ঝিলম নদীতে নৌকাডুবি। —ফাইল চিত্র ।
নদীর এ-পার থেকে ও-পার বড়জোর ৫০০ মিটার। আর নদী পেরোনোর জন্য সব চেয়ে কাছের সেতুটাও রয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। একটা ফুটব্রিজ তৈরি হয়েই চলেছে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে। সেই অর্ধসমাপ্ত সেতুর কয়েকটা লোহার খুঁটি শুধু জেগে কাশ্মীরের ঝিলম নদীর উপরে।
তেমন একটা খুঁটিতে ধাক্কা লেগেই ডুবে গেল নৌকাটা। শ্রীনগর শহরতলির গন্দবাল নৌগাম এলাকায় আজ সকাল ৮টা নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনার বিলাল মোহিদিন ভট্ট জানান, নদী থেকে ছ’জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের খবর, মৃতদের মধ্যে রয়েছে অন্তত চার জন স্কুলপড়ুয়া। বাকিদের খোঁজে ঝিলম নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। জলে পড়ে যাওয়া ছ’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৩ জনকে চিকিৎসার পরে ছাড়া হয়েছে। বাকিরা ভর্তি আছেন।
সেতু যে-হেতু নেই, তাই গন্দবাল এলাকার বাসিন্দারা নৌকায় নদী পেরিয়েই যাতায়াত করেন ও-পারের বাটওয়ারা এলাকায়। বাদামি বাগের সেনা ক্যান্টনমেন্টের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নদীপথেই স্কুলে দিয়ে আসেন বাবা-মায়েরা। অফিসযাত্রীরাও নদী পেরোন নৌকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আজ সকালে জনা পনেরো যাত্রী (সাত নাবালক-সহ, বলছে প্রশাসন) নৌকায় নদী পেরোচ্ছিলেন। দু’পারে বাঁধা দড়ি টেনে এ-পার ও-পার করা হত নৌকাটিকে। গত কয়েক দিনে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ফুলেফেঁপে ওঠা ঝিলমের জলেও তাই বেশ স্রোত ছিল। সেই স্রোতের তোড়েই পুরনো নৌকাটি ধাক্কা খায় অসমাপ্ত ফুটব্রিজের লোহার খুঁটিতে। দড়ি ছিঁড়ে নিমেষে ডুবে যায় সেটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরাই প্রথমে উদ্ধারকাজে ঝাঁপান। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনটি বাচ্চাকে তাঁরা উদ্ধার করেছেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বছর পঁয়ত্রিশের এক মহিলা এবং তাঁর দুই যমজ ছেলে। নৌকার মাঝিও বেঁচে নেই। উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা উদ্ধারকাজে সমস্ত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ফারুক ও ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা তদন্ত দাবি করেছেন। স্থানীয়দের প্রশ্ন, সামান্য একটা ফুটব্রিজ বানাতে ১০ বছর লেগে যায় কী করে? এই কি উপত্যকার উন্নয়নের নমুনা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy