কী নাম তোমার? শুক্রবার ফরাক্কার নুরুল হাসান কলেজে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
ভোরের অন্ধকারে রাজভবন থেকে বেরিয়ে পাক্কা সাড়ে সাত ঘণ্টার সড়ক পথ ভেঙে ফরাক্কা কলেজের অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় জানিয়ে গেলেন, সড়ক পথে না এলে তিনি জানতেই পারতেন না এ রাজ্যে রাস্তা নড়াচড়া করে!
দীর্ঘ যাত্রাপথের অভিজ্ঞতায় তাঁর ‘শরীরের ক্লান্তি দূর’ হয়েছে বলে জানালেও, রাস্তার ‘নড়ন-চড়ন’ এবং ঝাঁকুনিতে ‘ক্লান্তি মোচন’-এর প্রসঙ্গ টেনে ফরাক্কার কলেজ মঞ্চ থেকেও তিনি জিইয়ে রাখলেন রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর চলমান মনোমালিন্য।
যা শুনে তৃণমূলের মহাসচিবের মতো দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি আবু তাহেরও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার পথের সিংহভাগই জাতীয় সড়ক, রাজ্যপালের সেই পথে কোনও অসুবিধা হয়নি, তাঁর কথায়, ‘‘এ জন্য গডকঢ়ীজিকে (নিতিন গডকঢ়ী, কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী) ধন্যবাদ। অসুবিধা হয়েছে, সাকুল্যে কয়েক কিলোমিটারের রাজ্য সড়কে।
শুধু সড়ক পথ নয়, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য করা ‘সমান্তরাল প্রশাসন’ থেকে সরকারের তরফে হেলিকপ্টার না দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলেও বিঁধতে কসুর করেননি রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি, তাঁর দীর্ঘ ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারের স্তুতিতেও কোনও রাশ টানেনি তিনি।
যার জেরে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভের আঁচ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘উদ্ধার’ করতে গিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যে যে বিরোধিতা শুরু হয়েছিল, রাজ্যের সঙ্গে সেই বিরোধ অটুট রইল এ দিনও। আর তাই, এ দিন ফরাক্কার নুরুল হাসান কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব থেকে তৃণমূলের মতোই নিজেদের সরিয়ে রাখল তামাম জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক-পুলিশ সুপারের মতো কোনও পদস্থ জেলা কর্তাকেই এ দিনের অনুষ্ঠানের ধারে-কাছে দেখা যায়নি বলে বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
তার নিন্দাও হয়েছে অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের অভ্যর্থনা সমিতির চিফ প্যাট্রন ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক রাজ্যপালকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দলের এই বিতর্ককে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল যে ফরাক্কায় এসেছেন তার জন্য মানুষ তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।’’
অনুষ্ঠানে মালদহের (দক্ষিণ) সাংসদ কংগ্রেসের আবু হাসেম খান চৌধুরী, কংগ্রেসের দুই বিধায়ক সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ তথা অনুষ্ঠানের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত খান উপস্থিত থাকলেও তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের দেখা যায়নি। তবে দিন দুয়েক আগে, কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা, বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী অবশ্য রাজ্য-রাজ্যপালের নিরন্তর সঙ্ঘাতে কার্যত রাজ্যপালকেই দুষেছিলেন।
তবে তৃণমূলের কোনও জনপ্রতিনিধি থেকে ফরাক্কার বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাকির হোসেনও পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন এ দিনের অনুষ্ঠান। জাকির ‘‘কলকাতায় জরুরি বৈঠকে রয়েছি’’ বলে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। এমনকি ফরাক্কার ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য তৃণমূল নেতা সোমেন পান্ডেও রাজ্যপালের ধারেকাছে ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy