তছনছ: সিউড়িতে লুঠপাটের পরে সেই স্বর্ণ-বিপণি। —নিজস্ব চিত্র।
নিখুঁত পরিকল্পনায় দেওয়ালে সিঁধ কেটে চোরের দল ফাঁকা করে দিল কয়েক কোটির গয়না!
এ রাজ্যের প্রথম সারির অলঙ্কার প্রস্তুতকারক সংস্থার সিউড়ি শহরের বিপণিতে ওই ঘটনার তদন্তে এসে চুরি যাওয়া মালপত্রের হিসাব শুনে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশ কর্তাদেরও। এক পুলিশকর্মী তো বলেই ফেললেন, ‘‘শাটার ভেঙে কিংবা দেওয়ালে সিঁধ কেটে সোনার দোকানে চুরি যে হয় না, তা নয়। সিউড়িতেও হয়েছে। সে সবই লাখের ঘরে। তা বলে পাঁচ কোটি! ভাবিনি কোনও দিন এমন চুরির তদন্তে আসতে হবে।’’
পুলিশের হিসাবে, নিরাপত্তায় মোড়া গোটা বিপণির একমাত্র দুর্বলতা ছিল শৌচাগারের বাইরের দিকের পাঁচ ইঞ্চির দেওয়াল। সোমবার গভীর রাতে ওই দেওয়ালেই সিঁধ কেটে ভিতরে ঢুকে, গ্যাস কাটার দিয়ে বিপণির ভল্ট কেটে গয়না নিয়ে উধাও হয়ে যায় লুঠেরারা। খুলে নেয় বিপণির ভিতরে থাকা যাবতীয় সিসিটিভি ক্যামেরাও।
সিউড়ি শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটি বহুতলের দোতলায় থাকা ওই বিপণিতে এমন বিরাট চুরির হলেও কাকপক্ষীতেও টের পায়নি কিছু— এমনই পরিকল্পিত অপারেশন! ওই বহুতলে গত বছরই তাদের শাখা খুলেছে কলকাতার ওই সংস্থা। মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ অন্য দিনের মতো বিপণি খুলে সাফাই করতে ঢুকেছিলেন দুই কর্মী। ঢুকেই দেখেন দোকান তছনছ। মেঝেয় উল্টে গয়নার বাক্স। খবর পেয়ে ম্যানেজার দেবপ্রসাদ জানা এসে দেখেন, শৌচাগারের পূর্ব দিকের দেওয়ালে কমোডের উপরে দেড় ফুট বাই দেড় ফুটের সিঁধ কাটা। দোকানের ভিতরে সব সিসি ক্যামেরা খুলে রাখা।
ছুটে আসেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার নিজেই। আসেন সিউড়ি সদর-সহ আশপাশের সব ক’টি থানার ওসি আইসি ও অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, দুষ্কৃতীরা কাজে লাগিয়েছে বহুতলের গা ঘেঁষে থাকা একটি লজকে। যেখানে কিছুদিন ধরেই ডেরা করে ছিল তারা। দেবপ্রসাদ বলেন, ‘‘কত অলঙ্কার চুরি গিয়েছে, সেটা কর্পোরেট সেকশন এসে বলবে।’’ সংস্থার কলকাতার অফিস থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্তত পাঁচ কোটি টাকার উপরে সোনা ও হিরের গহনা চুরি হয়েছে। তবে স্টক মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। সংস্থায় এমন বড় মাপের চুরি এই প্রথম বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সতর্ক করা হয়েছে আশপাশের সব থানাকে। ফরেন্সিক দলের সাহায্য নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy