‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ ছবির এই দৃশ্যের মতোই কি দেখা গিয়েছিল নবদম্পতিকে? জল্পনায় ভক্তকুল।—ফাইল চিত্র।
রূপকথার বিয়ে তা হলে আর দেখা হল না!
সে সুযোগই যে দিলেন না তাঁরা। ফ্ল্যাশের ঝলকানি আর কৌতূহলী নজর এড়িয়ে ফ্রান্সের প্রাসাদে গত শনিবারই বিয়ে সেরেছেন ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। কিন্তু নিমন্ত্রিত ছিল হাতেগোনা। বাকি দুনিয়াকে বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্রাত্যই রেখেছিলেন ব্র্যাঞ্জেলিনা। বৃহস্পতিবার শুধু বিয়ের খবরটুকু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন জোলির মুখপাত্র। কিন্তু তাতে কি আশ মেটে? ন’বছর ধরে যাঁদের প্রতি মুহূর্তের খবর জানতে মুখিয়ে থেকেছে গোটা বিশ্ব, তাঁদের বিয়েতেই এত আড়াল?
আড়ালটা অবশ্য গোড়া থেকেই রাখতে চেয়েছিলেন ব্র্যাঞ্জেলিনা। ২০০৫ সালে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ মুক্তি পাওয়ার সময় থেকে এই তারকা-দম্পতির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু কেউই তা মানেননি। জেনিফার অ্যানিস্টনের সঙ্গে তখনও বিয়ে ভাঙেনি ব্র্যাডের। এক জন বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে পড়লেন অ্যাঞ্জেলিনা, এ নিয়েও সে সময় বিস্তর মুখরোচক খবর ছড়িয়েছিল। অ্যাঞ্জেলিনা বিবৃতি দেন, “আমার বাবা আমার মা-কে যে ভাবে ঠকিয়েছিল, তা ভুলতে পারিনি। যদি কোনও বিবাহিত পুরুষের প্রেমে পড়তাম, তা হলে পর দিন মুখ দেখতে পারতাম না।” কিন্তু কী আশ্চর্য! সে সময়ই একাধিক বার দু’জনকে ফ্রেমবন্দি করেছিল পাপারাৎজি। অতঃপর ব্র্যাডের বিবাহবিচ্ছেদ ও অ্যাঞ্জেলিনার সঙ্গে ‘লিভ-ইন’ শুরু। ঠিক যেন হলিউড ছবির চিত্রনাট্য।
কিন্তু বিয়ে কবে? এ প্রশ্ন ন’বছরে বহু বার শুনেছেন ব্র্যাঞ্জেলিনা। ছয় সন্তান নিয়ে ভরপুর সংসার। তার মাঝেই কাজ, ছুটি কাটানো, সমাজসেবা এমনকী অ্যাঞ্জেলিনার ‘ডাবল ম্যাসটেকটমির’ মতো সিদ্ধান্ত। সবই তো হল। তা হলে কি বিয়ে করবেন না তাঁরা? সমকামী-বিবাহের সক্রিয় সমর্থক ব্র্যাড এক বার জবাব দেন, “যে দিন আমেরিকার প্রতিটি মানুষ নিজের পছন্দে বিয়ে করতে পারবেন, সে দিন আমরাও বিয়ে করব।” অদ্ভুত উত্তর। জল্পনা করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সংবাদমাধ্যমকে।
ইতিমধ্যে কানাঘুষো ছড়ায়, ব্র্যাড-অ্যাঞ্জেলিনার ছাড়াছাড়ি হতে চলেছে। কিন্তু দু’জনেই তা উড়িয়ে দেন। কিছু দিনের মধ্যেই আবার বিয়ের খবরও ছড়াতে শুরু করে। স্বয়ং ব্র্যাড জানিয়েছিলেন, সন্তানদের কথা মাথায় রেখে বিয়ের কথা ভাবছেন তাঁরা। মাঝখানে শাটু মিরাভালে বাগ্দানও সেরে ফেলেন। কিন্তু তা-ও গোপনে।
ভক্তদের অবশ্য আশা ছিল, বিয়েটা গোপনে করবেন না হলিউডের ‘ফার্স্ট-কাপল’। তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্মের সময়ও আড়াল রেখেছিলেন দু’জনে। তীব্র মাতামাতি সত্ত্বেও সরেনি গোপনীয়তার প্রাচীর। এ বারও তাই জোলির মুখপাত্র জানান, শনিবারের অনুষ্ঠানে খুব ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের লোকজনই হাজির ছিলেন। ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক বিচারক। নব-দম্পতির হাতে ‘রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট’ তুলে দিতে তাঁকে ফ্রান্সে উড়িয়ে আনেন ব্র্যাঞ্জেলিনা। শুধু আইনি বিয়ে নয়, খ্রিস্টধর্মের প্রথা মেনেও বিয়ে করেন তাঁরা। বড় দুই ছেলে ম্যাডক্স ও প্যাক্স যাজকের সামনে পৌঁছে দেয় অ্যাঞ্জেলিনাকে। দুই মেয়ে জাহারা ও ভিভিয়েনের উপর দায়িত্ব ছিল ফুল ছড়ানোর। আংটি বদলের সরঞ্জাম নিয়ে হাজির ছিল মেয়ে শিলোহ ও ছেলে নক্স।
আক্ষেপ শুধু একটাই। ৫০ বছরের সুপুরুষ বর আর ৩৯ বছরের লাস্যময়ী কনের বিয়ের ছবিটা ধরা পড়ল না কোনও ক্যামেরাতেই। জানা গেল না কেমন দেখতে লাগছিল রূপকথার বর-কনেকে। ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’-এ এমনই রহস্যের খাসমহল গড়েন দু’জনে। বাস্তবেও সেই ধারা বজায় রাখলেন ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস পিট।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy