নায়কদের আগমন। কলকাতা বিমানবন্দরে কোহালি, যুবরাজ ও ধোনি। ছবি: উৎপল সরকার।
জগমোহন ডালমিয়া। অ্যালান বর্ডার। রাহুল দ্রাবিড়। ভিভিএস লক্ষ্মণ। বিরাট কোহালি। রোহিত শর্মা।
নাহ্, শুক্রবারের ইডেনে এঁরা কেউ উপস্থিত ছিলেন, মনে করার কারণ নেই। কারণ, কেউ ছিলেন না। কোহালি শহরে। তবে মাঠে আসেননি। ডালমিয়া প্রয়াত। বর্ডার ছেড়ে দেওয়া গেল। দ্রাবিড়-রোহিতও কলকাতায় বলে খবর নেই।
মজার হল, এঁরা ইডেনে এ দিন যেমন ছিলেন না। আবার ছিলেনও! শুক্রবার থেকে থাকবেনও।
কিছুই না, আসলে গ্রাফিক্স সব। গ্রাফিক্সের কোলাজ। দেখলে কিন্তু চিত্রশিল্পীর স্কেচ লাগে। ক্লাবহাউস গেট দিয়ে ঢুকলেই এখন দেখতে পাওয়া যাবে। বিশাল-বিশাল সব ওয়ালপেপার। কাচের দেওয়াল ঢেকেঢুকে আজকের পর থেকে যা ইডেনের নতুন বৈশিষ্ট্য। শোনা গেল, পুরোটাই সিএবি প্রেসিডেন্টের ভাবনা। তা হল— ইডেনের চতুর্দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাক তার ইতিহাস, তার কীর্তি, তার রূপকার। বর্ডারের বিশ্বজয় থেকে লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের মহাকীর্তি ঘুরে রোহিতের ২৬৪ রানের বিশ্বরেকর্ড, সব থাকুক। এবং অবশ্যই সর্বপ্রথমে থাকুন ডালমিয়া।
আপাত-দৃষ্টিতে ঠিকই আছে। রবিবাসরীয় ইডেনের ভারত-ইংল্যান্ড যুদ্ধ শুধু বিচার্য হলে, তার আলাদা মাহাত্ম্য নেই। ওয়ান ডে সিরিজের জয়-পরাজয় নির্ধারণ কলিঙ্গরাজ্যেই হয়ে গিয়েছে, ইডেন বড়জোর দেখতে পারে কোহালিদের ক্লিন সুইপ— থ্রি নিল! অতএব, বাড়তি আকর্ষণ থাকা প্রয়োজন। প্রয়োজন রঙিন আবহের।
যদিও তা থাকছে এমনিতে। রবিবার যাঁরা খেলা দেখতে আসবেন, দেখতে পাবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সংবর্ধনা। যেখানে তাঁকে স্মারক-উত্তরীয় দিয়ে সম্মানিত করা হবে। ম্যাচের সঙ্গে এটা থাকবে বাড়তি পাওনা হিসেবে। আর ম্যাচ, সেখানেও অপ্রাপ্তি নিয়ে ফিরতে হবে কি? মনে তো হয় না। অন্তত ভারতীয় টিমের মননের ছবি তো তাই বলছে।
দু’একটা বেখাপ্পা ঘটনাকে বাদ দিলে ভারতীয় টিমের মেজাজের পাশে একটাই শব্দ বসে। ফুরফুরে। তাল কেটেছে শুধু দু’টো ব্যাপারে। এক, শহরের যানজটে কোহালিদের প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে টিম হোটেলে ঢোকা। যা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ একটু অসন্তুষ্টই বলে শোনা গেল। আর দুই, শিখর ধবনের পুরনো চোটের প্রত্যাবর্তন।
ভারতীয় ওপেনার গত নিউজিল্যান্ড সিরিজের সময় বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে চোট পেয়েছিলেন। শোনা গেল, এ দিন নাকি সেই পুরনো চোটের জায়গায় ফের অস্বস্তি বোধ করতে থাকেন ধবন। বিমানবন্দর থেকে তাঁকে সোজা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ‘রে’ দেওয়া হয়েছে। রবিবারের ম্যাচে ধবন কী অবস্থায় থাকবেন, এখনই বলা মুশকিল। অবশ্য চলতি সিরিজে তাঁর যা ফর্ম, তাতে ইডেন যুদ্ধে ওপেনিংয়ে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে অজিঙ্ক রাহানেকে খেলিয়ে দিলে কিছু বলার থাকবে না। ভারতীয় টিম আবার অন্য সমস্যায় পড়ল। শহরে এ দিন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তো বটেই, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও ছিলেন। এবং যে কারণে ভারতীয় টিমকে ভাল রকম যানজটে আটকে পড়তে হয়। যে রুট দিয়ে টিম কনভয় আসে, তা দিয়ে আসা যায়নি। হোটেল পৌঁছতে প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা লেগে যায়। টিমের সঙ্গে থাকা স্থানীয় ম্যানেজারদের কথা অনুযায়ী, এ হেন দুর্ভোগে নাকি বেশ বিরক্ত দেখিয়েছে টিমের কাউকে কাউকে।
তবে শুধু এটুকুই। এর বাইরে কিছু নয়। যুবরাজ থেকে ধোনি, ধোনি থেকে কোহালি প্রত্যেককে এ দিন ঝরঝরে, ঝকঝকে দেখিয়েছে। ধোনি তো শোনা গেল, বিমানবন্দরে হালকা ঠাট্টা-ইয়ার্কি চালিয়েছেন। এয়ারপোর্টে পরিচিত একজন ধোনিকে দেখে এগিয়ে গিয়েছিলেন। শোনা গেল, তাঁকে দেখামাত্র ধোনি নাকি বলে বসেন, কী গতকালের ইনিংসটা ঠিকঠাক ছিল তো? লাগল কেমন? পরিচিত ভদ্রলোক শুনেটুনে একটু বিস্মিতই হয়ে যান। আর সিরিজ আগেভাগে নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে বলে ক্রিকেটপ্রেমীর মন খারাপেরও কিছু নেই বোধহয়। বেশি পিছনোর দরকার নেই। দু’বছর আগে ইডেনের শেষ ওয়ান ডে ম্যাচটাকেই ধরা যাক।
দু’বছর আগে রোহিত শর্মার ২৬৪ তো এ রকম এক নিয়মরক্ষার ম্যাচেই এসেছিল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy