জলই জীবন। দলের অন্যতম অস্ত্র রাম মালিকের তৃষ্ণা নিবারণে সুভাষ। ছবি: উৎপল সরকার
দু’জনেরই ডার্বিতে অভিষেক হতে চলেছে।
দু’জনই নাইজিরিয়ার ফুটবলার হওয়ায়, আগে থেকেই একে অন্যকে চেনেন।
এর আগে দুই ফুটবলারই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলেছেন।
এ বার অবশ্য র্যান্টি মার্টিন্স লাল-হলুদ জার্সি গায়েই নামবেন।
আলাও ফাতাই আদিসা নামবেন মোহনবাগানের সবুজ-মেরুন জার্সি চড়িয়ে, সেই ইস্টবেঙ্গলেরই বিপক্ষে।
দুই নাইজিরিয়ানের মধ্যে একজন স্ট্রাইকার। অন্য জন স্টপার। রবিবারের কলকাতা ডার্বিতে র্যান্টি যখন গোলের জন্য ঝাঁপাবেন, তখন তাঁকে আটকানোর দায়িত্ব থাকবে ফাতাইয়ের উপরই।
বৃহস্পতি-বিকেলে মোহনবাগানের অনুশীলনের পর ফাতাই বলছিলেন, “কলকাতায় আসার পর র্যান্টির খেলা দেখা হয়নি। তবে ওকে আমি চিনি। খুব ভাল স্ট্রাইকার।” আপনার উপরই তো ওঁকে আটকানোর দায়িত্ব থাকবে? হেসে এড়িয়ে যেতে চাইলেন স্পর্শকাতর প্রশ্ন। “কারও একার উপর কোনও দায়িত্ব থাকছে না। মোহনবাগান টিমগেম খেলে।”
ফাতাই টিম গেমের কথা বললেও গোলমেশিন র্যান্টি বলছেন, “ভারতীয় ফুটবলের এই ডার্বিটা প্রথম বার খেলব। নিজের দলকে গোল করে জেতাতে চাই।” বিপক্ষের নাইজিরিয়ান স্টপার এখানে খেলতে আসার অনেক আগে থেকেই র্যান্টি তাঁকে চেনেন। সেই ফাতাই প্রসঙ্গে বললেন, “নাইজিরিয়াতেই ফাতাইয়ের কথা শুনেছিলাম। তবে ওর কোনও খেলা দেখিনি। ওকে নিয়ে কেন, বাগানের কোনও ফুটবলারকে নিয়েই আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। নিজের সেরাটা দিতে চাই। নিজের খেলাটা খেলতে চাই। ডার্বি আমাদের জিততেই হবে।” কালীঘাট এমএসের সঙ্গে ড্র করার পর দল কি কিছুটা চাপে রয়েছে? র্যান্টির সাফ কথা, “আমাদের উপর কোনও চাপ নেই। আর্মান্দো বলে দিয়েছেন, চাপ না নিয়ে খেলাটা উপভোগ করতে। তবেই ভাল ফল সম্ভব।”
২০১২-তে আল আরুবার হয়ে এএফসি কাপে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন ফাতাই। সেই সময় যুবভারতীতে সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন। তার পর থেকেই নাকি কলকাতায় খেলতে আসার কথা ভাবতেন। স্বভাবতই মোহনবাগানের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে বেশ তেতে রয়েছেন শান্ত স্বভাবের ফাতাই। ফুটবলারদের কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মোহনবাগান। যুবভারতীতে অনুশীলন শেষ করে নিজের গাড়ির দিকে হেঁটে যেতে যেতে ফাতাই বলছিলেন, “ডার্বি খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। তবে কোচ খেলাবেন কি না এখনও জানি না। খেলালে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।”
মোহনবাগানের অনুশীলনে এ দিন দেখা গেল, র্যান্টি-বলজিতের কথা মাথায় রেখেই ডিফেন্সের উপর জোর দিচ্ছেন বাগান টিডি। কার্ড সমস্যায় শৌভিক ঘোষ নেই। দুই সাইড ব্যাকে সম্ভবত খেলবেন ধনচন্দ্র এবং সতীশ সিংহ। স্টপারে ফাতাইয়ের সঙ্গে শুরু করতে পারেন কিংশুক দেবনাথ। ব্লকার হিসেবে বড় চেহারার শেহনাজকে খেলানোর সম্ভাবনা প্রবল। ডার্বিতে সম্ভবত বলবন্ত সিংহকে এক স্ট্রাইকার রেখে টিমের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে চলেছেন বাগান টিডি সুভাষ ভৌমিক। মাঝমাঠে কাতসুমি, লালকমলের সঙ্গে উইঙ্গারে খেলতে পারেন মণীশ ভার্গব এবং সাবিথ। এ দিন অনুশীলনে মণীশকে তুলে শৌভিক চক্রবর্তীকেও খেলানো হয়। শৌভিকের গোড়ালির চোট এখন অনেকটাই ভাল।
দলকে উজ্জীবিত করতে এ দিন যুবভারতীতে আসেন মোহনবাগান সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু। মরসুমের প্রথম ডার্বি জিততে না পারলে কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে সবুজ-মেরুন। আর জিততে পারলে অন্য ম্যাচের মতোই ফুটবলাররা আর্থিক পুরস্কার পাবেন। সুভাষ ভৌমিকের উদ্যোগে এ বছর বাগানে একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। যে ফান্ডে দলের কর্তারা নিয়মিত কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। ম্যাচ জেতার পর সেই টাকা ফুটবলারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। ডার্বি জিতলে সেটাই দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy