মলদ্বীপে স্ত্রী, শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুরে এসে ফুরফুরে মেজাজে অনুশীলনে মন দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তাতেই পূর্নতা পেয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে মাশরাফিদের অনুশীলন। এত দিন ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলের অনুশীলন ছিল ফিটনেস এবং স্কিল ট্রেনিং নির্ভর। বৃহস্পতিবার সন্ধায় ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা লন্ডনে মিলিত হচ্ছে গুরুত্বপূর্ন একটি সভায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল (প্রধান নিরাপত্তা উপদেস্টা রেগ ডিকাসন, প্রফেশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিইও ডেভিড লেদারডেল, ইসিবি’র ক্রিকেট অপারেশন্স পরিচালক জন কার) বৃহস্পতিবার পৃথক পৃথকভাবে বসছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের জন্য যে নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), বাংলাদেশে ৪ দিনের সফরকালে তারা এ বিষয়ে যা যা জেনেছেন, তা জানাবেন ক্রিকেটারদের।
ইসিবি’র প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা রেগ ডিকাসনের রিপোর্টে বিমানবন্দর থেকে টিম হোটেল এবং টিম হোটেল থেকে ভেন্যুতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী দৈনিক ‘ দ্য টেলিগ্রাফ’ এ প্রকাশিত হওয়ার পর ইসিবি’র নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইংলিশ ক্রিকেটারদের এই ব্রিফিংটি একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ন হয়ে পড়েছে। এসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে লেস্টারশায়ারে থাকা ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুককে পর্যন্ত লন্ডনের এই সভায় যোগ দিতে হচ্ছে! এই সভায় ক্রিকেটার কেউ যদি ব্যক্তিগতভাগে বাংলাদেশ সফরে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন, তা হলে তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মরগ্যান, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধায় নিরাপত্তা প্রধান রেগ ডিকাসন, পিসিএ প্রতিনিধি এবং ইসিবি’র জন কার বিস্তারিত জানাবেন। অ্যালিস্টার কুকও থাকবেন এই সভায়। দু’টি (ভারত এবং বাংলাদেশ) সফর নিয়েই কথা হবে।’’ ক্রিকেটারদের কাউকে বাংলাদেশ সফরে যেতে বাধ্য করা হবে না। ‘‘সব সময়ই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের সুযোগ থাকে। আগে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ক্রিকেটারদের অন্য মত থাকতে পারে। ‘‘ওই রিপোর্ট এতোটাই উৎকণ্ঠায় ফেলেছে বাংলাদেশকে যে, সেই উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গিয়েছে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক মরগ্যানের কথায়। ‘‘একটা গ্রুপ হিসেবে আমাদের একত্রিত হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ন। জনগনকে জানাতে এবং বিশ্বাস করাতে চাই যে, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ইসিবি সারা বছর আমাদের পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়িনি আমরা।’’ ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ পল ফারব্রাসও মরগ্যানের সুরে কথা বলেছেন, ‘‘ খেলোয়াড় এবং স্টাফদের নিরাপত্তাই আসল। তাই সেখানে যাব কী যাব না, সে সিদ্ধান্তটি অনেক বড় ব্যাপার।’’
দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ঢাকায় পা রাখার কথা। তার ঠিক ৫ সপ্তাহ আগে ইংল্যান্ডের ওয়ান ডে অধিনায়ক মরগ্যানের এমন অবস্থানে বিচলিত হওয়ারই কথা বাংলাদেশের ওয়ান ডে অধিনায়ক মাশরাফির। দুরু দুরু বুকে বৃহস্পতিবার লন্ডনে ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের সভার আপডেট জানতে উদগ্রীব পুরো বাংলাদেশ। তবে বিচলিত নন মাশরাফি। বুধবার অনুশীলন শেষে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মিডিয়াকে বরং ভরসার কথাই বলেছেন তিনি, ‘‘ এখনও আমি বিশ্বাস করি ইংল্যান্ড আসবে। ইংল্যান্ড শুরু থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাশে ছিল। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তারা দল পাঠিয়েছিল। এখনও আমি আশা করছি ওরা থাকবে আমাদের সঙ্গে। বিসিবি ও সরকারের পক্ষ থেকে ইংল্যান্ড দলকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’’ ইউরোপে একটার পর একটা হামলার পরও থেমে নেই তাদের দেশে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর। সুতরাং গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজেন রেস্টুরেন্টে সশস্ত্র জঙ্গি হামলার মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন না তিনি, ‘‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি বলব খেলা চালু রাখতে। পৃথিবীর সব জায়গাতেই এমন ঘটনা ঘটছে। ফ্রান্সের মতো জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার পরও কিন্তু ইউরো হয়েছে।’’ ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক মরগানকে উদ্দেশ্য করে মাশরাফির আবেদন, ‘‘ তোমরা এস। আমি নিশ্চিত তোমরা এখানে এসে নিশ্চিন্ত মনে ক্রিকেট খেলতে পারবে। অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। আশা করছি খুব ভাল প্রতিযোগিতা হবে। এই পরিস্থিতিতে খেললে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।’’ এখন প্রশ্ন, মাশরাফির এই আবেদনে কি মন গলবে মরগ্যানদের?
আরও খবর
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসিবি, বাংলাদেশ সফর অনিশ্চিত ইংল্যান্ডের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy