ক্রিসমাস ইভে পার্টি!
আর পার্টি মানে আপনিও সাজবেন, ঘরদোরও। মানে চিরাচরিত নিয়ম তো সেটাই। নাকি?
অতএব? নজরকাড়া কিছু জিনিস চাই, যাতে সামনের হলঘরটায় ঢুকেই তাক লেগে যায় সকলের। এ দিকে তো নোট বাতিলের চাপে চোখে সর্ষেফুল! তা হলে উপায়?
কুছ পরোয়া নেই। হাতে নগদ না-ই বা থাকল, হাত দুটোই তো কাফি! হাতের জাদুতে ভরসা রাখুন, সঙ্গে শুধু টুকিটাকি কয়েকটা জিনিস। ব্যস! পার্টিতে আসা সকলের চোখ টানবেই আপনার শিল্পকর্ম। আর তার আইডিয়া? মাথা খাটিয়ে দেখুন না একটু। ‘সব পেয়েছি’র ইন্টারনেট তো আছেই।
ক্রিসমাস পার্টি মানেই আর কিছু থাক না থাক, সান্তা ক্লজ আর ক্রিসমাস ট্রি চাই-ই।
বেশ তো! সান্তাও তো আছেন কাছেই। কিচেন শেল্ফে গুঁজে রাখা আইসক্রিমের পুরনো কৌটোয়। দরকার একই রকম বেশ কয়েকটা চৌকো আকৃতির কৌটো, আঠা, সাদা চার্ট পেপার, জলরং, লাল আর কালো ফেল্টপেন, খানিকটা তুলো আর কিনে আনা সান্তা টুপি। কৌটোগুলোকে প্রথমেই মুড়ে নিন সাদা চার্ট পেপারে। যে কোনও একটা পাশ বেছে নিয়ে কালো আর লাল ফেল্টপেন দিয়ে এঁকে নিন গোল একটা বৃত্ত। তাতে চোখ-নাক-ঠোঁট এঁকে জলরং দিয়ে রং করে শুকিয়ে নিন ভাল করে। এর পরে আঠা দিয়ে তুলো সেঁটে হয়ে যাক দাড়ি-গোঁফ-ভুরু। শেষমেশ টাইট করে কৌটোর ঢাকনা এঁটে উপরে আঠা দিয়ে সেঁটে দিন সান্তা টুপি। ব্যস! আপনার সান্তা রেডি! এ বার হলঘর জুড়ে এখানে-ওখানে বসে পড়ুক পুঁচকে সান্তারা।
সান্তা তো হল, এ বার ক্রিসমাস ট্রি? তা-ও বানিয়ে ফেলুন না নিজেই। সবুজ রঙের বেলুন কিনে ফেলুন অনেক। সেগুলো ফুলিয়ে একটা লাঠির গায়ে পরপর আঠা দিয়ে সেঁটে নিন ক্রিসমাস ট্রি-র আকারে। এ বার সোনালি তারা, প্লাস্টিকের বল বা রংচঙে বিড্স দিয়ে সাজিয়ে নিলেই হল। কিংবা বাড়িতে জমে থাকা পুরনো ডাইরিগুলো সব সবুজ মলাটে মুড়ে ফেলুন। টেবিলের উপরে একটা ছোট্ট বাক্স রেখে, তার উপরে খোলা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দিন একটা ডায়েরি। তার উপরে বড় থেকে ছোট ডায়েরিগুলো পিরামিডের আকারে বসিয়ে নানা রঙের তারা, বল আর আলোয় সাজিয়ে ফেলুন আপনার ক্রিসমাস ট্রি!
ক্রিসমাস ইভের পার্টি, একটু কায়দার আলো না হলে চলে? সে-ও তো ঘরেই মজুত। নানা রং বা প্রিন্টের কাগজ, এমনকী খবরের কাগজের পাতাও জোগাড় করে বিভিন্ন ডিজাইনে পেপার কাটিং করে রাখুন। বাড়িতে পুরনো মিনারেল ওয়াটারের বোতল থাকেই। প্রত্যেকটার মুখ কেটে ফেলে বোতলের চওড়া অংশটাকে সমান দুটো টুকরোয় কেটে নিন। প্রত্যেকটা টুকরোকে মুড়ে নিন পেপার কাটিং করা কাগজে। এ বার কালীপুজোর চাইনিজ লাইটের বান্ডিলটা খুলে প্রত্যেকটা কাগজ মোড়া বোতলের টুকরোর মধ্যে দিয়ে গলিয়ে নিন তার। মাথার উপরে মালার মতো ঝুলিয়ে আলো জ্বেলে দিন। তার মাঝে মাঝে থাক কাগজের রিবন আর বেলুন। জাফরি কাজের রংচঙে আলোয় পার্টি মুডও জমবেই! একই ভাবে বাহারি কায়দায় কাটা কাগজে মুড়ে নিতে পারেন হলঘরে লাগানো ল্যাম্পশেডগুলোকেও।
মোমবাতি তো মাস্ট। তাতেও থাক না আপনার হাতের ছোঁয়া? ঘরের দৃশ্যমান কোণে একটা বড় পাত্রে জল রাখুন। এ বার একটা কাচের বয়াম মুড়ে নিন জাফরি কাজে কাটা খবরের কাগজে। বয়ামটাকে বসান জলের পাত্রের মাঝখানে। এ বার বড় সাইজের একটা মোমবাতি মাঝে বসিয়ে জ্বালিয়ে দিন। দেখুন না আলো-আঁধারি ঘরটা কেমন অন্য রকম হয়ে ওঠে! কালীপুজোর ছোট্ট ছোট্ট মোমবাতি বসানো প্রদীপ যদি থেকে থাকে, রং করে শুকিয়ে রাখুন সেগুলোও। ঘরের মাঝখানের টেবিলটায় বড় একটা কানা উঁচু থালা বা ট্রে রেখে জল ভরে তার উপরে বসিয়ে দিন প্রদীপগুলো। দেখুন না তার ছায়ায় সিলিংটাও কেমন তারা-ভরা হয়ে ওঠে!
ক্রিসমাস ইভের দেরি নেই কিন্তু। এই বেলা প্রস্তুতি শুরু করে দিলে হয় না?
ছবি: সংগৃহীত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy