সংহারক: কেকেআরের দুই ওপেনার ঝড় তুললেন বেঙ্গালুরুতে। নারাইন করলেন দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। ফিরেই সফল লিন (ডানদিকে)। বিসিসিআই
বিরাট কোহালি বনাম গৌতম গম্ভীর। একজন ক্রিকেট অনুরাগীর কাছে এর থেকে ভাল ম্যাচ আর কী হতে পারে।
হতে পারে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ছিটকে গিয়েছে আইপিএল থেকে। তাতে কী? কোহালি, ক্রিস গেলের মতো ক্রিকেটাররা কোনও প্রদর্শনী ম্যাচেও নিজেদের সেরাটা দিতে অভ্যস্ত।
ভেবেছিলাম দুর্দান্ত একটা লড়াই দেখব। কিন্তু ক্রিস লিন আর সুনীল নারাইনের ব্যাটিং দেখে মনে হল বুকক্রিকেট দেখলাম। ভাবছিলাম, এটা কোন আরসিবিকে দেখলাম। এক-এক সময় তো মনে হচ্ছিল নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব ১৪ কোনও দল খেলছে। যাদের না আছে কোনও গেমপ্ল্যান। না আছে কোনও জেতার ইচ্ছা। দাঁড়িয়ে থেকে হারা যাকে বলে।
ক্রিস গেলের থেকে যে ইনিংস আমি আশা করেছিলাম সেটা দেখলাম সুনীল নারাইনের ব্যাটে। গেলকে বল করতে গেলে যে ভয় দেখা যায় বোলারদের মধ্যে। নারাইনের ব্যাটিংয়ের সময়ও চহাল, বদ্রীদের মুখটা দেখে তাই মনে হচ্ছিল। এতে কোনও সন্দেহ নেই নাইটদের জয়ের পিছনে আসল কারণ নারাইনের ১৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। এল, দেখল আর ছ’ওভারে ম্যাচ বের করে চলে গেল।
আরও পড়ুন: রেকর্ড করে নিজেই বিস্মিত নারিন
টি-টোয়েন্টি মানেই এমন একটা ফর্ম্যাট যেখানে ব্যাটসম্যানদের দ্রুত ম্যাচটা রিড করতে হয়। নারাইন সে রকমই ব্যাটসম্যান। বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং করল। খুব বেশি ঝুঁকি নিল না। সোজা ব্যাটে খেলল। এমন নয় যে গেল বা পোলার্ডের মতো নারাইন খুব শক্তিশালী। কিন্তু ওর টাইমিংটা দারুণ। ক্রিকেটের কপিবুক মেনেই কিন্তু শট খেলল। উল্টোপাল্টা চালায়নি। আজকের ম্যাচের পর হয়তো ওপেনিং স্লটটা পাকাপাকি ভাবে নিজের করে নিল নারাইন।
পরিসংখ্যানই তো বলছে নারাইনের ইনিংসটা আইপিএলের ইতিহাসে জায়গা করে নিল। ইউসুফ পাঠানের মতো ১৫ বলে ৫০ করল নারাইন। যা আইপিএলে দ্রুততম। ক্রিস গেল, সুরেশ রায়না, অ্যাডাম গিলক্রিস্টের মতো ব্যাটসম্যানরাও যে তালিকায় নারাইনের থেকে পিছনে। সত্যি অবিশ্বাস্য।
হতাশা: ব্যাট হোক বা ফিল্ডিং, ডিভিলিয়ার্স-কোহালিদের সময়টা ভাল যাচ্ছে না আইপিএলে। নাইটদের বিরুদ্ধেও রবিবার হার। ছবি: বিসিসিআই
নারাইনকে সহায়তা দিল ক্রিস লিন। কাঁধের চোট সারিয়ে এতদিন পরে ফিরেও ২২ বলে ৫০ করল। আসলে লিন তো পুরোই পাওয়ার হিটার। ওর কব্জির মুভমেন্টও ভাল। পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে খুব ধারালো। লিন হচ্ছে টি-টোয়েন্টির আদর্শ ওপেনার। যে দলকে দুরন্ত শুরু করতে সাহায্য করে। লিন আর নারাইন আউট হওয়ার পর ম্যাচ এক প্রকার তখন জিতেই গিয়েছে কেকেআর। বাকি ব্যাটসম্যানদের খুব বেশি কিছু করতে হয়নি।
এই মরসুমে আরসিবির সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ব্যাটিং। আমার একটু অবাকই লাগছে এটা বলতে। কারণ যে দলে কোহালি, ডিভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যান আছে তারা রান পাচ্ছে না। কিন্তু আরসিবির হারের পিছনে ব্যাটসম্যানরাই দায়ী। গেলকে তো দেখে মনে হল ঘুরতে এসেছে। ডিভিলিয়ার্স অত বাইরে বেরিয়ে সুইপ কেন খেলতে গেল বুঝলাম না। কোহালিরও শট বাছাইটা ভুল হচ্ছে। ট্র্যাভিস হেড আর মনদীপ তবুও একটা লড়াই করার মতোই স্কোরে নিয়ে গেল দলকে। চিন্নাস্বামীর মতো স্লো পিচে ১৫৮ মোটেই খারাপ স্কোর নয়। কিন্তু পাওয়ার প্লে-তে প্রথম ছ’ওভারে কোনও দল ১০০ তুললে আর কী-ই বা করা যেতে পারে।
নারাইন আর লিন ছাড়াও নাইটদের জয়ের আর এক বড় কারণ উমেশ যাদব। গেল ও কোহালির উইকেট তাড়াতাড়ি না তুললে সমস্যা হতেই পারত। অঙ্কিত রাজপুতও চার ওভারে বেশ ভাল বোলিং করেছে। অনেক দিন বাদে ফিল্ডিংও ভাল করেছে কেকেআর।
আইপিএল এমন একটা টুর্নামেন্ট যেথানে আগেভাগে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। তবুও দিনের শেষে বলতেই হচ্ছে নাইটদের ঐক্যবদ্ধ একটা পারফরম্যান্স দেখলাম। এটা ধরে রাখতে পারলে সাফল্য আসবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy