Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪

স্নাতক পড়ুয়াদের জন্য গবেষণা কেন্দ্র খড়্গপুর আইআইটিতে

কিছু নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কারের প্রবণতা ছিল স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও কেন্দ্র ছিল না। রুটিন পড়াশোনার ফাঁকে নিজের উৎসাহে বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাগার ব্যবহার করতেন পড়ুয়ারা। এ বার পুরোদস্তুর একটি উদ্ভাবনী কেন্দ্র পেলেন আইআইটির পড়ুয়ারা।

উদ্ভাবনী কেন্দ্রে গবেষক পড়ুয়ারা। শনিবার খড়্গপুর আইআইটিতে।

উদ্ভাবনী কেন্দ্রে গবেষক পড়ুয়ারা। শনিবার খড়্গপুর আইআইটিতে।

দেবমাল্য বাগচী
শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৫৭
Share: Save:

কিছু নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কারের প্রবণতা ছিল স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও কেন্দ্র ছিল না। রুটিন পড়াশোনার ফাঁকে নিজের উৎসাহে বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাগার ব্যবহার করতেন পড়ুয়ারা। এ বার পুরোদস্তুর একটি উদ্ভাবনী কেন্দ্র পেলেন আইআইটির পড়ুয়ারা। এই কেন্দ্রে চর্চায় অ্যাকাডেমিক ক্রেডিট মিলবে বলেও জানালেন কর্তৃপক্ষ।

শনিবার খড়্গপুর আইআইটির পুরনো ভবন সংলগ্ন এলাকায় ওই উদ্ভাবনী কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়। আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র তথা শিক্ষক প্রয়াত মহম্মদ নাজিম ফারুকির নামে সেটি উৎসর্গ করা হয়েছে। কেন্দ্রের দ্বারোদ্ঘাটনও করেন নাজিম ফারুকির স্ত্রী সালেহা ফারুকি। গবেষণালব্ধ জিনিসপত্র রাখতে প্রদর্শনীকক্ষও হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুর আইআইটির ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী, অ্যালামনি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশেনাল রিলেশনশিপের ডিন সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র তথা এইচসিএলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অর্জুন মালহোত্র প্রমুখ।

আইআইটিতে প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন উৎসবের মধ্যেই এই উদ্ভাবনী কেন্দ্রের উদ্বোধন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাক্তন ছাত্র অর্জুন মালহোত্রর দেওয়া অর্থে কেন্দ্রটি গড়া হয়েছে। অনুষ্ঠানমঞ্চে একটি গবেষণার প্রথম জার্নালও প্রকাশ করা হয়।

নিত্যনতুন বিষয়ে গবেষণার অভ্যাস আইআইটিতে বহু পুরনো। বিভিন্ন বিভাগের অধীনে অধ্যাপক ও গবেষক পড়ুয়ারা নানা ধরনের গবেষনা করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। কখনও গবেষণায় সাফল্য মিললে সেটির পেটেন্ট করা হচ্ছে। স্নাতকোত্তরের পড়ুয়াদেরও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। তবে স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের জন্য এত দিন এই সুযোগ ছিল না। কেউ ব্যক্তিগত ইচ্ছে থেকে কোনও বিভাগের গবেষণাগার ব্যবহার করলেও যন্ত্রের অভাবে বেগ পেতে হত। এই গবেষণায় পড়ুয়ারা নিজেদের পাঠক্রমে আলাদা ক্রেডিট পেতেন না। ফলে, গবেষণায় আগ্রহ কমত।

নতুন গবেষণা কেন্দ্র হওয়ায় এ বার থেকে স্নাতকস্তরের পড়ুয়ারাও একটি নির্দিষ্ট স্থানে এসে গবেষণা করতে পারবেন। পাবেন যাবতীয় সরঞ্জাম। খড়্গপুর আইআইটি ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীর কথায়, ‘এই উদ্ভাবনী কেন্দ্রে ছাত্ররা স্বাধীনভাবে চব্বিশ ঘন্টা কাজ করতে পারবে। এর মাধ্যমে নতুন গবেষণাকে তাঁরা বাস্তবে রূপ দিতে পারবে।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত আইআইটির ডিন শিক্ষক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই কেন্দ্র এমন একটি জায়গা হয়ে উঠবে যেখানে টুকিটাকি কিছু করতে গিয়ে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারবে পড়ুয়ারা।’’

আপাতত ইলেকট্রনিক্স, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেনটেশন বিভাগকে এই কেন্দ্রের সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে। পরে আরও কিছু বিভাগকে এর সঙ্গে সংযুক্ত করার ইচ্ছে রয়েছে কর্তৃপক্ষের। পড়াশুনোর সঙ্গে গবেষণা করার সুযোগ আসায় খুশি আইআইটির পড়ুয়ারা। অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অরণ্য দাঁ বলেন, “এত দিন নতুন কিছু আবিষ্কারের ইচ্ছে থেকে নানা জিনিস তৈরি করেছি। কিন্তু সরঞ্জাম পেতে সমস্যা হত। সেই সমস্যা মিটছে, সঙ্গে পাঠক্রমে ক্রেডিট পাওয়াটা আরও ভাল।’’ এ দিন ওই কেন্দ্রের বাইরে পড়ুয়াদের হাতে তৈরি নানা প্রযুক্তির মডেল নিয়ে প্রদর্শনী করা হয়েছিল। নজর কাড়ছিল স্বয়ংক্রিয় জলযান। আইআইটির পড়ুয়া ক্ষিতিজ গোয়েলদের হাতে তৈরি স্বয়ংক্রিয় জলযান কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কোনও নাবিক ছাড়াই গন্তব্যে যেতে পারবে। ছিল স্বয়ংক্রিয় গাড়িও। গুগল জিপিএস ব্যবহার করে কয়েকটি সংস্থা এ ধরনের গাড়ি বের করেছে। কিন্তু আইআইটির ছাত্র সত্যম মুন্দ্রাদের হাতে তৈরি গাড়ি ক্যামেরা ও সেন্সারের মাধ্যমে চালক ছাড়া যে কোনও গন্তব্যে যেতে পারবে। নতুন উদ্ভাবনী কেন্দ্র আগামী দিনে এমন অনেক গবেষণার রাস্তা খুলে দিল বলেই সকলের আশা।

অন্য বিষয়গুলি:

iit kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy