Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Wimbledon

লন্ডন ডায়েরি: ১০০ বছরে পড়ল উইম্বলডন সেন্টার কোর্ট

প্রথম উইম্বলডন হয়েছিল ১৮৭৭-এ। ১৯২২-এ ক্লাবটি যখন এখনকার চার্চ রোডে স্থানান্তরিত হয়, তখন দুটো কোর্ট জুড়ে সেন্টার কোর্টটি তৈরি হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২২ ০৫:২৯
Share: Save:

দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত টেনিস কোর্টটি অবস্থিত। বিখ্যাত তার সতেজ সবুজ ঘাস আর খেলোয়াড়দের সাদা পোশাক পরার কড়া নিয়ম। উইম্বলডনের সেন্টার কোর্ট ১০০ বছরে পড়ল। সেই উপলক্ষে উইম্বলডন ইতিহাসের নক্ষত্ররা কোর্টে এক সঙ্গে দাঁড়ালেন, জনতার হর্ষধ্বনির মধ্যে গান শোনালেন ক্লিফ রিচার্ড। কিংবদন্তিদের সারিতে ছিলেন বিলি জিন কিং, বিয়র্ন বর্গ, ক্রিস এভার্ট, প্যাট ক্যাশ। নোভাক জোকোভিচ, রজার ফেডেরার, অ্যান্ডি মারে প্রমুখ বর্তমানরাও ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আলাপ করালেন টিভি উপস্থাপক সু বার্কার ও প্রাক্তন তারকা জন ম্যাকেনরো। ন’টা সিঙ্গলস খেতাবের রেকর্ডধারী, উইম্বলডনের রানি মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা কোভিড পজ়িটিভ হওয়ায় চলে গিয়েছেন। অনুষ্ঠানের এক দিন আগেও তাঁর অতিথি জে কে রোওলিং-এর সঙ্গে তাঁকে রয়্যাল বক্সে দেখা গিয়েছে।

প্রথম উইম্বলডন হয়েছিল ১৮৭৭-এ। ১৯২২-এ ক্লাবটি যখন এখনকার চার্চ রোডে স্থানান্তরিত হয়, তখন দুটো কোর্ট জুড়ে সেন্টার কোর্টটি তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪০-এ সেন্টার কোর্টে পাঁচটা ২৫০ কিলোগ্রামের বোমা পড়ে, ১২০০ আসন ধ্বংস হয়। যুদ্ধ শেষে ১৯৪৬-এ খেলা শুরু হয়, কিন্তু কোর্ট মেরামতি সম্পূর্ণ হতে ১৯৪৯ পর্যন্ত লেগেছিল। খোলা-বন্ধ করা যায়, এমন ছাদ তৈরি শেষ হয় ২০০৯-এ, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা বেড়ে হয় ১৫০০০। ছাদ বন্ধ থাকলে, উইম্বলডনের ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ থােক। তাই সূর্য উঠে গেলেও কোনও কোনও খেলা চলে ইন্ডোরেই, এসি-র মধ্যে। আজ সেই কোর্টেই পুরুষদের ফাইনাল ম্যাচ।

ঐতিহাসিক: ১৯২২-এ সেন্টার কোর্টে মহিলাদের সিঙ্গলসে খেলছেন সুজ়ান লেংলেন

ঐতিহাসিক: ১৯২২-এ সেন্টার কোর্টে মহিলাদের সিঙ্গলসে খেলছেন সুজ়ান লেংলেন

জোকোভিচের ধ্যান

এক দল বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নোভাক জোকোভিচের প্রতিটি ম্যাচ দেখছেন, প্রার্থনা করছেন। উইম্বলডন কোর্ট থেকে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই বুদ্ধপাদীপা মন্দির। বহু বছর ধরেই জোকোভিচ সেখানে নিয়মিত দর্শনার্থী। অতিমারির আগে প্রতিযোগিতা চলাকালীন ম্যাচের ফাঁকে এখানে এসে ধ্যান করতেন। সন্ন্যাসীদের মতে, এই বারে বারে মন্দিরে আসাতেই তাঁর সাফল্য লুকিয়ে। উইম্বলডন মরসুমে জোকোভিচ মন্দিরের কাছাকাছিই থাকেন, বহু বছর ধরেই এখানে আসছেন। তিনি অবশ্য মন্দিরের ক্লাসগুলি করেন না, নিজের মতো ধ্যান করেন। পার্কে, লেকের কাছে সময় কাটান। সকালে যখন লোকজন অল্প, তখন ধ্যান করেন। জোকার বৌদ্ধ নন, তা নিয়ে সন্ন্যাসীদের চিন্তা নেই। তিনি তাঁদের বলেছেন, ধ্যান করলে টেনিস খেলতে সুবিধা হয়। মানসিক মানোন্নয়ন হয়, মনঃসংযোগ মজবুত হয়, ফুরফুরে লাগে, শান্তি থাকে।

দৈত্যাকৃতি ওয়াটারলিলি

গ্রহের বৃহত্তম ওয়াটারলিলি ফুটেছে কিউ গার্ডেনসে। ১৭৭ বছর ধরে সকলের অলক্ষ্যে সেটি বাগানের লতাপাতা সংগ্রহের মধ্যেই ছিল। ২০১৬-য় বলিভিয়া থেকে কিছু লিলি বীজ আসে, কিউ-তে অঙ্কুরোদ্গমের পরে জানা যায় এগুলি বাকি দু’প্রকার ওয়াটারলিলির চেয়ে বড়। বিজ্ঞানীরা তিন প্রকার লিলির ডিএনএ দেখে তৃতীয়টিকে আলাদা বলে চিহ্নিত করেন। উদ্যানবিদেরা বলেছেন, সকলের চোখের সামনেই লুকিয়ে ছিল এটি। এটি নাকি লক্ষ বছর ধরেই পৃথিবীতে আছে, ব্যাস ৩.২ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। দুটো সাদা ফুল ফোটে ৩০ সেন্টিমিটার জুড়ে, পর পর দু’রাত পাপড়ি মেলে শুধু। পাতায় ৮০ কিলো ওজন চাপানো যায়। আমাজ়ন অববাহিকায় ব্রিটিশ অভিযাত্রীদের আবিষ্কৃত দৈত্যাকৃতি উদ্ভিদগুলির রক্ষণে স্থাপিত কিউ গার্ডেনসের ওয়াটারলিলির বিশ্বখ্যাত ঘরটির ১৮৫২-য় উদ্বোধন হয়। দৈত্যাকৃতি ফুল হতেই উদ্ভিদবিদরা ছুটে গিয়ে রানি ভিক্টোরিয়াকে নজরানা দিয়েছিলেন। তাঁর নামেই সব ওয়াটারলিলির নাম। লোকে ভিড় করে এই উদ্ভিদ দেখত, অনায়াসে যার বিশাল পাতায় কোনও শিশুকে বসানো যেত।

বিস্ময়: কিউ-এর বিশাল ওয়াটারলিলি

বিস্ময়: কিউ-এর বিশাল ওয়াটারলিলি

আশি বছরেও শীর্ষাসন

ধ্যান, যোগে আস্থা রেখেছেন প্রাক্তন বিট্ল পল ম্যাকর্টনি। সম্প্রতি প্রায় তিন ঘণ্টা লাইভ অনুষ্ঠান করলেন। গানগুলি গাইতে দর্শকদেরও উৎসাহ দিচ্ছিলেন। পপতারকার বয়স ৮০ হল, অথচ উত্তুঙ্গ প্রাণশক্তির অনুষ্ঠান। তারকা তাঁর ফিটনেস ও দমের রহস্য জানিয়েছেন। বছর কুড়ি আগে ভারতীয় গুরু তাঁকে যোগ শিখিয়েছিলেন। এখনও রোজ ১২ মিনিটের যোগাভ্যাসের শেষে শীর্ষাসন করেন। চশমা ছাড়াই খবরের কাগজ পড়েন তিনি। ষাটের দশকে বিট্লস ব্যান্ড হৃষিকেশে এসেছিল, মহর্ষি মহেশ যোগীর থেকে তুরীয় ধ্যান শিখেছিল। তারকা এখনও ওই ধ্যান করেন, নিরামিষ খেয়ে স্বাস্থ্য ধরে রাখেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wimbledon London Diary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE