ইদানীং প্রায় প্রতি বছরই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন ফাঁকা থাকছে। এ বার কিন্তু একেবারে রেকর্ড গড়েছে ফাঁকা আসনের সংখ্যা! এই অবস্থায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফাঁকা আসন পূরণের জন্য ‘ওপেন’ বা মুক্ত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ওই সব আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করবে। এ ভাবে ওপেন কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি এ বারেই প্রথম।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এ বার ১০১৭টির মধ্যে ১৪৭টি আসন ফাঁকা। আসন পূরণের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সে এক থেকে ৭০০০ পর্যন্ত স্থানাধিকারীদের কাউন্সেলিংয়ে ডেকে সেই সব আসন ভর্তি করা হবে। ওই স্থানাধিকারীদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যেই কোথাও না কোথাও ভর্তি হয়ে গিয়েছেন, তাঁরাও যাদবপুরের কাউন্সেলিংয়ে বসার সুযোগ পাবেন। সোমবার এই মর্মেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ।
কয়েক বছর ধরেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার চাহিদা কমছে। তার ফলে ফাঁকা থেকে যাচ্ছে বহু আসন। এ বছর রেকর্ড সংখ্যক আসন খালি থেকে গিয়েছে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড তিন দফায় কাউন্সেলিং করার পরে গোটা রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফাঁকা থেকে গিয়েছে ২৪ হাজারেরও বেশি আসন।
স্কুল স্তরের পরে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে। তা হলে এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে এমন ভাটার টান কেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার চাহিদা এ ভাবে কমে যাওয়ার পিছনে আছে শিল্পের অভাব এবং তার জেরে তৈরি হওয়া চাকরির আকাল। গোটা দেশেই এই অভাব প্রকট। তার মধ্যে আবার পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা শোচনীয়। যাদবপুর, শিবপুরের মতো রাজ্যের অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অনেক আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের তিন দফার কাউন্সেলিংয়ের পরেও বহু আসন খালি থাকায় এ বারে নিজেরাই কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করছে যাদবপুর। বস্তুত, শূন্য আসন পূরণের জন্য তাঁরা নিজেদের মতো করে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবেন বলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠান তাঁরা। সরকারের সম্মতি পাওয়ার পরে সোমবার আসন পূরণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ এ দিন বলেন, “অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, জয়েন্ট এন্ট্রান্সে জেনারেল ক্যাটিগরি বা সাধারণ শ্রেণির যে-সব ছাত্রছাত্রী সাত হাজারের নীচে ‘র্যাঙ্ক’ বা স্থান পান, তাঁরা যাদবপুরে সুযোগ পান না। তাই নিজেদের কাউন্সেলিংয়েও ওই র্যাঙ্ক পর্যন্তই ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।” কবে কাউন্সেলিং শুরু হবে, বিজ্ঞাপন দিয়ে তা জানানো হবে বলে জানান রেজিস্ট্রার।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা ইতিমধ্যেই কোথাও না কোথাও ভর্তি হয়ে গিয়েছেন, তাঁরা ফের কাউন্সেলিংয়ে বসার সুযোগ পেলে তাঁদের বর্তমান আসনগুলি ফাঁকা হয়ে যাবে। সেই সমস্যার মোকাবিলা করা হবে কী ভাবে? প্রদীপবাবু বলেন, “সেই সব আসনে ফের ছাত্র ভর্তি হয়ে যাবে। অসুবিধা কোথায়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy