দলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে লালকৃষ্ণ আডবাণী ও নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদীর আসন ঘোষণার আগে দলের সঙ্কট মেটাতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আজ বিভিন্ন রাজ্যের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য দীর্ঘ সাত ঘণ্টা বৈঠক করেন দলের শীর্ষ নেতারা। তার পরেও একমাত্র সুষমা স্বরাজের বিদিশা কেন্দ্র ছাড়া বড় নেতাদের বেশির ভাগেরই আসন ঘোষণা করতে পারলেন না তাঁরা। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “নরেন্দ্র মোদী বারাণসী থেকে আর রাজনাথ সিংহ লখনউ আসন থেকে লড়বেন, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়ে গিয়েছে।” মুরলীমনোহর জোশীকে কানপুর বা ভোপালের মতো কোনও কেন্দ্র দেওয়া হতে পারে। অরুণ জেটলিকে পঞ্জাবে অমৃতসরে দাঁড় করানোর জন্য চাপ বাড়ছে। পঞ্জাবে দলের একটা বড় অংশ জেটলিকে চান। অকালি দলের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ভাল। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য অনেক দিন অবধি চাইছিলেন, জেটলি ভোটে না লড়ে সংগঠনের কাজেই মন দিন। কিন্তু জেটলি নিজে লড়তে চান। এখনও পর্যন্ত তাঁর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। জেটলি নিজেও আজ বলেন, “দল চাইলে আমি লড়তে পারি।”
দলীয় সূত্রের মতে, এখনও অনেক কেন্দ্র নিয়ে সমস্যা মেটেনি। দলের বড় নেতাদের আসন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেমন সমস্যা আছে, তেমনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। যেমন বিহারের পটনাসাহিব কেন্দ্রে সেখানকার সাংসদ শত্রুঘ্ন সিংহ থাকলেও রবিশঙ্কর প্রসাদ ওই কেন্দ্রে লড়তে চাইছেন। আবার শেষ মুহূর্তে যদি কোনও কারণে উত্তরপ্রদেশ থেকে মোদীর লড়া আটকে যায়, তখন বিহারের এই কেন্দ্রটিই বিকল্প হতে পারে।
যশবন্ত সিন্হা আবার মোদীর অধীনে কাজ করতে চান না। তিনি বয়সের দোহাই দেখিয়ে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিবর্তে ঝাড়খণ্ড থেকে নিজের ছেলে জয়ন্ত সিন্হার টিকিটটি সুনিশ্চিত করেছেন। মহারাষ্ট্রেও প্রয়াত প্রমোদ মহাজনের কন্যা পুনমকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিবসেনা যে ভাবে উঠতে বসতে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, এই অবস্থায় বাকি আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের সময়ও সতর্ক থাকতে হচ্ছে দলকে। মোদী শিবিরের নেতারা মনে করছেন, সুষমা স্বরাজের সঙ্গে শিবসেনা নেতা উদ্ধবের সম্পর্ক ভাল। মোদী যে ভাবে রাজ ঠাকরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখছেন, তাতে সুষমার ইশারাতেই উদ্ধব গর্জে উঠছেন বলে তাঁদের মত। আজও উদ্ধব বিজেপিতে নতুন শরিকদের আসা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। ঠিক যে কথাটি ক’দিন আগেই সুষমা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। কর্নাটকেও সুষমার আপত্তিতেই শ্রীরামুলুকে টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত আজ নেওয়া হল না। যে কারণে সে রাজ্যের পাঁচটি আসন ঘোষণা হলেও বাকি রাখা হয়েছে বেল্লারী আসনটি। আবার অন্য শিবিরের ভারসাম্য বজায় রাখতে দার্জিলিংয়ে মোদীর ঘনিষ্ঠ নেতা সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী করা হয়েছে।
সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত-সহ আরএসএসের শীর্ষ নেতারা এখনও দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীও আগামী দু’দিন দিল্লিতে থাকছেন। আগামিকাল ওড়িশায় সভা করে ফিরে আসবেন দিল্লিতে। স্থির হয়েছে, আরও আলোচনা করেই পরশু নির্বাচনী কমিটির বৈঠক ডাকা হবে। সেদিন গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশ নিয়ে আলোচনা হবে। দোলের পর আগামী সপ্তাহে ফের আর একটি বৈঠক হবে। সেখানে সব ক’টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেবে দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy