিয়েছে। যে অ্যাকাউন্টের টাকা পাঁচ বছর পরে অর্থাৎ ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ম্যাচিওর হবে।
আরও পড়ুন
বিপাসনা নাকি হানিপ্রীত? ডেরার পরবর্তী মাথা কে
তিন মেয়ের সঙ্গে দানা মাঝি। ছবি: সংগৃহীত।
টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, প্রথম স্ত্রী দামি মারা যাওয়ার ১০ বছর পর আমঙ্গকে বিয়ে করেছিলেন দানা। আমঙ্গ গত বছর মারা যাওয়ার পরে কয়েক মাস আগে আলমাতি দেইকে বিয়ে করেছেন দানা। কিন্তু, সেই বিয়ের পর থেকেই তিন মেয়ের সঙ্গে খুব একটা ভাল সম্পর্ক নেই তাঁর। দ্য টেলিগ্রাফকে দানার বড় মেয়ে চাঁদনি জানিয়েছেন, ‘‘পড়াশোনার জন্য আমরা তিন বোন এখন ভুবনেশ্বরে থাকি। কিন্তু, বাবা ফের বিয়ে করার পর থেকে এখানে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করাটা অনিয়মিত হয়ে যায়। নতুন মা আমাদের সঙ্গে কোনও কথাও বলেন না।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এ বারের গরমের ছুটিতে শরীর অসুস্থ থাকায় তিনি গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেননি। কিন্তু, তাঁর দুই বোন গিয়েছিলেন। নতুন মা সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভাল নয় বলেই জানিয়েছেন প্রমিলা ও সোনেই।
কিন্তু দানা এ সব নিয়ে ভাবিত নন। তিনি দ্য টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘‘আমার ব্যক্তিগত জীবনে নজর না দিয়ে এখন আমাদের গ্রামের উপরেই সকলের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, আমাদের গ্রাম এখনও পিছিয়ে পড়ার দলেই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy