শুটিংয়ের ব্রেকে পল্লবী।— নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকেই অভিনয় করতে চেয়েছিলেন?
না। অভিনেত্রী হওয়ার কথা ভাবিনি। আসলে আমার জীবনটা আর চার-পাঁচটা মেয়ের মতো নয়।
কেন?
অনেক ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছি আমি। ক্লাস টু-থ্রিতে যখন পড়ি তখন ব্রেন টিউমারে মা মারা যান। আর ক্লাস টেনে পড়ার সময় আইসিএসসি পরীক্ষার আগের দিন বাবা মারা যান। এমনও সময় গিয়েছে, আমি পরীক্ষা দিয়ে এসেছি, তার পর বাবাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে জন্য ছোটবেলায় যে ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডে বাস করতাম এমন নয়। হঠাত্ করে সুযোগ এল, করলাম।
আপনাকে এখন দর্শক যে ভাবে চেনেন, অর্থাত্ আপনার চরিত্র ‘জবা’। সেই মেয়েটিও বাবা-মাকে হারিয়েছে।
ঠিকই। সে জন্যই জবার সঙ্গে ভীষণ ভাবে রিলেট করতে পারি আমি। জবা একজনের বাড়িতে আশ্রিত। আমার ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই। স্ট্রাগল তো থাকেই।
পেশা হিসেবে অভিনয়কে বেছে নিয়েছেন বলে, বাড়িতে কোনও সমস্যা হয়েছিল?
না। আমার ফ্যামিলির সবাই খুব সাপোর্টিভ। আমি ইনডিপেনডেন্টও। ক’দিন আগেও আমাকে বাড়ি থেকে কেউ না কেউ শুটিংয়ে পৌঁছে দিয়ে যেতেন। কিন্তু বাবা-মায়ের ঘাটতি তো থেকেই যায়।
আরও পড়ুন, ‘তন্দ্রা’র কোন গোপন রহস্যের কথা ফাঁস করলেন ‘জবা’?
‘জবা’র ফিডব্যাক কেমন?
খুব ভাল। জানেন, একবার মেদিনীপুরে শো করতে গিয়েছি। আমি মাঝখান দিয়ে যাচ্ছি, দু’পাশে লোকে প্রণাম করে বলছে, জবাদির জয়। আমি ভাবি, এতটাও কি ডিজার্ভ করি? আমার ভালও লেগেছিল, খারাপও লেগেছিল। কঠিন একটা ফিলিংস। তবে এই প্রজেক্টে একটা ভয়ও ছিল আমার।
ভয়? কীসের?
‘কে আপন কে পর’-এ আমার কাজের মেয়ের চরিত্র। আমার ভয় ছিল, দর্শক কি আমাকে অ্যাকসেপ্ট করবেন? নাকি কাজের মেয়ে বলে পছন্দ করবেন না? কিন্তু আমি যা ভালবাসা পাই, তা বলে বোঝানো যাবে না। বাবা-মা জীবনে নেই বলেই হয়তো দর্শকের ভালবাসা দিয়ে ভগবান সেই অভাবটা পূরণ করে দিচ্ছে।
ডিগ্ল্যাম লুকের কারণেই কি ভয় পেয়েছিলেন?
না না। প্রথমে তো এখানে আমার প্রায় কোনও মেকআপই থাকত না। টোন ডাউন করা হত। পেতে চুল আঁচড়ানো হত। এখনও আমার যা বয়স তার থেকেও ম্যাচিওর দেখানো হয়। কিন্তু সেগুলো নিয়ে ভয় লাগেনি। কারণ আমি অভিনয়ে ফোকাস করতে চাই।
আপনি তো এখন কলেজে পড়ছেন?
হ্যাঁ। ভবানীপুর কো এডুকেশন সোসাইটি। সেকেন্ড ইয়ার, অ্যাকাউন্টস অনার্স।
পড়াশোনা আর অভিনয় ব্যালেন্স করেন কী ভাবে?
ব্যালেন্স করাটা খুব চাপের। কলেজ যাওয়াই হয় না প্রায়। কোচিং অ্যাটেন্ড করার চেষ্টা করি। আর পরীক্ষা দিই।
আর কলেজ প্রেম?
(মুচকি হেসে) কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই আমার।
আরও পড়ুন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক কম্প্রোমাইজ করতে হয়’
এটা তো পলিটিক্যালি কারেক্ট আনসার হল।
(হা হা হা…) না না। সত্যি বলছি। ‘কে আপন কে পর’-এর সব সিনে জবা থাকে। বাড়িতে মাত্র দু’তিন ঘণ্টা থাকতে পারি আমি। ফলে এই শিডিউলে কাজ করে প্রেম করাটা জাস্ট অসম্ভব বলে আমার মনে হয়।
সময়টা নিয়ে সমস্যা?
(হাসি) দেখুন, অনেকে আমাকে ভালবাসেন। কিন্তু আমি এখনও কোনও রিলেশনশিপে কমিটেড নই। যাকে বিয়ে করব, সেই মানুষটাকে এখনও খুঁজে পাইনি।
ইদানিং সিরিয়ালে কনটেন্ট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। আপনি জানেন?
(কিছুটা সিরিয়াস) হুম। এক হাজব্যান্ডের দুই বউ, বা উল্টোটা— এ সব তো?
হ্যাঁ। সে সব নিয়ে আপনি কী বলবেন?
দেখুন, আমাদের সিরিয়ালে রিলেশনশিপ নিয়ে কোনও ভেজাল নেই। এক হাজব্যান্ডের দুই বউ, বা উল্টোটা— এমন হয় না। এখন সাধারণত হিরোইন কেন্দ্রিক সিরিয়াল হয়, আমাদের সিরিয়ালে কিন্তু হিরোও অ্যাক্টিভ। আর নেগেটিভ হোক বা পজিটিভ— আলোচনা যখন হচ্ছে, তখন আমাদের মধ্যে কিছু তো মেটিরিয়াল রয়েছে। আমদের সেটাই সাকসেস। টিআরপি হাই মানে দর্শক দেখছে, আমরা তো ঘাড় ধরে বসে দেখাচ্ছি না। তাদের ভাল লাগছে, তাই দেখছে।
কখনও কনটেন্টের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে?
তা তো হবেই। কখনও কখনও গল্পের খাতিরে তো কম্প্রোমাইজ করতেই হয়। মেগার জন্য এটা করতেই হবে। যদি সবই রিয়ালিস্টিক হয়, তা হলে তো সেটা মেগা হতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy