অনিন্দিতা বসু।
প্রোডাকশন ডিজাইনার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হলেন অভিনেত্রী। তিনি অনিন্দিতা বসু। মুম্বইয়ে জন্ম, বড় হওয়া। তবে প্রায় আট বছর ধরে কলকাতাতেই ঘাঁটি গেড়েছেন। সিরিয়াল হোক বা সিনেমা— দুই মাধ্যমেই চুটিয়ে কাজ করছেন। সদ্য সিভিতে যোগ হয়েছে ওয়েব সিরিজও। কেরিয়ার তো বটেই, চর্চায় রয়েছে তাঁর ব্যক্তি জীবনও। মুখোমুখি আড্ডায় মন খুললেন তিনি।
কনগ্র্যাচুলেশন।
অনিন্দিতা: থ্যাঙ্কস। বাট হোয়াই?
অনস্ক্রিন ‘গুটি’ এ বার অফস্ক্রিন প্রজাপতি হবে তো…
অনিন্দিতা: হা হা হা… প্রজাপতি হবে কিনা জানি না। তবে নাও ‘গুটি’ ইজ ভেরি হ্যাপি।
ফর ‘মল্লার’?
অনিন্দিতা: অফকোর্স। আর এটা এখন অনেকেই জানেন, লাস্ট পাঁচ মাস ধরে আমি আর সৌরভ (দাস) লিভ ইন করছি।
বিয়েটা কবে?
অনিন্দিতা: এই রে। এই প্রশ্নটাই একটা মেন্টাল প্রেশার হয়ে যায়।
অনিন্দিতা ও সৌরভ। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
কেন?
অনিন্দিতা: আমার দু’টো বিয়ে আর দু’টো ডিভোর্সের এক্সপিরিয়েন্স থেকে এটাই শিখেছি বলতে পারেন। জীবনে বেশি তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। যখন গৌরবের (অনিন্দিতার প্রথম স্বামী) সঙ্গে বেশ কিছুদিন ডেটিং করছি, এই প্রশ্নটাই বারবার করা হত। আবার যখন অভিমন্যু (অনিন্দিতার দ্বিতীয় স্বামী) ছিল আমার জীবনে, অনেকের প্রশ্ন ছিল, এটা টাইমপাস, নাকি বিয়েও হবে? ফলে এ বার আর কোনওভাবেই আমি তাড়াহুড়ো করতে চাই না। বিয়ে নিয়ে এখনই ভাবছি না। আমরা যে এক সঙ্গে আছি সেটাই এনজয় করতে চাই। সেটা সেলিব্রেট করছি। এখনই সেটল করতে হবে ভাবছি না।
আপনি জানেন, আপনার এই বিয়ে আর ডিভোর্স নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন?
অনিন্দিতা: জানি। অনেকে অনেক কথা বলবে। সবাই ভাবে আমি খারাপ, কারণ আমি ডিভোর্স করেছি। কিন্তু যে যা ইচ্ছে ভাবুক। আমি জানি, আসলে কী ঘটেছে। সেটা আমি শেয়ার করতেও চাই না। যখন আমি আর সৌরভ মনে করব, এটাই বিয়ে করার ঠিক সময়, তখন বিয়ে করব। বাইরের লোকের কথা আর শুনতে চাই না।
এই যে পাঁচ মাস লিভ ইন করছেন। সৌরভের কোনও অভ্যাস চেঞ্জ করতে ইচ্ছে করে?
অনিন্দিতা: সৌরভ প্রচন্ড লেজি। সেটা যদি…। কিন্তু আমিই ওকে স্পয়েল করেছি। ফলে ওর সেই এক্সপেকটেশনটা তৈরি হয়ে গিয়েছে। (একটু ভেবে) না! চেঞ্জের দরকার নেই। ওকে প্যাম্পার করতে ভালই লাগে।
আরও পড়ুন, সিভি’তে এত কম ছবি কেন? অফার পান না?
প্রোডাকশন ডিজাইনার হতে চেয়েছিলেন, হলেন অভিনেত্রী। জার্নিটা কেমন?
অনিন্দিতা: ঠিকই বলেছেন। ২০০৮-এ মুম্বইতে পেন্টিং আর সেরামিক নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেছি আমি। প্রোডাকশন ডিজাইন করতেই কলকাতায় এসেছিলাম। তখনই অডিশন দেওয়ার অফার দেন ইন্ডাস্ট্রির একজন। ইট ওয়াজ আ লুক টেস্ট। সামনে বসেছিলেন কাঁচা পাকা চুলের একজন মানুষ। শেষ হওয়ার পর বলেছিলেন সিলেক্টেড। দ্য ম্যান ওয়াজ রবি ওঝা।
তার পরই বদলে গেল জীবন?
অনিন্দিতা: একদম। ‘বউ কথা কও’ করলাম। তার দু’এক বছর কলকাতায় কাটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। সব কিছু প্ল্যান হয়ে গিয়েছিল। তারপর হঠাত্ ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রোডাকশন হাউস থেকে ডাক পেলাম। ‘গানের ওপারে’। আমি সেই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি। ওখান থেকে অনেক পরিচিতি পাই। তারপর এক এক করে আরও অফার আসতে শুরু করে।
টেলিভিশন এবং ফিল্ম, দু’টো মাধ্যমেই কাজ করেছেন। কোনটায় বেশি কমর্ফটেবল?
অনিন্দিতা: দেখুন, ক্রিয়েটিভ স্যাটিসফ্যাকশনটা ফিল্ম থেকেই আসে। অল্প দিনের কাজ। আর সিরিয়াল অনেক দিন ধরে চলে। আমি সিরিয়াল থেকেই শুরু করেছি। তাই বুঝতে সুবিধে হয়। আর ফিল্ম-এ এক এক জন পরিচালকের কাজের ধরন এক এক রকম। তাই কখনও কখনও বুঝতে অসুবিধে হয়।
একই সঙ্গে দু’টো মাধ্যমে পছন্দের দু’টো চরিত্র পেলে, কোনটায় রাজি হবেন?
অনিন্দিতা: (হেসে, আমাকে আর কেউ সিরিয়ালে নেবে না) ফিল্মেই রাজি হব।
নিজের আঁকা ছবির সামনে অনিন্দিতা।
কাস্টিং কাউচ শব্দটা ইন্ডাস্ট্রিতে খুব শোনা যায়। আপনি ফেস করেছেন?
অনিন্দিতা: না! আমি সব সময়ই প্রটেক্টেড ছিলাম। ইন্ডাস্ট্রির অনেককেই আমি চিনতাম, অনেকে আমার মাকে চিনত। বাট ইট মাস্ট বি দেয়ার। এখানে অনেক বাচ্চা মেয়েদের কাছ থেকে অনেক কিছু শুনি, খুব কষ্ট হয়। কত প্রস্তাব ওদের পেতে হয়েছে, শুনে খারাপ লাগে। বিশ্বাস করতে চাই যে ট্যালেন্ট দিয়ে কাজ পাওয়া যায়। তবে এন্ড অফ দ্য ডে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সেটা হয় না। ট্যালেন্টকে অতটাও গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অনেক কিছু কম্প্রোমাইজ করতে হয়।
ছবি ও ভিডিও: মৃণালকান্তি হালদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy