‘কবীর’-এর লুকে দেব। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
কী এমন ছবি তৈরি করলেন, যা সেন্সর বোর্ড ‘এ’ সার্টিফিকেট দিল?
দেব: আমি তো ভাল ছবিই বানিয়েছি। কিন্তু সেন্সরের মনে হল এটা ‘এ’। আমার মনে হয়েছিল এটা সবার দেখার মতো ছবি। যাদের বয়স ১৫ প্লাস তাদের দেখার মতো ছবি। লেট অডিয়েন্স কাম অ্যান্ড জাজ। আমি এটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন করছি না। আমাদের ছবিটা রিলিজ করতে হবে। তার জন্য যদি কোনও সিন বা ডায়লগ কাটতে হয়, উই আর রেডি ফর দ্যাট। লেটস হোপ ফর দ্য বেস্ট।
দেবের প্রথম ‘অ্যাডাল্ট’ ছবি?
দেব: (সামান্য পজ) আই থিঙ্ক সো।
এটা কিন্তু আপনার অনুরাগীদের অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
দেব: আমি নিজেই এটা বিশ্বাস করতে পারিনি। দেখুন, কোথাও যদি আপত্তিজনক কিছু থাকে যেখানে আমি টেররিজমকে প্রোমোট করছি, তখন সেটাকে ‘এ’ দিন। আমিও সে ধরনের ছবিকে সাপোর্ট করি না। কিন্তু এই ছবিটা তেমন নয়। টেররিজম কেন হয়? আসলে আমাদের বেসিকটা ঠিক করা উচিত। সেটা নিয়েই এই ছবি। সত্যি কথা বলতে গেলে কেউ যদি ‘এ’ দেয়, তা হলে আমার কিছু করার নেই। জাস্ট ওয়েট ফর দ্য অডিয়েন্স টু জাজ দ্য ফিল্ম।
টেররিজম নিয়ে গল্প?
দেব: ‘কবীর’ বেসিক্যালি জেহাদির গল্প। আমার ক্যারেক্টার এক জন মুসলিমের। এখন যেমন বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই ভাবে, মুসলিম মানেই টেররিস্ট, আসলে যে সেটা ঠিক নয়, সেটাই দেখাতে চাইছি। আমাদের টিমে কোনও মুসলিম টেকনিশিয়ান থাকলে বিদেশে শুটিংয়ে গেলে তার ভিসা পেতে অনেক সমস্যা হয়। যখন ছবির গল্পটা এল, তখন এ সব গুলো আমার মাথায় চলছিল।
আরও পড়ুন, ‘পরিচালকের সঙ্গে নয়, সংসারটা একদম অন্য মানুষের সঙ্গে’
আপনার নেগেটিভ ক্যারেক্টার?
দেব: ইয়েস। আই অ্যাম প্লেয়িং নেগেটিভ ক্যারেক্টার। মোস্ট ওয়ান্টেড। জেহাদি। এটা কিন্তু অন্য কোনও নায়ক করবে না। প্রথমে আমিও ভেবেছিলাম করব না।
কেন?
দেব: নেগেটিভ ক্যারেক্টার। এমন আগে কখনও করিনি। তা ছাড়া আমি যেহেতু প্রোডিউসার, তাই অনেক দিক সামলাতে হয়েছে। এটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ওরিয়েন্টেড ফিল্ম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রেনে ৭০ শতাংশ শুট করেছি। দুরন্ত এক্সপ্রেসে শুটিং করেছিলাম। ট্রেন লেট করল কিনা, খাবার এল কিনা, জল উঠেছে কিনা— সবটা নিজে দেখেছি। যদি শুটিং শেষ করতে না পারতাম, আবার ট্রেন ভাড়া করে করার ক্ষমতা আমার ছিল না। যে ন্যাচারাল লাইটে শুট করেছি, কোনওভাবে সেট ভাড়া করে সেটা করতে পারতাম না। ফলে অনেক জিনিস মাথায় চলছিল। তাই ভেবেছিলাম, শুধু যদি প্রোডিউস করতাম, আমার এগজিকিউট করতে আরও সুবিধে হত। তার পর দেখলাম, আমি না করলে কেউ করবে না। তবে অনেক চ্যালেঞ্জিং রোল করেছি। এটা তার মধ্যে একটা। তার পরই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমিই করব।
‘কবীর’-এর দৃশ্যে দেব। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।
অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম ছবি। রিলিজের আগেই আরও দু’টো ছবির অ্যানাউন্সমেন্ট করে ফেললেন। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক রকম কথা হচ্ছে কিন্তু…
দেব: (একটু বিরক্ত) আমি ভেঙ্কটেশের সঙ্গে, কমলদার সঙ্গে ব্যাক টু ব্যাক ছবি করেছি। একটা সময় রাজীব বিশ্বাসের সঙ্গে পর পর ছবি ছিল। এটা তো টিমওয়ার্ক। দু’জন মানুষের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং। সৃজিত, অরিন্দমদা, বিরসা ভেঙ্কটেশের সঙ্গেই কাজ করে। একই ব্যানারে সবাই তো কাজ করছে। দেখুন, অনিকেতদার ওপর অ্যাজ আ প্রোডিউসার আমার ফুল ফেথ রয়েছে। তিনটে তিন রকমের গল্প। আমার তিনটেই ভাল লেগেছে। পরের ছবিগুলোতে অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর আমি নেই। ‘সুভাষিনী’তে নেই। আর ‘হইচই’ তো আমার ফর্মাটের ছবি। তাও আমি একা নেই। আরও চারজন হিরো আছে। বরং অন্য একটা ইস্যু নিয়ে কথা হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন, ‘টলিউডের কোন ক্যাম্পে কী ক্যাম্পেনিং করতে হয় সেটাই বুঝি না’
কোন ইস্যু?
দেব: দেব কী ভাবে এমন ছবি প্রোডিউস করতে পারল, এটা নিয়ে কথা হওয়া উচিত। আরও বড় বড় প্রোডিউসাররা আছেন, কিন্তু দেবই কেন ‘ককপিট’ বানাল? দেব কেন সুভাষিণীকে তুলে নিয়ে এল? ‘হইচই’ লঞ্চ করলাম ভিডিও দিয়ে। সমস্ত কাস্ট নিয়ে। পুজোতে আসবে ছবিটা। শুটিং শুরু হয়নি। সাবজেক্ট লকড, কাস্টিং লকড। আগে কখনও হয়েছে? আমাকে বড় বড় হাউজ থেকে মেসেজ করেছে, তারা মার্কেটিং টিমকে বকাবকি করছে। দেব কী ভাবে এটা করে ফেলল, প্রশ্ন তাদের। মুম্বই থেকে ফোন এসেছিল, কী ভাবে করলে এটা? কে করেছে?
‘হইচই’-এর কাস্টে রুক্মিণী নেই, কিন্তু ভিডিওতে তিনি আছেন। এটা কেন?
দেব: (হাসি) দ্যাটস দ্য ইউএসপি। আমি চাই না, অডিয়েন্স আমার কোনও কাজ দেখুক আর ভুলে যাক। সেটা নিয়ে পরেও ভাবুক আমি চাই। যেমন এই ভিডিওটা। দেখলেন, একটা প্রশ্ন উঠল আর সেটা মাথায় রয়ে গেল। হোয়াই রুক্মিণী? ওটাই তো মার্কেটিং। আমার তো মনে হয় গত এক বছরে আমি যা পদক্ষেপ করেছি সেটা সিনেমা, মার্কেটিং, প্রোমোশন যেটাই হোক— তাতে বাংলা ছবির উন্নতি হয়েছে এবং হচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং কতটা চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। এই এক বছরে ইন্ডাস্ট্রিতে যে বিপ্লব এসেছে, তাতে দেব এন্টারটেনমেন্টকে অস্বীকার করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন, ‘হয়তো রাজনীতির শিকার হয়েছি কোথাও...’
প্রোডিউসার দেবকে কি নায়ক দেবের তুলনায় বেশি চাইছেন দর্শক?
দেব: হা হা…। সুযোগ দিন আমাকে। সময় দিন। প্রচুর প্ল্যান আছে। এক বছরে প্রোডিউসার দেবের তিনটে ছবি রিলিজ। দুটো ছবি ফ্লোরে। যে ছবিগুলো আমাকে টাচ করেছে আমি সেগুলোই করছি। কখনও সেটা ভাল করবে, কখনও করবে না। পৃথিবীতে কারও সাকসেসই তো হান্ড্রেড পার্সেন্ট নয়। আসলে যাই করি না কেন, ফর্ম্যাটটা নতুন রাখার চেষ্টা করছি। যেন দেখে লোকে বলে, ওয়াও! এটা তো দেখিনি। এ রকম বাংলা ছবি হতে পারে?
‘কবীর’-এ দেব এবং রুক্মিণী। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে।
সাফল্যের পাশাপাশি সমালোচনাও তো হয়।
দেব: দেখুন, সমালোচনা শোনার সময় নেই আমার। যে কোনও দিন আমায় হেল্প করেনি, তার কথা শুনতে যাব কেন? যখন দরকার তুমি নেই, আর জ্ঞান দেওয়ার জন্য চলে আসবে। তুমি কে? আমার কাছে তুমি ইমপর্ট্যান্টই নও। ইউ ডোন্ট একসিস্ট ফর মি। আর আমি সেলফ চেক করি। অ্যাম আই অন দ্য রাইট ট্র্যাক? অ্যাম আই গেটিং ওভার কনফিডেন্ট? আমাকে এখনই কত লোকে ফোন করে জানতে চাইছে, ‘কবীর’-এর প্রিমিয়ার কবে?
আরও পড়ুন, পুরনো প্রেম থেকে কী শিখলেন ইমন?
কিন্তু আপনি তো প্রিমিয়ার করতে পছন্দ করেন না?
দেব: না। এ বারও সেই ট্রেন্ড ফলো করব। আমার কথা হল, পয়সা দিয়ে সিনেমা দেখো, তার পর ক্রিটিসাইজ করো। আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু প্রিমিয়ারে বিনা পয়সায় ছবি দেখে সমালোচনা করাটা পছন্দ নয়। আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপারটা এখন এত বেশি পার্সোনালাইজ হয়ে গিয়েছে। তুমি আমার গ্রুপে নেই, তোমাকে খারাপ বলতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy