টম অল্টার। —ফাইল চিত্র।
পর্দা থেকে মঞ্চ থেকে টেলিভিশন, সর্বত্র অনায়াস পদচারণা তাঁর। ইংরেজি, হিন্দি এবং উর্দু, একসঙ্গে তিনটি ভাষার উপরে দখল ঈর্ষণীয়। পর্দায় শ্বেতাঙ্গ চরিত্র হলে তো ডাক পাবেনই।
অথচ সেই মানুষটাই মির্জা গালিবের চরিত্রে উজাড় করে দেন নিজেকে মঞ্চের উপরে।
একই সঙ্গে জনপ্রিয়তা এবং সম্ভ্রম আদায় করে নেওয়া এই চরিত্রাভিনেতা টম অল্টার শুক্রবার রাতে মারা গেলেন। ক্যানসারে ভুগছিলেন। বয়স হয়েছিল ৬৭। শনিবার তাঁরই শেষ ইচ্ছা মেনে ওরলি শ্মশানে টমের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মার্কিন বংশোদ্ভূত মিশনারি বাবা-মায়ের ছেলে টমের জন্ম মুসৌরিতে। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু রাজেশ-শর্মিলার ‘আরাধনা’ ছবিটা দেখা ইস্তক অভিনয়ের নেশা পেয়ে বসল। টম যোগ দিলেন পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। সোনার মেডেল নিয়ে পাশ করে দু’বছর পর প্রথম ছবি ‘চরস’। তার পরে একে একে সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’, শ্যাম বেনেগালের ‘জুনুন’, মনোজ কুমারের ‘ক্রান্তি’, রাজ কপূরের ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’, রিচার্ড অ্যাটেনবরোর ‘গাঁধী’..। অজস্র ছবি আর টেলিভিশনের জনপ্রিয় সব ধারাবাহিকে টম ছিলেন নিয়মিত মুখ। ‘জুনুন’ বা ‘জবান সমহালকে’–র কথা এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে।
আবার এই টমই, নাসিরুদ্দিন শাহ আর বেঞ্জামিন গিলানির সঙ্গে তাঁদের নাটকের দল মোটলি প্রো়ডাকশন-এর সঙ্গে ছিলেন একেবারে গোড়া থেকে। আড়াই ঘণ্টার উর্দু নাটক ‘মৌলানা’তে অভিনয় করতেন একা। বাবর কে অওলাদ, লাল কিলা কে আখরি মুশায়েরা, গালিব কে খত, তিসবি শতাব্দী...টমের একাধিক মঞ্চাভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শককে। নিজেকে ভারতীয় নাগরিক নয়, ভারতীয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবেননি কোনও দিন। ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহ ছিল প্রচুর। কাজ করেছেন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবেও। টেলিভিশনে সচিন তেন্ডুলকরের প্রথম সাক্ষাৎকার কিন্তু টমেরই নেওয়া। সচিন নিজেও এ দিন টুইট করেছেন সেই স্মৃতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy