হঠাৎই যেন ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে ১৭ বছর পিছিয়ে গেল রাঁচি!
সিনেমার গল্পের মতো।
১৯৯৮ সালের কোনও একটা দিন। ‘টিম ইন্ডিয়া’র থেকে তখন অনেক দূরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি— সিসিএল দলের দাপুটে খেলোয়াড়। সে দিন ক্রিজে ধোনির সহযোদ্ধা ছিলেন সাব্বির। বাউন্ডারির ও পারে একের পর এক বল উড়িয়ে দু’জনের জুটি তুলেছিলেন ৩৭৮ রান। ধোনির ঝুলিতে ওঠে দ্বিশত রানের রেকর্ড।
সোমবার যেন সিসিএলের সে দিনের ম্যাচই ফিরল ধোনির শহর। সৌজন্যে, বলিউড। ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর জীবনী নিয়ে সিনেমা গড়ছে মায়ানগরী মুম্বই। ছবির নাম, ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়দানে তারই শ্যুটিং চলল দিনভর। ধোনি-র ভূমিকায় মাঠে নামলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। ওই চত্বরে ঢোকার অনুমতি না পেলেও তুমুল ভিড়ে উপচে পড়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচিল, আশপাশের বাড়ির ছাদ। ক্যামেরার সামনে সেঞ্চুরি করে সুশান্ত অভিবাদনের জন্য ব্যাট তুলতেই হাততালির তুফান উঠল। সকলের চোখের সামনে তখন সুশান্তই যেন স্বয়ং ধোনি।
কয়েক দিন ধরেই ওই ছবির শ্যুটিং চলছে রাঁচির হরেক জায়গায়। আর আচমকাই শহরবাসী ফিরে পাচ্ছেন পুরনো দিনের ‘মাহি’কে।
এ দিন শ্যুটিং দেখতে স্কুলপড়ুয়াদের পাশাপাশি ভিড় জমিয়েছিলেন ধোনির সমবয়সীরাও। ছিলেন রাঁচির কাঁকের জেলার রাহুল যাদব। সিসিএলের সেই ম্যাচে হাজির ছিলেন তিনিও। এমনই দাবি করে রাহুল বলেন— ‘‘ওই ম্যাচে সব খেলোয়ারকে দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। ধোনিকে দু’শো টাকা বেশি দিয়েছিলেন সিসিএল কর্তৃপক্ষ।’’ রাহুলের সঙ্গে ভিড়ে মিশেছিলেন এমনই অনেকে। তাঁদের কেউ কেউ ধোনির জীবনের ‘অজানা’ গল্প ছবির নির্দেশক নীরজ পাণ্ডেকে জানানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন। অনুপম মিশ্র নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা শ্যুটিং ক্রু-দের বলেন, ‘‘ওই ম্যাচটা নিয়ে আমি অনেক কিছু জানি। আমাকে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হোক। ডিরেক্টরকে টাটকা তথ্য দিতে পারব।’’ নিরাপত্তারক্ষীরা অবশ্য তাঁর কথায় পাত্তাই দিলেন না।
আম্পায়ারের টুপি পড়ে হাজির হন রাতুর এক বাসিন্দা। তাঁর দাবি, ধোনি স্কুল টিমের সদস্য থাকাকালীন কয়েকটি খেলায় তিনিই আম্পায়ার ছিলেন। ফলে তাঁর শ্যুটিংয়ে থাকাটা খুব জরুরি। কিন্তু, তাঁকেও পাঁচিলের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
অভিনেতা, শ্যুটিং দলের কর্মী ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার ছিল না রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। এতে হতাশ হন পাঁচিলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ধোনির ‘কাছের মানুষ’ বা ‘ছোটবেলার খেলার সঙ্গী’রা।
গত দু’দিন ওই ছবির শ্যুটিং হয়েছে রাঁচির শ্যামলী ডিএভি জওহর বিদ্যামন্দিরেও। ওই স্কুলেই পড়তেন ধোনি। রাঁচির ডোরান্ডার বাসিন্দা শান্তা মুখোপাধ্যায়ও এ দিন এসেছিলেন ধোনি-রূপী সুশান্তকে দেখতে। সবাইকে তিনি বলছিলেনস, ‘‘আরে, আমি তো ধোনির বাবাকেও ভাল করে চিনি। আগে প্রাতর্ভ্রমণে প্রতি দিন দেখা হত। ছেলেকে নিয়ে অনেক মজার কথা বলতেন। সে সব কথা নির্দেশক জানলে তো সিনেমা হিট।’’
তবে এত কিছুর মধ্যে অবশ্য বিরক্ত এক দর্শনার্থীর কটাক্ষ, ‘‘মাঠ থেকে ক্যামেরাটা বাইরের ভিড়ে নিয়ে এলে অন্য একটা সিনেমা তৈরি হয়ে যাবে। সেটাই হবে সুপারিহিট!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy