‘পোস্ত’র বাবা-মা মিমি ও যিশু।
‘আই মিস ইউ। আই লভ ইউ। আই লভ কলকাতা।’ মায়ের শিখিয়ে দেওয়া বুলি আওড়াচ্ছে সানফ্রান্সিসকোর এক ‘পোস্ত’। আর এক জন ড্রইং খাতার পাতা ভরিয়েছে দাদু-দিদার রংচঙে ছবিতে। কিঞ্চিৎ বড় লস অ্যাঞ্জেলসের এক ‘পোস্ত’র আবার মন খারাপ। কারণ? গত বছরই তার একটা বোন হয়েছে। তাকে এখনও ছুঁয়ে দেখার দূরত্বে কাছে পাননি কলকাতায় থাকা দাদু। শুক্রবার দুপুরে নন্দনের অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে বসে নিজের ‘পোস্ত’দের দেখতে দেখতে চোখ ভিজে উঠল দাদু-ঠাকুমাদের। তাঁদের এই সুযোগ করে দিলেন পরিচালক জুটি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়। সৌজন্যে তাঁদের আসন্ন ছবি ‘পোস্ত’র ট্রেলার লঞ্চ।
এমন ইউনিক ভাবনার এখানেই শেষ নয়। শিবপ্রসাদ বললেন, ‘‘আমরা আগামী ১৯ তারিখ আমেরিকা যাচ্ছি। এই দাদু-দিদাদের মেসেজ ওদের কাছে পৌঁছে দেব। এটা কিন্তু এখনও ওরা জানে না।’’
আরও পড়ুন, ‘দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী মেগার স্টোরি লাইন পাল্টে দেওয়া হয়’
ছবির গল্পে আটপৌরে ছন্দ। ‘পোস্ত’, অর্থাত্ অর্ঘ্য বসু রায় থাকে তার দাদু-ঠাকুমার কাছে। চাকুরে বাবা-মা কলকাতা থেকে মাঝেমধ্যে আসেন। ‘পোস্ত’কে মিস করেন মা। ছেলে-বউকে নিয়ে বিদেশ পাড়ি দিতে চান ‘পোস্ত’র বাবা। ঠিক এখানেই সংঘাতের শুরু। ‘পোস্ত’র ওপর কার অধিকার বেশি? বায়োলজিক্যাল বাবা-মায়ের নাকি ‘পোস্ত’কে গড়ে তোলার কারিগর দাদু-ঠাকুমার? লড়াই গড়ায় আদালতের দরজায়। উত্তর দেবে আগামী ১২ মে-র প্রেক্ষাগৃহ।
ছবির একটি দৃশ্যে ‘পোস্ত’ অর্থাত্ অর্ঘ্য বসু রায়।
‘পোস্ত’র ঠাকুমা লিলি চক্রবর্তী বললেন, ‘‘আশা করছি সবাই ছবিটা দেখবেন।’’ দাদু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মত, ‘‘আপনাদের ভাল লাগলে আমাদেরও ভাল লাগবে।’’ ‘পোস্ত’র রিল লাইফের মা মিমি চক্রবর্তী শেয়ার করলেন, ‘‘এই ছবিতে আমার চরিত্র একদম আলাদা। শিবুদা নন্দিতাদি যে ভেবেছে আমি এটা করতে পারব, এটার জন্য সব ক্রেডিট ওদের। আর অবশ্যই ধন্যবাদ দেব আমার ছেলেকে।’’ বাবা যিশু সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘এটা নন্দিতাদি এবং শিবুর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। আমি মনে করি এই ছবিটা ওদের আগের ছবি ‘বেলাশেষে’ ও ‘প্রাক্তন’-এর তুলনায় অনেক বেশি ইমোশনাল, অনেক বেশি হিউম্যান।’’
আরও পড়ুন, এক কাহিনির দুই ‘বেগম’ মুখোমুখি কলকাতায়
ট্রেলারেই প্রথম দেখা মিলল এই ছবির দুই তুরুপের তাস বাবুল সুপ্রিয় ও সোহিনী সেনগুপ্তের। বাবুল মজা করে বললেন, ‘‘পোস্তর ওপর ছোট্ট একটুকরো লঙ্কা হয়ে বসেছি আমি। মিমিকে অনুরোধ, এই ডায়েটিংয়ের মধ্যেও এক দিন ভাত দিয়ে পোস্ত মেখে খেও।’’ টিমের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার হিসেবে সোহিনীকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করালেন শিবপ্রসাদ। সোহিনীর কথায়, ‘‘ওদের সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকি। ওরা ছবিতে না নিলে বেশ দুঃখই হয় আমার। আর পোস্ত তো আমার জন্য একটা এক্সপিরিয়েন্স।’’
পর্দার দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে ‘পোস্ত’।
সাধারণত নেপথ্য থাকেন এই পরিচালক জুটির অন্য সদস্য নন্দিতা রায়। তাঁর কথায়: ‘‘ট্রেলার লঞ্চ প্রিটেস্ট দেওয়ার মতো। আসল পরীক্ষা দেব আগামী ১২ মে।’’ আর ‘পোস্ত’? এই ছবির একমাত্র হিরোর কী মত? মা, থুড়ি রিল লাইফ মা মিমির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে তার দাবি, ‘‘আমরা আসছি ১২মে। তোমরা পোস্ত দেখো কিন্তু।’’
আরও পড়ুন, ‘রিভিউ না পড়েই হয়তো দর্শক ছবিটা দেখবেন’
ছবির গানঘর সামলেছেন অনুপম রায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং উপল সেনগুপ্ত। পরিচালক জুটির আগের দুটি ছবি ‘বেলাশেষে’ এবং ‘প্রাক্তন’ বক্স অফিসে লেটার মার্কস পেয়েছে। ‘পোস্ত’ও যে সেই ট্রেন্ড বজায় রাখবে ট্রেলার দেখে তা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন টলিউডের একটা বড় অংশ।
ছবি: অনির্বাণ সাহা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy