সিন্ধুর গলায় তখনও রুপোর পদকটা জ্বলজ্বল করছে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি বিশ্বের এক নম্বর ক্যারোলিনা মারিনের বিরুদ্ধে যে আগ্রাসন নিয়ে খেলেছেন তা গোটা দুনিয়া সাক্ষী থেকেছে। হেরেও তিনি জিতে গিয়েছেন। জিতে নিয়েছেন গোটা দুনিয়ার মন। স্বর্ণপদক না পেলেও তাঁর লড়াইটা যে আসল সোনা সেটা বোধহয় বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। মারিনের বিরুদ্ধে যে ভাবে অনড়, অটল থেকে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন, চাপে থেকেও যে নিজের সেরাটা দেওয়া যায় শুক্রবার সন্ধেয় তা দেখিয়ে দিয়েছেন এই হায়দরাবাদি কন্যা।
রুপোর পদক নিশ্চিত ছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁর স্ট্র্যাটেজি মারিনকেও বলতে বাধ্য করেছে, “সিন্ধু আমার ফোকাসটা নাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন।” হ্যাঁ, কথাটা ঠিকই বলেছেন মারিন। কারণ বিশ্বের এক নম্বরকে কী ভাবে চাপে রাখতে সেটা দেখিয়েছেন সিন্ধু। চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের ভাষাটা শিখে গিয়েছেন তিনি। আর সেটা পেরেছেন বলেই একের পর এক ম্যাচে সাফল্য ছিনিয়ে নিতে পেরেছেন।
ম্যাচ শেষে কী বললেন এই হায়দরাবাদি কন্যা? কী ছিল তাঁর প্রতিক্রিয়া?
হাসিমাখা মুখে সিন্ধু বলেন, “ কী বলব ভেবে পাচ্ছিনা। তবে আমি খুব খুশি। এই সপ্তাহটা আমার জন্য সেরা। ভাল খেলেছি। ভাবতে ভাল লাগছে আমি একজন অলিম্পিক রুপো জয়ী।” তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তৃপ্ত। রিও-তে আসার আগে ভাবিনি, এই জায়গায় পৌঁছব। আমি যে লক্ষ্য নিয়ে প্রথম অলিম্পিক্সে এসেছিলাম, সেটা পেয়েছি। একটা পদক নিয়ে যাচ্ছি দেশে। এমন পদক যা কখনও ব্যাডমিন্টনে কেউ পায়নি।’’
পদক জয়ের পর সিন্ধু।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রিও থেকে যে ভারতীয়রা মেডেল নিয়ে গেলেন তাঁরা দুজনেই মহিলা। আপনার কী মনে হয় না মেয়েদের হাত ধরেই একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল?
খুব শান্ত ভাবে সিন্ধু উত্তর দেন, “বুঝতে পারছি পরিস্থিতি অনেক বদলেছে, এখন থেকে আরও বদলাবে। কুস্তিতে সাক্ষীর জয়, আরও অনেক আছেন যাঁরা পদকের খুব কাছে এসেও ফিরে গিয়েছেন, তাঁদের জন্য বলব হার্ড লাক, কিন্তু ভাল খেলেছ।” এর পরই তিনি যোগ করেন, “আমি এখানে একটা লক্ষ্য নিয়ে খেলতে এসেছি। পদক জয়। সেটা পেয়েছি। এখন থেকে জীবন বদলাবে। সেটা ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি। তবে ভাবতে ভাল লাগছে আমার নামের পাশে লেখা থাকবে অলিম্পিক মেডেলিস্ট।”
যে ভাবে নিজেকে একের পর এক সাফল্যের পথে নিয়ে গিয়েছে, যে ভাবে নিজেকে তৈরি করতে সাহায্য করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। শুক্রবার সন্ধেয় সিন্ধু আরও একটা বার্তা দিয়ে গেল বিশ্ব ব্যাডমিন্টনকে যে তিনি এখন অনেক পরিণত।
আরও পড়ুন...
‘আমাদের মেয়ে, আমাদেরই গর্ব’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy