বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলে বিরক্ত হন। গত বছর সিনেমায় তাঁকে সে ভাবে দেখা না গেলেও, এ বছর এপ্রিলের মধ্যেই চারটে ছবির কাজ শেষ হয়ে যাবে। নতুন শখ নেটফ্লিক্সে সিনেমা দেখা। রেডিওতে শোনেন ‘দিম্মা’র গান। ইন্ডাস্ট্রিতে এ বার তাঁর কুড়ি বছর। তিনি রাইমা সেন। কোচবিহারে শুটে যাওয়ার জমিয়ে আগে আড্ডা দিলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
• ইন্ডাস্ট্রির দেওয়া ‘পাগলি’ নামটা আছে এখনও?
রাইমা: এটা ইন্ডাস্ট্রির দেওয়া নয় তো! ‘পরিণীতা’ করার সময় থেকে প্রদীপ সরকার ‘পাগলি’ বলে ডাকতেন আমায়। এ বার মুম্বই গিয়ে প্রথমে ওঁর অফিসে দেখা করতে গিয়েছিলাম। উনি ছিলেন না। তবে দেখলাম, ওর অফিসে ‘পরিণীতা’র লুকে আমার একটা ছবি রাখা আছে। কী যে ভাল লেগেছিল! সেই কবে ‘পরিণীতা’ হয়েছে! আজও ছবিটা আছে। যাই হোক, ওঁর বাড়ি গেলাম। আমাকে দেখে খুশি তো হলেনই, তার পর বললেন, ‘‘পাগলি তুমি আগের চেয়ে এখন অনেক কম পাগল।’’ এ রকম সব সম্পর্ক আমাদের। ইন্ডাস্ট্রি থেকে এটাই পাওয়া।
• কত বছর হল ইন্ডাস্ট্রিতে?
রাইমা: হুমম! কুড়ি বছর তো হয়ে গেল।
• এই কুড়ি বছরে সুচিত্রা সেনের নাতনি, মুনমুন সেনের মেয়েকে কোনও স্ট্রাগল করতে হয়নি?
রাইমা: আমি বুঝতে পারছি এই প্রশ্ন কেন! শুনুন, ইন্ডাস্ট্রিতে যে কোনও অভিনেতাকেই স্ট্রাগল করতে হয়।
• আপনার পারিবারিক সূত্রে সুযোগ অনেক বেশি এসেছে।
রাইমা: আমি বলছি বিষয়টা। আমি মানছি, একটা ঐতিহ্যের জন্য আমার ব্রেক পেতে নিশ্চয়ই সুবিধা হয়েছে। ‘গডমাদার’-এ সে ভাবেই কাজ পাই। কিন্তু একটা ছবির পরে যদি বোঝা যেত আমি অভিনয়টা পারি না, বিশ্বাস করুন কেউ আমায় ডাকত না। আরও একটা কথা আছে, যখন স্টার ফ্যামিলি থেকে কেউ ইন্ডাস্ট্রিতে আসে, তখন তাকে সক্কলে আরও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। তাদের আরও সাবধানে চলতে হয়।
• আপনি নেপোটিজমে বিশ্বাস করেন?
রাইমা: নাহ্। ওই যে বললাম, সুযোগ সহজে পাওয়া যায়, কিন্তু সেটা ধরে রাখতে না পারলে কীসের নেপোটিজম?
আরও পড়ুন
‘প্রেমিক নয় তথাগত আমার বেস্টফ্রেন্ড’
• কিন্তু আপনি নিজে মুম্বইতে থাকেন না। অথচ মুম্বইতে এ বছর আপনার তিনটে ছবি মুক্তি পাবে, শোনা যাচ্ছে...
রাইমা: এটা কিন্তু নেপোটিজমের রেজাল্ট নয়। প্লিজ। মুম্বইয়ের বল গেম একেবারে আলাদা। প্রচুর ভাল কাজ করা লোকের ভিড়। ভাল কাজ না করতে পারলে দৌড় থেকে ছিটকে যাবে। আর আমি প্ল্যান করে কিছু করি না। এ বছর দেখলাম অনেক ছবির কাজ চলে এল। মুম্বইয়ে ‘ভদকা ডায়েরিজ’, ‘বারাণসী’ আছে। আরও একটা ছবির কাজ হবে। ওখানে সকলে আমায় রেসপেক্ট করে। ‘রাইমাজি’ বলে ডাকে। ওরা আমার বাংলা ছবিও দেখেছে। ফ্লুকে কিছু হয় না আর।
• আর কলকাতায়?
রাইমা: চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘তারিখ’-এ কাজ করব। রাজর্ষির ‘শুভ নববর্ষ’। এই ২৩ ফেব্রুয়ারিতেই মুক্তি পাবে ‘কায়া’। এ রকম চলছে। আমি এতেই খুশি। ছবি খাব, ছবি মাখব, ছবি ঘুমোব— এ রকম কোনও প্ল্যান আমার কোনও দিনই ছিল না। আমার মা তো সব সময় বলে, ‘এত ছবি করো না। ঘুরে বেড়াও। আরাম করো।’ আমিই বলি, যে রকম কাজ আসছে করে ফেলি।
• আপনি মাঝেই মাঝেই উধাও হয়ে যান। কোথায়?
রাইমা: আরে বেড়াতে যাই। সকলকে বলে যেতে হবে নাকি! বললাম না, আমি শুধু ছবি করার জন্য বাঁচি না। পার্টিতেও যাই না ছবিতে কাজ পাওয়ার জন্য। জানি, একটা ছবিতে ভাল কাজ করলে পরের ছবিতে ডাক পাব। নিজের টার্মে বাঁচি আমি। কোনও কিছুর জন্য আশা করে সেই মতো বাঁচি না।
• ছবি ফ্লপ হলে কী করেন?
রাইমা: কী আর করব! গল্পের বই পড়ি। উত্তম-সুচিত্রার ছবি দেখি। রিল্যাক্স করি। পৃথিবীতে ঘুরতে যাই। জিমে যাই।
• শুনেছি আপনি কখনও কখনও দুষ্টু মেয়ে হয়ে যান...
রাইমা: হুমম! গল্প আছে। যেমন ধরুন, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রথম দিকে খুব ভয় পেতাম। এখন কী হয়, কৌশিকদা হয়তো চাইছে না আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ছবি আপলোড করি। আমি করে দিলাম! তার পর কৌশিকদা আমায় ফোন করছে, আমি ফোন তুলছি না। পরের দিন ফোন করে বললাম, ‘জানি তুমি কেন ফোন করছ!’ কৌশিকদা হেসে বলল, ‘খুব দুষ্টু।’ আসলে টলিউড আমার বাড়ির মতো। অনেক বেশি প্যাম্পার করে সবাই আমাকে।
আরও পড়ুন
‘জীবনে কত প্রেমিকাকে যে না বলতে হয়েছে…’
• মানে রাইমাকে নিয়ে আদিখ্যেতা হয়?
রাইমা: নাহ্। আমার কোনও ট্যানট্রাম নেই। অমুক গাড়ি, আলাদা খাওয়া... এক বার সেটে ওমলেট খেতে চেয়েছিলাম বলে প্রযোজক বলেছিলেন, ‘ম্যাডাম আপনি ওমলেট খান!’
• তবে, পরমব্রত, আবির আপনাকে নিয়ে যে ভাবে ঠাট্টা করে...
রাইমা: ওদের সঙ্গে বন্ডিংটাই আলাদা। ওরা জানে, হাসি ঠাট্টাগুলো আমিও এনজয় করি।
বলিউড-টলিউড-টেলিউডের হিট খবর জানতে চান? সাপ্তাহিক বিনোদন সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
• আচ্ছা একটা কথা বলুন, আপনি কী বিয়ে আর এনজয় করেন না?
রাইমা: আবার সেই প্রশ্ন! আমার বিয়ের জন্য লোকের এত মাথাব্যথা কেন?
• কারণ আপনি রাইমা সেন...
রাইমা: আমার বিয়ে হঠাৎ করেই হবে। যেমন রিয়ার হল। তবে, ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কাউকে বিয়ে করব না। আপনাদের নিশ্চিত জানাব।
পুনশ্চ: সাক্ষাৎকার শেষে বললেন, ‘প্লিজ, আমার ইন্টারভিউতে ভাল ছবি দেবেন!’
—ফাইল চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy