প্রার্থনা: বেঙ্গালুরুর সঙ্গে দেখা যাবে নাইটদের উৎসব?ফাইল চিত্র
টুর্নামেন্টের আগে যদি আমরা জেনে নিতে পারতাম কত নম্বরে শেষ করব, তা হলে আর বোধহয় কেউ এত হতাশ হতেন না। কিন্তু ঘটনাটা তো একেবারে উল্টো। আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদেরই হাতে। আর সেটা ঠিক হবে পরবর্তী তিনটে ম্যাচে।
আরসিবি, কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স— লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকতে গেলে এই তিনটে ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। আর লিগ টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে অফে গেলে আমাদের ফাইনালে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না বোধহয়। আর তা যদি না হয়, তা হলে ঘুরপথে, অর্থাৎ এলিমিনেটর, কোয়ালিফায়ার খেলে তার পর ফাইনালে পৌঁছতে হবে। ২৫ বছরের পেশাদার ক্রিকেট জীবনে আমি অনেক কিছু শিখেছি। কিন্তু সবচেয়ে সহজ যে পাঠটা পড়েছি, তা হল, বেশি দূরে না তাকানোই ভাল।
এই মুহূর্তে আমাদের যাবতীয় চিন্তা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর নিয়ে। যেহেতু ওরা প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে, তাই আমার মনে হয় ওরা এখন বিপক্ষ হিসেবে আরও বেশি বিপজ্জনক। ওদের মরশুমটা এ বার মোটেই ভাল যায়নি। তাই শেষটা ওরা মোটেই খারাপ ভাবে শেষ করতে চাইবে না। নিশ্চয়ই ঝাঁপিয়ে পড়বে। ওদের যদি এই ম্যাচে জিতে প্লে অফে জায়গা করে নেওয়ার ব্যাপার থাকত, তা হলে ওরা আমাদের বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করবে, তার একটা আন্দাজ আগে থেকে করা যেত। কিন্তু এখন যেহেতু ওদের আর কিছু হারানোর বা পাওয়ার নেই, তাই ওরা অনেক বেশি বিপজ্জনক। কখন কী করে বসবে আগে থেকে তা ভেবে নেওয়া কঠিন।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিকের ধাক্কায় চাপে কেকেআর
ওরা ১২টার মধ্যে মাত্র দুটো ম্যাচ জিতেছে বলে ভাববেন না যে, খুব খারাপ দল ওরা। আগেও বলেছি আইপিএলে, শীর্ষে থাকা দলের সঙ্গে বাকি দলগুলোর পাঁচ শতংশের বেশি তফাত থাকে না। খুব ছোট একটা ঘটনা বড় তফাত গড়ে দেয়। একটা ক্যাচ বা একটা রান বাঁচানো অথবা একটা ডিরেক্ট হিটেই ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে।
শনিবার বিকেলে যখন এই লেখা লিখছি, তখন ছ’টা দলের প্লে অফে যাওয়ার সম্ভাবনা বেঁচে আছে। মুম্বইয়ের কাছে হারলে হয়তো দিল্লি এই লড়াই থেকে ছিটকে যেতে পারে। লিগ যত শেষ দিকে গড়ায়, তত টেনশন ক্রমশ বাড়ে। এটাই তো আইপিএলে সবাই চায়।
আর যারা মাঠে নেমে খেলে ও ডাগ আউটে বসে থাকে। প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থেকে নিজেদের বার করে আনা। শেষ বলে ম্যাচের নিষ্পত্তি হওয়ার চাপ নেওয়া ও সেই ফলের ভিত্তিতে প্লে অফের দৌড়ে টিকে থাকা বা ছিটকে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির চাপ সহ্য করার মতো স্নায়ুর জোর থাকতেই হবে তাদের। এই চাপ উপভোগ করতে হয়। যার মধ্যে এই চাপ এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, আইপিএল তার জন্য না। ভাগ্য ভাল যে আমাদের কেকেআর শিবিরে একটা ছেলেও সে রকম নয়। আর তারাও ভাগ্যবান যে, তারা এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে পড়ার সুযোগ তৈরি করে নিতে পেরেছে। যত এইরকম পরিস্থিতিতে পড়বে, তত তার মোকাবিলা করার ক্ষমতা বাড়বে। যখন কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে অভিজ্ঞতার গুরুত্ব কতটা, তখন তাকে বলি, কোন স্টেডিয়ামে চেঞ্জিং রুম কোথায়, তা জানার থেকেও আরও জরুরি একটা ব্যাপার আছে। সেটা হল, নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিকুল পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বার করে আনার বিদ্যে রপ্ত করা। আমার বিশ্বাস কেকেআরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট এটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy