বিস্ময়: উমেশ যাদবের বলে ব্যাট ভাঙল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের।
লেগ স্পিনার অলরাউন্ডার হিসেবে যখন কেরিয়ার শুরু করেন, তখন ৮-৯ নম্বরে ব্যাট করতেন তিনি। ৬-৭ বছরের বেশি হবে না। রিকি পন্টিংয়ের দলের সেই ছেলেটাই আজকের স্টিভ স্মিথ। ৫৩ টেস্টে ১৯টা সেঞ্চুরি যাঁর।
স্যর জিওফ্রে বয়কটের মতো ক্রিকেটবিজ্ঞরা বলেন, মোট টেস্ট সংখ্যা ও সেঞ্চুরির অনুপাত যাদের ৪:১, তারাই গ্রেট ব্যাটসম্যান।
স্টিভ স্মিথের ক্ষেত্রে এই অনুপাতটা তো ৩:১-এর চেয়েও কম। তা হলে মাত্র সাতাশেই তিনি ‘গ্রেট’ তকমাটা আদায় করে নিতে পারেন নিশ্চয়ই। এমএস ধোনির শহরে প্রথম টেস্টে সেটাই প্রমাণ করলেন তিনি।
শুক্রবার সঙ্গী ব্যাটসম্যানরা তাঁকে ঠিকমতো সঙ্গ দিতে পারলে হয়তো একটা ডাবল সেঞ্চুরির ফলক প্রতিষ্ঠা করে যেতে পারতেন। তিন বছর পরে টেস্ট দলে ফেরা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কথাই বা ভুলে যাবে কী করে রাঁচী? আবু ধাবিতে তিন বছর আগে শেষ টেস্ট খেলে ফেলার পর আর টেস্ট গ্রহে ঢোকার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন ম্যাক্স। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জেট গতির ইনিংসের জন্যই তাঁকে মনে রাখা হত এতদিন। এ বার এই অসাধারণ টেস্ট প্রত্যাবর্তনের জন্যও তাঁকে মনে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন
গতিতে কামাল জাড্ডুর, বাউন্স নেই অশ্বিনের
যে মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে এই দুই অস্ট্রেলিয়ান তাঁদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলেন, সেই জেএসসিএ স্টেডিয়ামের বাইশ গজ এখনও রহস্যের চাদরে ঢাকা। দু’দিনে ৫৭১ রান ওঠার পর শুক্রবার বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকে উমেশ যাদব ও ম্যাক্সওয়েল দু’জনেই বলে গেলেন, উইকেটের অবস্থা একই রকম, তেমন কোনও পরিবর্তনই দু’দিনে হয়নি।
রাঁচীতে যে লড়াইটা জমে গিয়েছে, সেটা ব্যাট-বলের, না শুধু ব্যাটের লড়াই হতে চলেছে, তা কিন্তু নির্ভর করছে এই পিচের উপরই। পিচ-চরিত্র যতক্ষণ না বদলাচ্ছে, ততক্ষণ ব্যাটসম্যানরাই এখানে সর্বেসর্বা। বদলে গেলে কী হবে, তা এই পিচের রক্ষক যাঁরা, সেই কিউরেটররাও এখন বলতে পারছেন না।
এই ব্যাটসম্যানদের স্বর্গেও রবীন্দ্র জাডেজার পাঁচ উইকেট তোলাটা বড় ব্যাপার। তাঁকে সামলে স্মিথের ১৭৮ ও ম্যাক্সওয়েলের ১০৪ রানের ইনিংস দিয়ে সাজানো অস্ট্রেলিয়ার ৪৫১-র জবাবে ভারত দিনের শেষে ১২০-১।
ভারতের দুই ওপেনার কে এল রাহুল ও মুরলী বিজয়ের ৯১ পার্টনারশিপের পর বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেল মুরলী ও চেতেশ্বর পূজারার ব্যাটেও। স্মিথ-ম্যাক্সের জবাব দেওয়ার মতো একটা জুটি ভারতকে যে দাঁড় করাতেই হবে।
ম্যাক্সওয়েল বললেন, ‘‘আজ দিনের শেষ দিকে কিন্তু বল ঘুরছিল। কাল আরও ঘুরতে পারে।’’ ভারতকে মনস্তাত্বিক চাপে রাখার চেষ্টা? কিন্তু যে ভাবে এই পিচেও শুধুমাত্র রাফে বল ফেলে সফল হলেন জাডেজা, অস্ট্রেলীয় স্পিনাররা যদি একই রাস্তায় হাঁটেন তখন? এই লড়াইয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ধোনির শহরের রহস্যময় পিচকে পাশে পাবেন তো?
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ৪৫১
ভারত ১২০-১
অস্ট্রেলিয়া (প্রথম ইনিংস)
স্টিভ স্মিথ ন. আ. ১৭৮
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ক ঋদ্ধি বো জাডেজা ১০৪
ম্যাথু ওয়েড ক ঋদ্ধি বো জাডেজা ৩৭
প্যাট কামিন্স বো জাডেজা ০
স্টিভ ও’কিফ ক বিজয় বো যাদব ২৫
নেথান লায়ন ক নায়ার বো জাডেজা ১
জশ হেজ্লউড রান আউট (জাডেজা-রাহুল) ০
অতিরিক্ত ২২
মোট ৪৫১
উইকেট পতন: ৩৩১-৫ (ম্যাক্সওয়েল, ১০১.২), ৩৯৫-৬ (ওয়েড, ১১৫.৪),
৩৯৫-৭ (কামিন্স, ১১৫.৬), ৪৪৬-৮ (ও’কিফ, ১৩৪.৩),
৪৪৯-৯ (লায়ন, ১৩৫.৬), ৪৫১-১০ (হেজ্লউড, ১৩৭.৩)।
বোলিং: ইশান্ত শর্মা ২০-২-৭০-০, উমেশ যাদব ৩১-৩-১০৬-৩,
আর. অশ্বিন ৩৪-২-১১৪-১, রবীন্দ্র জাডেজা ৪৯.৩-৮-১২৪-৫, মুরলী বিজয় ৩-০-১৭-০।
ভারত (প্রথম ইনিংস)
কে এল রাহুল ক ওয়েড বো কামিন্স ৬৭
মুরলী বিজয় ন.আ. ৪২
চেতেশ্বর পূজারা ন.আ. ১০
অতিরিক্ত ১
মোট ১২০-১
উইকেট পতন: ৯১-১ (রাহুল, ৩১.২)।
বোলিং: জশ হেজ্লউড ৯-২-২৫-০, প্যাট কামিন্স ১০-১-২২-১,
ও’কিফ ১০-৩-৩০-০, নেথান লায়ন ১১-০-৪২-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy