Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ভারতকে দেখে ওয়ান ডে খেলাটা শিখুক ইংল্যান্ড

একদিনের সিরিজে কার্ডিফের ম্যাচটা যদি ভাল ভাবে জিতে থাকে ভারত, তা হলে নটিংহ্যামে রীতিমতো দাপটে জেতা গিয়েছিল। আর বার্মিংহ্যামে ইংরেজদের পুরোপুরি ধুয়েমুছে সাফ করে দিল ধোনিরা। প্রতিটা ম্যাচের সঙ্গে উন্নতি করেছে ভারতীয় দল। একটা টিম সেরা ফর্মে থাকার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে পৌঁছে গেলে কী হয়, তার নিখুঁত উদাহরণ বার্মিংহ্যামের জয়টা।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪
Share: Save:

একদিনের সিরিজে কার্ডিফের ম্যাচটা যদি ভাল ভাবে জিতে থাকে ভারত, তা হলে নটিংহ্যামে রীতিমতো দাপটে জেতা গিয়েছিল। আর বার্মিংহ্যামে ইংরেজদের পুরোপুরি ধুয়েমুছে সাফ করে দিল ধোনিরা। প্রতিটা ম্যাচের সঙ্গে উন্নতি করেছে ভারতীয় দল। একটা টিম সেরা ফর্মে থাকার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে পৌঁছে গেলে কী হয়, তার নিখুঁত উদাহরণ বার্মিংহ্যামের জয়টা।

মঙ্গলবার খেলা দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল ভারত আর ইংল্যান্ড যেন দু’টো পুরোপুরি আলাদা ব্র্যান্ডের এক দিনের ক্রিকেট খেলছে! ইংল্যান্ড বছর পনেরো পুরনো ওয়ান ডে ঘরানায় আটকে। অন্য দিকে, ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিপক্ষের উপর চাপ এবং রান তোলার গতি বাড়িয়ে আধুনিক ওয়ান ডে কী করে খেলতে হয়, যেন তারই প্রশিক্ষণ গিয়ে গেল ভারত।

ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ভারতের ব্যাটিং প্রদর্শনী হয়ে দাঁড়ায়। বল যত পুরনো হয়েছে ততই স্কোরিং রেট বাড়িয়ে গিয়েছে ব্যাটসম্যানরা। আস্কিং রেট কত, তা নিয়ে এক বারও মাথা না ঘামিয়ে। যেন সদম্ভ ঘোষণা আমরা এ ভাবেই খেলব। প্রতি বলে পিটিয়ে ছাতু করে তোমাদের বাউন্ডারির বাইরে ছুড়ে ফেলব। ক্ষমতা থাকলে থামিয়ে দেখাও!

এক দিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্সের মান কিন্তু ক্রমশ খারপ থেকে জঘন্য হয়ে উঠছে। গত দু’বছর এই ফর্ম্যাটে ওরা ঘরের মাঠেই কোনও সিরিজ জিততে পারেনি। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে শুধু টিম বদলালে চলবে না, এক দিনের ক্রিকেট নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গীও পুরো বদলে ফেলতে হবে। আশা করি শেষ তিনটে ম্যাচে ভারতের খেলা দেখে ওরা কিছু শিখতে পেরেছে। আগামী দিনে এই ধাঁচে খেলার চেষ্টা করে নিজেদের এক দিনের ক্রিকেটের মান বাড়িয়ে তুলবে।

ভারত আবার অজিঙ্ক রাহানের মধ্যে একজন ভাল ওপেনারকে খুঁজে পেল। এ বার সমস্যা হবে ওপেনিং কাকে দিয়ে করাবে ধোনি? রোহিত শর্মা না রাহানে? আমি মনে করি দু’জনকেই প্রথম এগারোয় দরকার। তবে বিদেশের মাঠে রাহানের রেকর্ড পাল্লা ওর দিকেই ঝুঁকিয়ে দিতে পারে। ক্যাপ্টেন হিসাবে আমি সব সময় সেই প্লেয়ারদের পছন্দ করতাম যারা বিদেশের মাঠে পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষায় সফল। বার্মিংহ্যামে রাহানের টেকনিক আর শট নির্বাচন দুরন্ত ছিল। ও দেখিয়ে দিল, বল মাঠের বাইরে পাঠানোর জন্য সব সময় পেশিশক্তি লাগে না। পেসারদের ও যে কৌশলে পেটাল, সেটা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পৌঁছে আগামী বছরের বিশ্বকাপে ভারতের দারুণ কাজে লাগবে।

রাহানে এক দিকে ওই রকম ছন্দে থাকায় শিখর ধবনও সেট হওয়ার সময় পেল আর নিজের গতিতে রান তুলল। হাফসেঞ্চুরিটা হয়ে যাওয়ায় ওর স্বস্তিও স্পষ্ট। তার পরেই চালিয়ে খেলা শুরু করে। ভারতীয় দলে প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের যে কেউ সেট হলেই বড় শট খেলতে পারাটাই সিরিজে দু’টো টিমের ফারাক গড়ে দিচ্ছে।

হেডিংলেতে ভারত নতুনদের দেখে নিতে চাইবে। বিশ্বকাপ তো প্রায় এসেই গেল। এই মওকায় করণ শর্মাকে দেখে নেওয়া যায়। লেগ স্পিনটা খুব নিখুঁত। যদি ভাল খেলে দেয়, বাউন্সি পিচে ভারতের সম্পদ হতে পারে। সঞ্জু স্যামসনকেও যদি দ্বিতীয় কিপার হিসাবেই ভাবা হবে তা হলে পেসারদের বলে ওর কিপিং ভারতের পাটা উইকেটের বদলে ইংল্যান্ডের বাউন্সি পিচেই দেখে নেওয়া ভাল। ভারতীয় নির্বাচকরা তাতে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর পেয়ে যাবেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE