Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রাজায় রাজায় যুদ্ধ, কাঁপন দুনিয়া জুড়ে

গত কয়েক দিন ধরে বাজারের অস্থিরতার মূল কারণ ছিল রাজায় রাজায় (মার্কিন-চিন) শুল্ক-যুদ্ধ, আর তার জেরে বিশ্ব বাজারে কম্পন। দেশের মধ্যে পরিস্থিতি মন্দের ভাল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই দফায় সুদ না কমালেও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাল ইঙ্গিত দেওয়ায় বাজার এ বারের ঋণনীতিকে ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করে।

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

এ যেন অনেকটা তৈলাক্ত বাঁশে বাঁদরের বেয়ে ওঠার অঙ্কের মতো। গত সপ্তাহে সূচকের ওঠানামা দেখে এটাই মনে হবে। এই ভাবে নিয়মিত ওঠাপড়ায় বাজারের দিশা কোন দিকে, লগ্নিকারীরা তা বুঝে উঠতে পারছেন না। যে সূচক কয়েক মাস আগে ৩৬ হাজারে উঠেছিল, তা এই ভাবে ওঠাপড়ার জেরে গত শুক্রবার থিতু হয়েছে ৩৩,৬২৭ পয়েন্টে।

গত কয়েক দিন ধরে বাজারের অস্থিরতার মূল কারণ ছিল রাজায় রাজায় (মার্কিন-চিন) শুল্ক-যুদ্ধ, আর তার জেরে বিশ্ব বাজারে কম্পন। দেশের মধ্যে পরিস্থিতি মন্দের ভাল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই দফায় সুদ না কমালেও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাল ইঙ্গিত দেওয়ায় বাজার এ বারের ঋণনীতিকে ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের আগাম অনুমান, আগামী দিনে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে ও ২০১৮-১৯ সালে দেশের বৃদ্ধি এগোতে পারে ৭.৪ % হারে। একই সপ্তাহে ইঙ্গিত মিলেছে এ বার বর্ষা স্বাভাবিক হবে। বেসরকারি স্কাইমেট-এর মতে এ বার স্বাভাবিক বর্ষা হওয়ার সম্ভাবনা ৫৫% এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বর্ষণের সম্ভাবনা ২০%। এই ইঙ্গিত বাজারের জন্য শুভ। বর্ষা ভাল হলে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

পাশাপাশি অন্য যে সব দিকে বাজারের নজর থাকবে সেগুলি হল: চতুর্থ ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ফলাফল, রাজস্থান এবং কর্নাটকে ভোটের ফল, বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি, মার্কিন মুলুকে সুদ আরও বাড়ে কি না, ভারতে বিদেশি লগ্নি-প্রবাহের ওঠা-পড়া ইত্যাদি। পরিস্থিতি যা, তাতে শুল্ক-যুদ্ধ নিয়ে যদি কোনও সমঝোতা হয়, তবে বাজার কিন্তু অনেকটাই শক্তি ফিরে পাবে। স্থিরতা আসবে সূচকে।

ইকুইটির বাজারে অস্থিরতা থাকায় মার্চে মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির বহর কমলেও, গোটা বছরে তা বেড়েছে বেশ আকর্ষণীয় হারে। মার্চে লগ্নিবৃদ্ধি মাত্র ৪% হলেও গোটা বছরে ফান্ড পরিচালিত মোট সম্পদ (এইউএম) বেড়েছে প্রায় ২৬%। ১৮.৩১ লক্ষ কোটি টাকা থেকে তা বেড়ে ৩১ মার্চে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ লক্ষ কোটি টাকা। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল দেশের বড় ফান্ডগুলির কিছু তথ্য।

আগের মাসগুলিতে নতুন ইস্যু কমবেশি সাফল্য পেলেও এক রকম ভরাডুবি হয়েছে মার্চে। বছরের শেষ মাসে বাজারে এসেছিল একগুচ্ছ ইস্যু। একমাত্র বন্ধন ব্যাঙ্ক ছাড়া বেশ খারাপ সাড়া পেয়েছে বাকি প্রায় সব ক’টি ইস্যুই। নতুন ইস্যুর বাজার হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ায় যে সব সংস্থা বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, তাদের অনেকেই ইস্যু পিছোনো বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী দিনে যে সব সংস্থা বাজারে আসতে চায়, তাদের দেখতে হবে, দাম যেন লাগামছাড়া না হয়। মনে রাখতে হবে, শুরুতেই লাভের আশায় লগ্নিকারীরা নতুন ইস্যুতে আবেদন করেন। অর্থাৎ দাম এমন হতে হবে, যাতে গোড়াতেই ৫-১০% লাভ ঘরে তোলা যায়। তবেই নতুন ইস্যুতে সাফল্যের সম্ভাবনা থাকবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Trade War China United States Share Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE