গত সপ্তাহে আবারও নতুন নজির গড়েছে সেনসেক্স ও নিফ্টি। দুটি সূচকই এখন সর্বকালীন উচ্চতায়। এর মানে কিন্তু এই নয় যে, সব ক্ষেত্রের অবস্থাই এখন তুঙ্গে। একজন মানুষ মোটাসোটা হলেই যেমন বলা যায় না তাঁর স্বাস্থ্য অত্যন্ত ভাল, ঠিক তেমনই সূচকের এই উচ্চতা প্রমাণ করে না, গোটা বাজারই খুব ভাল জায়গায়।
সেনসেক্স ও নিফ্টির এই দ্রুত বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয়, দেশের বৃহত্তম ৩০টি ও ৫০টি সংস্থা এখন বেশ ভাল অবস্থায়। তবে তা ইঙ্গিত দেয় না, দেশে মাঝারি ও নীচের সারির সংস্থাগুলি একই রকম ভাল জায়গায়। প্রকৃতপক্ষে গত কয়েক দিন ধরে সেনসেক্স যখন দু’এক দিন পরপরই আগের নজির ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ছিল, তখন কিন্তু বাজার ভাল রকম পতন দেখেছে বহু মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ শেয়ারের। ফলে এই দুই ক্ষেত্রের শেয়ারের উপর নির্ভরশীল অনেক ফান্ডেরই ন্যাভ কমেছে বেশ অনেকটা। সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৩০টি সংস্থার শেয়ারের সূচক সেনসেক্স যে-হারে বেড়েছে, তার থেকে কিন্তু কম হারে বেড়েছে ৫০টি শেয়ারের নিফ্টি।
এই সব কারণে দুই প্রধান সূচক নতুন উচ্চতায় ওঠা সত্ত্বেও নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট মূল্য বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন কিন্তু সপ্তাহের শেষে কিছুটা হলেও নেমেছে। তবে দেশের প্রথম সারির কিছু সংস্থা মরসুমের শুরু থেকেই ভাল তৃতীয় ত্রৈমাসিক ফল ঘোষণা করায়, তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রধান দুই সূচকের উপর। পরের দিকে সামগ্রিক ভাবে বেশির ভাগ সংস্থা যদি উন্নত ফল প্রকাশ করে, তবে হয়তো মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ শেয়ারগুলিকে আবার চাঙ্গা হতে দেখব।
গত সপ্তাহে প্রথম সারির যে-সব সংস্থা ফল প্রকাশ করেছে, সেগুলির মধ্যে আছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, এয়ারটেল, ইয়েস ব্যাঙ্ক,হিন্দুস্তানইউনিলিভার, আইটিসি,মাইন্ডট্রি, কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্ক ইত্যাদি। এই আটটির মধ্যে এয়ারটেল বাদ দিলে বাকি সব ক’টি সংস্থাই ভাল ফল করেছে। ভাল ফলের প্রভাবে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম বাড়ায় ৫ লক্ষ কোটি ছাড়িয়েছে বাজারে ব্যাঙ্কের মোট শেয়ার মূল্য। ফলে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এখন দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নথিবদ্ধ সংস্থা। তার আগে রিলায়্যান্স এবং টিসিএস। ভাল ফল করেছে আইটিসি এবং হিন্দুস্তান ইউনিলিভার। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল কিছু সংস্থার ফল।
শিল্প হিসেবে গত সপ্তাহে যে-সব শেয়ারের দাম বেশি বাড়তে দেখা গিয়েছে, সেগুলির মধ্যে বিশেষ ভাবে চোখে পড়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র। টিসিএস প্রথম বারের জন্য অতিক্রম করেছে ২,৯০০ টাকার মাত্রা। অনেকটা বেড়েছে আইসিআইসিআই, কোটাক, ইয়েস এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক।
ডিসেম্বরে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি নেমেছে ৩.৫৮ শতাংশে, যা কিছুটা স্বস্তির। নভেম্বরে এই হার ছিল ৩.৯৩%। পাশাপাশি সকলকে ভাবাচ্ছে তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। আগামী দিনে আর্থিক ফলের পাশাপাশি সূচকের নজর থাকবে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামের দিকেও।
বাজার থেকে ৬০০ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যে সেবি-র কাছে আবেদন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রাইটস। এ ছাড়া নতুন ইস্যুর পথে এগোচ্ছে আইআরসিটিসি, রেল বিকাশ নিগম, কল্যাণ জুয়েলার্স, লেমন ট্রি হোটেলস, বন্ধন ব্যাঙ্ক, শ্রেয়ী ইকুইপমেন্ট ফিনান্স, পলিসিবাজার ডট কম, আকাশ এডুকেশন, রিলায়্যান্স জেনারেল ইনশিওরেন্স, এইচডিএফসি এএমসি, ন্যাশনাল ইনশিওরেন্স ইত্যাদি। অর্থাৎ চলতি বছরেও বেশ জমজমাট থাকবে নতুন ইস্যুর বাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy