চারদিকে যখন সব কিছু সহজলভ্য ও বহুল, সেই সময়ে জায়গার অভাব বড়ই চিন্তার। আর তাই একচিলতে জায়গার দামও বেড়ে চলেছে হু-হু করে। শহুরে যাপনে থাকার জায়গার পরিমাণ কমে এসেছে। কমে গিয়েছে শোয়ার ঘর, বাথরুম থেকে শুরু করে রান্না করার জায়গাটুকুও। সেই সময়েই মাথা খাটানোর প্রয়োজন। জানতে হবে বিভিন্ন কৌশল, যা দিয়ে ছোট হেঁশেলকেও বড় দেখাবে।

১. ছলনার আশ্রয় নিয়েই ছোট জায়গাকে বড় করে দেখানো যায়। রান্নাঘরের রং নিয়ে এ দিক-ও দিক করলেই লাভবান হতে পারেন। দেওয়াল, কাউন্টারটপ, ক্যাবিনেট এবং কাঠের কাজের রঙের মধ্যে পার্থক্য কমাতে হবে। রান্নাঘরের রঙের স্কিম তৈরি করলে জায়গাটি বড় দেখাতে পারে। ক্যাবিনেট, কাউন্টারটপের রং প্রায় কাছাকাছি রাখতে হবে— যাতে হুট করে হালকা রং থেকে গাঢ় রঙে চোখ না যায়। তাতে দৃষ্টিতে ধাক্কা লাগে। বরং রান্নাঘর ছোট হলে চোখকে আরাম দেওয়ার দরকার।

ছবি: সংগৃহীত।
২. উল্লম্ব ডোরাকাটা পোশাক পরলে যেমন লম্বা দেখায়, তেমনই রান্নাঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্রের ডিজ়াইন উল্লম্ব রাখলে চোখে ধাঁধিয়ে যেতে পারে। তাতে মনে হতে পারে, হেঁশেলের সিলিংয়ের উচ্চতা অনেকখানি। হয়তো আদৌ তা নয়।

ছবি: সংগৃহীত।
৩. ছোট জায়গাকে বড় দেখানোর সবচেয়ে সহজ উপায় দেওয়ালের সংখ্যা কমিয়ে আনা। শহুরে গৃহস্থবাড়িতে ওপেন কিচেনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বহু দিন। খাওয়ার ঘর, বসার ঘর এবং রান্নাঘরের মাঝে বিভাজন তুলে দেওয়া হয় জায়াগা বাড়ানোর জন্য। তাতে অনেক বেশি খোলামেলা দেখায় রান্নাঘর। রান্নাঘরের বর্গক্ষেত্রের আয়তন বৃদ্ধি করবে না বটে, কিন্তু আলো-হাওয়ার চলাচল বাড়িয়ে সুন্দর দেখাবে।

ছবি: সংগৃহীত।
৪. একেই জায়গা কম, তার উপর জিনিসপত্র ছড়িয়েছিটিয়ে রাখলে দমবন্ধকর দেখাবে রান্নাঘরটি। রান্নার জিনিসপত্রে ভরা কাউন্টারটপে যদি রান্নার বাসনপত্র, মশলার কৌটো দিয়ে ভরিয়ে রাখেন, তা হলে জায়গাটি আরও ছোট দেখাবে। তাই কাউন্টারটপ, জানলার ধার এবং ক্যাবিনেটের টপগুলি পরিষ্কার করে রাখুন। যথাসম্ভব তাকের ভিতর সাজিয়ে রাখুন।

ছবি: সংগৃহীত।
৫. ছোট রান্নাঘরের দেওয়ালগুলিতে যদি সাদা রং দিতে পারেন, তা হলে তা ঝলমলে দেখাবে। কারণ সাদা রং আলো প্রতিফলিত করতে সক্ষম। এর ফলে উজ্জ্বল দেখানোর পাশাপাশি বিস্তৃতির অনুভূতি এনে দেয়। দেওয়াল, ক্যাবিনেট, কাউন্টারটপ, সিলিংয়ে সাদা রং ব্যবহার করলে কোনও প্রান্ত তৈরি হয় না। এর ফলে চোখ আটকে যাবে না কোথাও।

ছবি: সংগৃহীত।
৬. ছোট রান্নাঘরে অতিথি সমাগম হলেই মুশকিল। অনেকের জন্য রান্না করা, সকলের জন্য খাবারের বাসন বার করা, তা ছাড়া অনেকের আনাগোনা চলতে থাকে হেঁশেলে। আর এ রকম সময়ে একটি সাশ্রয়ী পন্থা অবলম্বন করা যায়, যাতে আপনার রান্নাঘরে ভিড় না হয়। কিন্তু সকলের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়। যাঁদের বাড়ি একতলা, অথবা যাঁদের বাড়িতে রান্নাঘরের সঙ্গে বারান্দায় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাঁরা এই উপায় অনুসরণ করতে পারেন। রান্নাঘরে প্রবেশ করার মূল দরজা ছাড়াও আর একটি দরজা দিয়ে বাইরে যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারেন। এর ফলে রান্নাঘরে সহজে ভিড় জমবে না, আলো-হাওয়া চলাচল করে পরিবেশ সুস্থ রাখবে।

ছবি: সংগৃহীত।
৭. ক্যাবিনেটের দরজা কাঠ দিয়ে না বানিয়ে কাচ দিয়ে বানালে ভাল। এতে চোখে বিস্তৃতির অনুভূতি তৈরি হয়। বাধা পায় না চোখ। মনে হয়, দেওয়ালগুলি আর একটু দূরে রয়েছে। এই কৌশলে ছোট্ট ঘর বড় দেখায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কাচের আলমারির ভিতরে জিনিসপত্রগুলি যেন সাজানো থাকে। ওলটপালট হয়ে থাকলে কিন্তু এই কৌশল কার্যকরী হবে না।