এখনও অপরাজিত। চলছে সাফল্যের কেক কাটা। স্পনসরদের এক অনুষ্ঠানে গুজরাত লায়ন্সের ব্র্যাভো, কার্তিক, ম্যাকালামরা। বুধবার।-নিজস্ব চিত্র
গুজরাত লায়ন্স ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ যে প্রায় সমানে সমানে, তা ওদের লিগ টেবলের অবস্থান দেখে বোঝার উপায় নেই। তবে দুই দলেরই উপাদানগুলো প্রায় এক— দুর্দান্ত বোলার, বিধ্বংসী ওপেনার আর ক্ষিপ্র ফিল্ডার। বৃহস্পতিবার এদেরই লড়াই। যা দেখার অপেক্ষায় ছটফট করছি।
কেকেআরের পর সেরা বোলিং বিভাগ সম্ভবত গুজরাতেরই। ব্র্যাভো আর জাডেজা বিশেষজ্ঞ। স্টাম্পে বল করার ব্যাপারে দু’জনেই ওস্তাদ। ব্র্যাভোর বল আবার মাঝে মাঝে স্লিপ থেকে সুইং করে লেগ স্টাম্পে চলে আসে, ডিপ করে আর ব্যাটসম্যান ইয়র্কড হয়ে যায়। কয়েকটা আবার পিচে পড়ে এত ভাল বাউন্স পায় যে, অবাক হয়ে যেতে হয়। এই সব ডেলিভারি এয়ারোডায়নামিক্স দিয়েও ব্যাখ্যা করা যায় না। ব্যাটসম্যান তো সমস্যায় পড়বেই।
জাডেজা আবার এমন একজন বাঁ হাতি স্পিনার, যে কি না যথেষ্ট জোরে বল করতে পারে। ওর নিখুঁত জায়গায় রাখা বলগুলোর গতির সঙ্গে যখন স্পিন মেশে, তখন সেগুলো মারণাস্ত্র হয়ে ওঠে। জেমস ফকনার, প্রবীণ কুমার ও প্রবীণ তাম্বেরা ওদেরই দেখানো পথে চলার চেষ্টা করে।
হায়দরাবাদের দলেও অনেকটা একইরকম ব্যাপার আছে। আগের ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমার আর বারিন্দর স্রান এত ভাল পারফর্ম করেছে যে, বৃহস্পতিবার চোট সারিয়ে ফেরা আশিস নেহরারও প্রথম দলে জায়গা না হলে অবাক হব না। আর আছে মুস্তাফিজুর রহমান, আগামী কয়েক মরসুমে নিলামের টেবলে যাকে নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যেতে পারে।
অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার— দু’দলের ব্যাটিং বাহিনীর সেনাপতি। ওরা দু’জনেই যেন বাউন্ডারি হাঁকানোর জন্যই মাঠে নামে। আর তার বহিঃপ্রকাশ মাঝে মাঝে এতটাই উগ্র হয়ে ওঠে যে ডিপ ফিল্ডাররা প্রায়ই তেতে যায়। এমন বিশাল খিদে নিয়ে নামে এরা দু’জন, যে প্রায়ই তা ইনিংসের শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখে ওদের।
এ বার ছিনতাইবাজগুলোর দিকে তাকানো যাক। বিপক্ষের হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে পারে যারা, তাদের কথাই বলছি। মর্গ্যান, ব্র্যাভোর কথা বলছি। ওরা ব্যাট হাতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। একটা সময় মর্গ্যানের অফ সাইডের দুর্বলতা খুব চোখে পড়ত। কিন্তু পরে সে সব সমস্যা যেন কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন আসলে নিজের মর্জিতে চলে। ওর জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের কাছে ও আদর্শ ক্যাপ্টেন। দু’জনে কিন্তু ম্যাচ ঘুরিয়ে জিতে পারে যে কোনও সময়।
ব্র্যাভো একেবারেই রক্ষণশীল নয়। ওর কাছে বিভিন্ন রকম শটের যা ভাণ্ডার রয়েছে, তা দিয়েই বিপক্ষ বোলারদের হাল খারাপ করে দিতে পারে। মাঠে নেমে সবসময় বড় শটের জন্য ছোঁকছোঁক করাই ওর অভ্যাস।
আবার লোয়ার অর্ডারের দিকে তাকিয়ে দেখুন, দু’দলেরই এক অবস্থা। ওরা আসলে যতটা না বোলিং ইউনিট, তার চেয়ে অনেক ভাল ব্যাটিং ইউনিট। কিন্তু ম্যাচ উইনার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করলেও শিখর ধবনই বলুন বা সুরেশ রায়না— কেউই তাদের সেরা ফর্মে নেই। তবু বলব দু’দলই বিপক্ষের টুঁটি টিপে ধরতে ওস্তাদ। আর সেই দু’দলই আজ মুখোমুখি হচ্ছে গুজরাতের ঘরের মাঠে। আমার মতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে পছন্দ করে যারা, তাদের পক্ষে আজকের ম্যাচটা জিভে জল এনে দেওয়ার মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy