Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
কোমার সেই হনুমানকে ধরতে ব্যর্থ বনকর্মীরা

আঁচড়ে, কামড়ে পালাল পবননন্দন

যাকে বলে একেবারে আঁটঘাট বেঁধে নামা। ঠিক সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ওঁরা। আগে থেকেই তৈরি রাখা হয়েছিল খাঁচা। এ দিন বাড়তি হিসেবে ছিল ঘুমপাড়ানি বন্ধুকও।

হনু-কাণ্ড: সতর্ক পায়ে এগোচ্ছেন বনকর্মী। (ডান দিকে) বেহাল তবিয়তে তিনি। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

হনু-কাণ্ড: সতর্ক পায়ে এগোচ্ছেন বনকর্মী। (ডান দিকে) বেহাল তবিয়তে তিনি। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০২:২২
Share: Save:

যাকে বলে একেবারে আঁটঘাট বেঁধে নামা। ঠিক সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ওঁরা। আগে থেকেই তৈরি রাখা হয়েছিল খাঁচা। এ দিন বাড়তি হিসেবে ছিল ঘুমপাড়ানি বন্ধুকও। গুলি ছুড়ে কাবু করার জন্যে বহরমপুর থেকে আনা হয়েছিল দুই অভিজ্ঞ বনকর্মীকেও। কিন্তু শত আয়োজনেও ধরা দিল না পবননন্দন! উল্টে আঁচড়ে, কামড়ে জখম করলেন এক বনকর্মী ও এক গ্রামবাসীকে।

শুক্রবার দুপুরেই সিউড়ি ২ ব্লকের কোমা গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন বনকর্মীরা। হনুমানের গতিবিধি নজরে রাখতে আগেভাগেই সেখানে কয়েক জন বনকর্মী ছিলেন। কিন্তু, কোথায় সে হনুমান? দিন পনেরো কুড়ি ধরে সিউড়ির কোমা ও পাশের জানুরি গ্রামের বাসিন্দাদের তটস্থ করে রেখেছে এই পুরুষ হনুমানটি। অতর্কিতে আক্রমণে জখম হয়েছেন কমবেশি ২০ জন গ্রামবাসী। এলাকাবাসীর কথায়, পথচলতি লোকজনকে হঠাৎ কামড়ে আঁচড়ে, কিংবা তাড়া করে এলাকায় রীতিমতো সন্ত্রাস কায়েম করেছে সে। পরিস্থিতি এমন যে, হনুমানের উপদ্রপে কোমা উচ্চবিদ্যালয় ও পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা দিন দু’য়েক স্কুলে আসেনি।

এই পরিস্থিতিতে হনুমানটিকে ধরার দাবিতে বন দফতরের দ্বারস্থ হন গ্রামের মানুষ। বন দফতর খাঁচা পেতে অপেক্ষা করলেও হনুমান ধরা পড়েনি। বরং সোমবার পালিয়ে পাশের জানুরি গ্রামে গিয়েও সাত-আট জনকে জখম করে। শুক্রবার সকালে ফের কোমায় ফেরে হনুমান। তারপরেই এই অভিযান।

এ দিন বিকেলে দু’টি গাড়িতে কয়েকজন কোমা গ্রামে পৌঁছন। তারপরেই শুরু হয় খোঁজ খোঁজ। তা দেখতে জমে যায় ভিড়। কিন্তু, কোথাও হনুর দেখা না পেয়ে বনকর্মীরা নিজেদের ফোন নম্বর দিয়ে গ্রামবাসীকেই হনুমানের খোঁজ দিতে বলেন। একটু খোঁজাখুঁজির পরেই কাছের অন্নপূর্ণা মন্দিরে হনুর দেখা মেলে। কিন্তু, বনকর্মীদের নাগালে আসার আগেই সে লুকিয়ে পড়ে। কিছু পরে ফের দেখা যায় গ্রামের একটি খামারে। সেখানে একেবারে সামনা সামনি এসে গেলেও গুলি চালাতে পারেননি বনকর্মীরা। কেননা, সামনে থেকে গুলি চালানো আইনবিরুদ্ধ। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে।

এর মাঝে ফের পাততাড়ি গোটায় সে। তার মাঝে এক বনকর্মীকে আঁচড়ে, আর এক গ্রামবাসীকে কামড়ে দেয়। আহত বনকর্মীকে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ডিএফও কল্যাণ রাই বলছেন, ‘‘হনুমানটি যে ভাবে উপদ্রপ করছিল, তাতে হনুমানটিকে আর ছেড়ে রাখার ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছিল না।’’

তবে এখনই হাল ছাড়ছেন না বনকর্মীরা। ডিএফও জানিয়েছে, পবননন্দনের খোঁজ জারি রেখেছে দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

Monkey Suri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE