পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চাঁদ।
পূর্ণ চন্দ্রিমা ছিল। অপার জোৎস্নালোক ছিল। তার মাঝেই খুব কাছে চলে এসেছিল চাঁদ। কিন্তু ভারতবাসীর পৃথিবী এখন বেশ গদ্যময়। ক্ষুধার রাজ্য, ক্ষুধার দেশ, মুদ্রার ক্ষুধায় খানিক হাহাকারই যেন। তাই প্রায় সাতটা দশক পেরিয়ে পূর্ণশশী ধরিত্রীর এত কাছে আসা সত্ত্বেও মহাচন্দ্রের অনুভূতি জাগল না সম্ভবত। রূপক-চোখে ঝলসানো রুটির চেহারাটাই ধরা পড়ল বরং।
মহাজাগতিক ঘটনাপ্রবাহের অসীম আয়োজনে পূর্ণশুক্ল রাতে পৃথিবী আর চন্দ্রের এই ঘনিষ্ঠ আলাপ কোনও অভূতপূর্ব দৃশ্য নয়। ঘন ঘন এ দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া যায় না, তাই কিছুটা বিরল বটে। কিন্তু তার চেয়েও বিরল এবং যুগপৎ অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সাক্ষী এখন ভারত। মুদ্রা সঙ্কটে উথাল-পাথাল গোটা দেশ। তাই বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যকে ছাপিয়ে গেল বিরলতর জাগতিক সঙ্কটের প্রাবল্য।
মুদ্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে মত-পাল্টা মতের ঝড় এখন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সমর্থনে যেমন সরব কোটি কণ্ঠস্বর, বিরোধী রাজনীতির তরফ থেকে ধেয়ে আসা প্রবল সমালোচনাও তেমনই বাস্তব। ফল কী হতে চলেছে, তা ক্রমশ স্পষ্ট হবে। কিন্তু গত কয়েক দিনের হয়রানির ছবিটা বলছে, প্রস্তুতি আর পরিকল্পনার প্রশ্নে আরও একটু যত্নবান হওয়া জরুরি ছিল।
মহাচন্দ্রকে ঝলসানো রুটির মতো লাগল বলে আফসোস নেই। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধারের তাড়নাটা ততই বেশি অনুভূত হচ্ছে। পরবর্তী পূর্ণিমায় চাঁদ এত কাছে থাকবে না ঠিকই। কিন্তু আশা রাখছি, সে রাতে অপার জ্যোৎস্নালোকের অনুভূতিটা ম্লান লাগবে না। বিশ্বাস রাখছি, সে রাতে কল্প-দৃষ্টিকে চাঁদের চেহারার মধ্যে উজ্জ্বল মুদ্রার অবয়ব খোঁজার চেষ্টা করতে হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy