যে মুহূর্ত দেখতে পেলেন না বাবা রে জেনিংস। ছবি: পিটিআই।
জাক কালিস। ভিভিএস লক্ষ্মণ। কুমার সঙ্গকারা। পল কলিংউড। কেভিন পিটারসেন। মাইকেল ভন।
উপরের পরপর ছ’টা নামের মধ্যে মিল খুঁজতে বললে, বলা খুব সহজ। এঁরা প্রত্যেকে ক্রিকেটার, বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবারের মুম্বইয়ের সঙ্গে এঁদের যোগসূত্র কোথায় জিজ্ঞেস করলে, একটু মাথা চুলকোতে হতে পারে।
কারণ, এঁরা প্রত্যেকে এখন কিটন জেনিংসের ভক্ত।
এঁরা মুম্বইয়ে এ দিন কিটন জেনিংসের ইনিংস দেখেছেন। মুগ্ধ হয়েছেন। টুইটে যে যাঁর মতো লিখেছেন। ভিভিএস যেমন মুগ্ধ স্পিনারদের প্রতি কিটনের মনোভাবে। কুমার সঙ্গকারার মনে হচ্ছে, ভারত সফরে ইংল্যান্ডের সেরা ওপেনার বছর চব্বিশের কিটনই। কালিসের আবার দুঃখ হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার হাত থেকে আরও একটা ভাল ক্রিকেটার বেরিয়ে গেল বলে। যা আশ্চর্য নয়। অভিষেকে কেউ টেস্ট সেঞ্চুরি করলে এ সব একটু-আধটু হয়েই থাকে।
আশ্চর্য অন্য জায়গায়। যাঁর সর্বাগ্রে কিটনের ইনিংস দেখার কথা ছিল, তিনিই দেখতে পারলেন না।
তিনি— রে জেনিংস! কিটন জেনিংসের বাবা। এবং ছেলের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি দেখতে না পাওয়ার কারণটাও বেশ অদ্ভুত।
লোডশেডিং!
এই মুহূর্তে রে জেনিংস মরিশাসে। ছেলে কিটনের ইনিংস তিনি সেখানকার রিসর্টের টিভিতে দেখছিলাম। কিন্তু কিটন যখন ৯৬ রানে ব্যাট করছেন, আচমকা রিসর্টে বিদ্যুৎ চলে যায়। ‘‘পরে কারেন্ট এল যখন, ওর সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে। ১১১ ব্যাটিং। এক রান যোগ করে আউট হয়ে গেল,’’ পরে দুঃখ করে এক ওয়েবসাইটকে বলেছেন রে জেনিংস। যাঁকে এখন পরিবারের কাছ থেকে ছেলের সেঞ্চুরির ভিডিও আনাতে হচ্ছে। সেঞ্চুরির শটটা দেখতে হবে তো।
রে জেনিংস।
এবং কিটনের বাবার দিনটা যদি এ রকম অদ্ভুত গিয়ে থাকে, স্বয়ং কিটনেরও কম গেল না। বৃহস্পতিবার তিনি ভোর পাঁচটায় উঠে পড়েছিলেন! টিম বাস মিস করার ভয়ে। কিটব্যাগ দ্রুত গুছিয়েও নেন। এবং যাঁর সেঞ্চুরি শটের উপাখ্যানটাও বেশ আকর্ষক। ৯৬ রানে ব্যাট করছেন যখন, নিজেকে একটা কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন কিটন। ‘‘ভাবছিলাম, ডিফেন্ড করতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে ক্যাচ দেব, নাকি ফার্স্ট স্লিপ দিয়েই সেঞ্চুরিটা করব। ভেবেচিন্তে দ্বিতীয়টাকেই বাছলাম। ব্যাটের ঠিক মাঝে লেগে বল বাউন্ডারিতে চলে গেল!’’
এক দিক থেকে ভাবলে অবশ্য কিটন জেনিংসের জীবনটাকেই প্রবল আকর্ষক মনে হবে। কথাবার্তা বলেন দক্ষিণ আফ্রিকান স্টাইলে। পড়াশোনা জোহানেসবার্গের স্কুলে। যেখানকার আর এক ছাত্রের নাম গ্রেম স্মিথ। পাঁচ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব ১৯ টিম নিয়ে ইংল্যান্ড সফরও করেছেন। কিন্তু ওই সফরের পরে তাঁর কেরিয়ারের নকশা আমূল বদলে যায়। ওই সফরের পরই ডারহাম কাউন্টিতে ডাক পাওয়া। যার পরপরই কিটন জেনিংস ঠিক করে ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, ইংল্যান্ডই তাঁর ক্রিকেট-পরিচয়ের পীঠস্থান হবে। ভারত সফরে খেলার কথাও ছিল না তাঁর। বছর উনিশের প্রতিশ্রুতিমান ওপেনার হাসিব হামিদ চোট না পেলে। কাউকে চিনতেন না, পরিচয়ও ছিল না। টেস্টের আগের দিন টেনশনাক্রান্ত কিটন বাবার কাছে জানতে চান, তোমার টিপস কী? সিনিয়র জেনিংস বলেন, ‘‘জলটা সাবধানে খাবি।’’
জল সাবধানে খাচ্ছেন কি না, জানার উপায় নেই। কিন্তু একটা জিনিস যে সাবধানে ও সাবলীল ভাবে সামলাতে পারেন, আবির্ভাবেই বোঝা গিয়েছে।
ভারতীয় স্পিন!
ইংল্যান্ড
প্রথম ইনিংস
কুক স্টাঃ পার্থিব বো জাডেজা ৪৬
জেনিংস ক পূজারা বো অশ্বিন ১১২
রুট ক কোহালি বো অশ্বিন ২১
মইন ক নায়ার বো অশ্বিন ৫০
বেয়ারস্টো ক উমেশ বো অশ্বিন ১৪
স্টোকস ন.আ. ২৫
বাটলার ন.আ. ১৮
অতিরিক্ত ২
মোট ২৮৮-৫।
পতন: ৯৯, ১৩৬, ২৩০, ২৩০, ২৪৯।
বোলিং: ভুবনেশ্বর ১১-০-৩৮-০, উমেশ ১০-২-৩৬-০,
অশ্বিন ৩০-৩-৭৫-৪, জয়ন্ত ২২-৩-৭৮-০, জাডেজা ২১-৩-৬০-১।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy