Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Entertainment News

‘আমি কি তোমায় খুব...’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স। কম্পারেটিভ লিটারেচার। তবে তাঁর পরিচয় এখন ‘লক্ষ্মীটি’। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের আসন্ন ছবি ‘দৃষ্টিকোণ’-এর গান ‘লক্ষ্মীটি’। ওই গান, অর্থাত্ ‘আমি কি তোমায় খুব বিরক্ত করছি’ আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সৌজন্যে পালোমা মজুমদার। অনুপম রায়ের সুরে পালোমার গাওয়া গান এখন শহর কলকাতার অধিকাংশের রিংটোন। সেই পালোমা বৈশাখী বিকেলের আড্ডায় শেয়ার করলেন মনের কথা।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স। কম্পারেটিভ লিটারেচার। তবে তাঁর পরিচয় এখন ‘লক্ষ্মীটি’। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের আসন্ন ছবি ‘দৃষ্টিকোণ’-এর গান ‘লক্ষ্মীটি’। ওই গান, অর্থাত্ ‘আমি কি তোমায় খুব বিরক্ত করছি’ আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সৌজন্যে পালোমা মজুমদার।

পালোমা মজুমদার।— নিজস্ব চিত্র।

পালোমা মজুমদার।— নিজস্ব চিত্র।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ১২:২৯
Share: Save:

আমি কি তোমায় খুব বিরক্ত করছি?

পালোমা: (হা হা হা…) না, একদমই বিরক্ত করছেন না।

গানটা রিলিজ হওয়ার পর এই কথাটা কি শুনতে হচ্ছে?

পালোমা: (হাসি) হ্যাঁ। বন্ধুরা কথা শুরু করছে, ‘আমি কি তোমায় খুব বিরক্ত করছি’ বলে।

আর আপনি কাউকে বলছেন?

পালোমা: আমি নিজে এখন সতর্ক হয়ে গিয়েছি। এই লাইনটা বলার আগে নিজে দশ বার ভাবি। যাতে উল্টো দিকের লোকটা না ভাবে, কেন নিজের গান নিজেই আওড়াচ্ছি।

এত হিট হয়েছে গানটা, কেমন লাগছে?

পালোমা: আসলে এত লোক আমাকে রিচ করেছেন তাতে আমি ওভারহোয়েলমড। যে দিন গানটা রিলিজ করল তার পর দিন ফেসবুকে ৫০০টা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেয়েছিলাম। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ মেসেজ করেছেন। প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তুই এই গানটা গেয়েছিস? হিট।

আরও পড়ুন, ‘বোল্ড সিন নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই’

আর পরিচালক? কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়?

পালোমা: আমার এক বন্ধু সোহম এই ছবিতে অভিনেতা হিসেবে ডেবিউ করছে। ও প্রথমে বলেছিল, জানিস তো কৌশিকদার সঙ্গে দেখা হল, তোর গানটা শুনলাম। খুব প্রশংসা করছিল। এটা রিলিজ হওয়ার আগেই। আমি শুনে বলেছিলাম, আর কিছু শুনতে চাই না। পরে কৌশিকদার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়। আসলে বাকিরা বলে, বাহ, হিট হয়েছে গানটা। আর কৌশিকদা সব সময় বলে, এটা শুরু হল। দারুণ করেছ। আরও ভাল কাজ করতে হবে। এই টিমের সকলেই আমাকে খুব ওয়ার্ম ওয়েলকাম করেছে।

বাড়িতে কী রিঅ্যাকশন?

পালোমা: বাবা-মা খুব এক্সাইটেড। রিসেন্টলি মায়ের জন্মদিন ছিল। তার আগেই গানটা বেরিয়েছে। যাঁরা যাঁরা উইশ করতে ফোন করেছিলেন, শুরুতেই আগে গানটার কথা বলেছেন। আর বাবা তো গান করেন। ফলে খুব খুশি।

বাড়িতে গানের পরিবেশ ছিল তা হলে?

পালোমা: বাবা গান করেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার শুনে বড় হয়েছি। ঠাকুমা গান গাইত। অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত। ঠাকুমা তো আমাকে জোর করে গান শেখানোর চেষ্টা করেছে।


অনুপমের সঙ্গে পালোমা। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।

শিখেছেন?
পালোমা: না! কোনও দিন শিখিনি।

মানে, কারও কাছে না শিখেই গান করেন?

পালোমা: না। আমি কারও কাছে গান শিখিনি। গানটা শুরু কলেজ থেকে। ওই ধরুন, ২০১২। কিন্তু সিরিয়াসলি করতাম না। লাস্ট তিন বছর ধরে সিরিয়াসলি, প্রফেশনালি করছি। আসলে আমি ইংরেজি গান গাইতাম। গানটা হুজুগে হুজুগেই হয়ে গিয়েছে। বরং আমি নাচতাম। ওড়িশি শিখতাম। বিভিন্ন কোরিওগ্রাফারকে অ্যাসিস্ট করেছি। তখন নাচেই সব ফোকাস ছিল। আমি ভেবেছিলাম নাচ নিয়েই কিছু করব।

নাচ নিয়ে কেরিয়ার করতে গিয়ে গান নিয়ে হল?

পালোমা: কেরিয়ার নিয়ে আলাদা করে ভাবিনি। তবে নাচটা ছাড়ব না এটা ভাবতাম। আসলে পারফর্মিং আর্টিস্ট হিসেবে কিছু করব ভেবেছিলাম। তবে এখন গানের জন্য ট্রেনিং নিতে চাই।

আরও পড়ুন, ‘দেব বলেছিল, নাও ইউ হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইওরসেল্ফ’

‘দৃষ্টিকোণ’-এ গাওয়ার সুযোগ এল কী ভাবে?

পালোমা: আমি যখন ‘লক্ষ্মীটি’ রেকর্ড করেছি তখন জানতাম না এটা ‘দৃষ্টিকোণ’-এর গান। ইনফ্যাক্ট অনুপমদার সঙ্গেও আলাপ ছিল না।

অনুপম রায়ের সঙ্গে কী ভাবে আলাপ হল?

পালোমা: লাস্ট দু’বছর ধরে আমাদের একটা ব্যান্ড আছে। ‘পালোমা অ্যান্ড আদিল’। আমি গান লিখি। সে সূত্রেই বিভিন্ন মিউজিশিয়ানের সঙ্গে আলাপ আছে। নবারুণদা বলে এক জন অনুপমদার ব্যান্ডে বাজায়। নবারুণদাকে চিনতাম। ও হয়তো কখনও অনুপমদাকে শুনিয়েছিল আমার গান। তার পর অনুপমদা ফোন করে। বলে একটা গান পাঠাচ্ছি। শুনে দেখ। তোর গলায় কেমন লাগে দেখ।

আরও পড়ুন, ‘অনির্বাণ আর আমি ভাই-ভাই’

তার পর?

পালোমা: অনুপমদা ফোন করেছে, আমি তো ওভার দ্য টপ। দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। বাড়ির লোকেদের বলেছি তোমরা কেউ কথা বলো না। অনুপমদা ফোন করেছে। যে কোনও গানই হোক। এই যে অনুপমদা আমার গান শুনেছে। ফোন করেছে। আমাকে কনসিডার করেছে। এটাই আমার কাছে বিশাল ব্যাপার। আমি ভীষণ এক্সাইটেড হয়ে যাই। অনুপমদা একটা গান দিয়েছে, ভাল করে করতে হবে। তার পর ওঁর বাড়ি যাই। আলাপ হয়। গানটা রেকর্ড করি। তখন অনুপমদা বলে, তুই তো এর আগে কোনও সিনেমায় গাসনি। এটাই তোর ডেবিউ হবে। তবে এর আগে ‘অন্দরকাহিনি’ বলে একটা সিনেমায় গেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা রিলিজ করেনি।


অন্য মুডে।— নিজস্ব চিত্র।

রেকর্ডিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

পালোমা: আমি খুব নার্ভাস ছিলাম। বাংলা গাইতে অভ্যস্ত নই, ট্রেন্ড নই। কিন্তু অনুপমদার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি গানের সূত্রে। তার মানে আমার গানটা শুনবে। যা যা খারাপ হতে পারে, আমি ভেবে ফেলেছিলাম। বাট হি ইজ সাচ আ হাম্বল পার্সন। বলল, ট্রেন্ড নোস। এ ভাবে করতে পারিস। এ সব হয়েছিল রেকর্ডিংয়ের আগে। আর রেকর্ডিংয়ের পর ইটস লাইক আ ড্রিম। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম বিষয়টা খুব কঠিন হবে। কিন্তু খুব সহজে ভাল ভাবেই কাজটা হল। সেটার জন্য একমাত্র রেসপন্সেবল অনুপমদা।

আরও পড়ুন, অর্ডিনারি কিছু করতে চাইব না: স্বস্তিকা

আপনি তো এখন সেলিব্রিটি। সেলেবদের লভ লাইফ নিয়ে কিন্তু দর্শকের কৌতূহল থাকে।

পালোমা: হা হা…। আমি অলওয়েজ ওভার ওয়ার্কিং চাইল্ড ছিলাম। এখন ওভার ওয়ার্কিং অ্যাডাল্ট হয়েছি। ফলে আমার সময়ই নেই। প্রেম হয়েছে, তবে কেটেও গিয়েছে। আমার বন্ধুদেরও জিজ্ঞেস করুন। ওরাও বলব, পালোমার আমাদের জন্য টাইম আছে? এ রকম করলে প্রেম করা যায় থোড়ি?

ডেবিউতে হিট। এই সাফল্য ধরে রাখার ভয় হয়?

পালোমা: আসলে ভয়টা হিট হওয়ার আগেও ছিল। ভয় প্রত্যেক স্টেপে চেঞ্জ হতে থাকে। প্রথমে ভেবেছিলাম এত ওয়াইড অডিয়েন্স পাব না। এখন ভাবি, এটা চলে না যায়। লোকে বলছে, দারুণ ব্যাপার হয়েছে। তবে আমি এখানেই থামতে চাই না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE