লড়াকু সেঞ্চুরি করলেন আসাদ শফিক। সোমবার গাব্বায়। ছবি: এএফপি
গাব্বায় চতুর্থ ইনিংসে ৪৯০ তাড়া করে জেতার রূপকথা থেকে মাত্র ৪০ রান দূরে থেমে যেতে হল পাকিস্তানকে।
ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ইয়াসির শাহের রান আউটে পাকিস্তান ইনিংসে যবনিকা নামে। যাতে গাব্বায় টানা আঠাশ বছর অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষত থেকে গেল অস্ট্রেলিয়ার।
৪৫০ রান তাড়ার অবিশ্বাস্য একটা লড়াইয়ের শেষে হার স্বীকার করতে বাধ্য হলেও একটা সময় কিন্তু অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছিলেন আসাদ শফিক, ইয়াসিররা। যেটা অকপটে স্বীকার করেছেন স্মিথ। জেতার পর বলেন, ‘‘শফিকরা যে ভাবে ব্যাট করছিল তাতে শেষের দিকে রীতিমতো দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। ম্যাচটা ওরা এত ক্লোজ নিয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। অসাধারণ ব্যাটিং করেছে শফিক। টেনশনে হাতের একটাও নখ আর আস্ত নেই।’’ অন্য দিকে, পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবা-উল-হক হেরেও গর্বিত। বলেছেন, ‘‘এই টেস্টে আমাদের ব্যাটসম্যানরা যে লড়াইটা দেখাল তাতে দারুণ গর্বিত আমি। একটা সময় মনে হয়েছিল, ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব। কিন্তু শফিকের মতো কয়েক জন স্পেশ্যাল ক’টা নক খেলে দিল। চতুর্থ ইনিংসে টেলএন্ডাররা যে ব্যাটিংটা করেছে, তার পর গাব্বা থেকে অনেক প্রাপ্তি নিয়েই ফিরছি আমরা।
পাকিস্তান চতুর্থ ইনিংসে তাদের আগের সেরা ৩৮২-৩ টপকে গিয়ে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড করল গাব্বায়। যে রেকর্ডে আসল নায়ক ম্যাচের সেরা শফিক। গতকালের ৩৮২-৮ থেকে শফিক-ইয়াসির শুরুটা আত্মবিশ্বাসী করেন। বরং তাঁদের ব্যাটিংয়ের ছন্দপতন ঘটাতে না পেরে ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে অস্ট্রেলীয় বোলারদের উপরেই। আগের দিন ১০০ রানে অপরাজিত শফিক এ দিনও নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন অসাধ্য সাধনের চেষ্টায়। উল্টো দিকে ক্রিজ আগলে পড়ে থাকার কাজটা দক্ষতার সঙ্গে করছিলেন ইয়াসির। একুশ ওভার কাটে এ ভাবেই। বাইশতম ওভারের মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলে দিনের প্রথম সাফল্য আসে অস্ট্রেলিয়ার। শফিকের গ্লাভস ছুঁয়ে বল জমা পড়ে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে। ৩৩৬ মিনিট ক্রিজে থাকার পর ১৩৭ করে শফিক আউট হওয়ার পর শেষ উইকেটে আর পারেনি পাকিস্তান। ওভারের শেষ বলে ইয়াসিরের রান আউটে পাকিস্তানের রূপকথার অপমৃত্যু ঘটে যায়।
শফিকের ক্যাচ গতকাল ফস্কানোর পর থেকেই কিছুটা চাপে ছিলেন অস্ট্রেলিয়া ক্যাপ্টেন। এ দিন অবশ্য ইয়াসির শাহকে রান আউট করে সেই অপরাধ বোধ থেকে কিছুটা মুক্তি পান।
তবে জিতলেও স্মিথের ক্যাপ্টেন্সিকে তুলোধোনা করেছেন মাইকেল ক্লার্ক, মার্ক টেলরের মতো প্রাক্তনরা। যাঁরা এ দিন মাত্র একটা স্লিপ রেখে স্মিথের রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজানোকে ‘হাস্যকর এবং কাপুরুষোচিত’ বলেছেন। ক্লার্কের সাফ কথা, ‘‘ওই সময় পুরোপুরি আক্রমণে গিয়ে পাকিস্তানের টুঁটি টিপে ধরা উচিত ছিল। কিন্তু স্মিথ তার বদলে রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়ে ওদের চাপ কমিয়ে দেয়।’’ স্টার্কও দাবি করেছেন, তিনি শফিককে বাউন্সার দিতে চাইলেও স্মিথ চেয়েছিলেন তিনি স্টাম্পে বল রাখুন। দিনের শেষে স্মিথ অবশ্য সমালোচনা গায়ে মাখতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy