পরকীয়া প্রেম সমাজে যতই মুখরোচক গল্পের জন্মের দিক না কেন এক সঙ্গে অনেকগুলো জীবন নষ্ট করে দেয় এই সম্পর্কগুলো। বাবা, মায়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সন্তান। ছোটবেলা থেকে অবসাদে ভুগতে ভুগতে মানসিক রোগের শিকার হয় অনেকে। আবার বিশ্বাসভঙ্গ, অপমানে শেষ হয়ে যায় প্রতারিত হওয়া মানুষটার জীবন। কেন মানুষ এমনটা করে বলুন তো? কী কারণে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মানুষ?
১। অল্প বয়সে বিয়ে- জীবনে স্থায়িত্ব আসতে আসতে তিরিশ পেরিয়ে যায়। এ দিকে বিয়ে যদি অনেক আগে, কুড়ি বছরের আশে পাশে হয় তবে সে ভাবে জীবন উপভোগ করা হয়ে ওঠে না। স্থায়িত্ব আসার পর তাই অনেকে পরকীয় প্রেমের অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে চান।
২। ভুল বিয়ে- যাঁর সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তাঁকে পছন্দ না হলেও বাড়ি, সমাজের চাপে অনেকেই বিয়ে করতে বাধ্য হন। বিয়ের পর নিজের ভুল বুঝতে পারেন। তখন কোনও বন্ধুত্ব থেকেও হঠাত্ প্রেম হয়ে যেতে পারে।
৩। মানিয়ে নিতে না পারা- জীবনে কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরেও অনেকে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যের অসুস্থতা, মৃত্যু, চাকরি চলে যাওয়া, আর্থিক অনটনে অনেকে পরিবারের বাইরে মুক্তি খোঁজেন। এই সময় কোনও কাছের বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা একেবারেই বিরল নয়।
৪। অভিভাবকত্ব- সন্তানের জন্মের পর জীবনে পরিবর্তন আসে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে পরিবর্তন, স্পেসের অভাব, দায়িত্ব, কর্তব্যের জেরে অনেকে অবসাদে ভোগেন। মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা কম দেখা যায়। মায়ের দায়িত্ব তাঁরা পালন করলেও পুরুষরা সব সময় বাবার দায়িত্ব পালন করেন না।
৫। যৌন অতৃপ্তি- পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বৈবাহিক জীবনে যৌন অতৃপ্তি।
৬। মনের অমিল- পারিবারিক স্টেটাসে মিল থাকলেও অনেক সময়ই বিশেষ মানুষটার সঙ্গে মনের মিল হয়ে ওঠে না। দু’জনের বেড়ে ওঠা, পছন্দ-অপছন্দের ফারাক অনেক সময়ই দূরত্ব গড়ে দেয়। শুধু সম্বন্ধ করে বিয়ের ক্ষেত্রে নয়, নিজের পছন্দে বিয়ের ক্ষেত্রেও পরবর্তীকালে এটা হতে পারে। বহু দিন ধরে মনের মিল না হলে স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের বাইরে নিজের মনের মতো মানুষটিকে খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
৭। মূল্যবোধ- কঠিন পরিস্থিতি জীবনে মানুষ চেনায়। বিয়ে যখন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যায় তখন বোঝা যায় আমাদের মূল্যবোধ। যদি দু’জনের মূল্যবোধে আকাশ-পাতাল ফারাক থাকে তবে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হয়। তখন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।
৮। গুরুত্বের পার্থক্য- বিয়ের আগে বা বিয়ের সময় অনেকেই নিজেদের জীবনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন না। এক সঙ্গে গোটা জীবন কাটাতে হলে একে অপরের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে জানা ও সম্মান করা জরুরি। অধিকাংশ সময়ই দেখা দু’জনের জীবনের গুরুত্বের জায়গাগুলো আলাদা। সেখান থেকে শুরু হয় সমস্যা।
৯। কোনও কিছুতেই মিল নেই- ‘‘আমাদের কিছুই মেলে না’’। এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় দম্পতিদের মুখে। এ দিকে হয়তো সব দিক দেখে শুনে, অথবা এক সময়ে একে অপরের প্রতি তীব্র ভাললাগাই আপনাদের এক করেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাল লাগা-খারাপ লাগা সামনে আসতে শুরু করে। তখন বোঝা যায় দু’জন মানুষ আসলে কতটা আলাদা। এখান থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকে। যা অনেক সময়ই বিবাহ বহির্ভূত সন্পর্কের জন্ম দেয়।
১০। উত্তেজনার অভাব- সম্পর্ক অনেক সময়ই একঘেয়ে হয়ে ওঠে। প্রতি দিনের জীবনের বাইরে অনেকে উত্তেজনা খুঁজে নিতে চান। স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে সে ভাবে বড় কোনও সমস্যা না থাকলেও শুধু মাত্র উত্তেজনা খুঁজতে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অনেকে।
১১। অর্থ- কথায় আছে অর্থ থেকেই অনর্থ হয়। পরিবারের জোয়াল টানতে টানতে অনেক সময় নিজের দিতে নজর দেওয়া হয়ে ওঠে না। নিজের পছন্দ, স্বাদ-আহ্লাদ মেটানো হয়ে ওঠে না। কোনও বন্ধুর আর্থিক সাহায্য, ভালবেসে স্বাদ-আহ্লাদ মিটিয়ে দেওয়া জন্ম দিতে পারে অবাঞ্ছিত সম্পর্কের।
১২। কেরিয়ারে উন্নতি- পৃথিবীতে কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা শুধু মাত্র কেরিয়ারে উন্নতির জন্য সম্পর্কে জড়াতে পারেন। এই মানুষদের থেকে সাবধান। এঁরা সম্পর্ককে উন্নতির সিঁড়ি হিসেবে দেখেন।
তবে পরিস্থিতির শিকার হলেও নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা কখনই উচিত্ নয়।
দেখুন গ্যালারি: পরকীয়া প্রেমের জেরেই সম্পর্ক ভেঙেছিল এই ১০ তারকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy