Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে ডাক এ বার চিনকে

নিজেদের অর্থনীতিকে ঘিরে পাঁচিল তুলতে চাইছে আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এত দিনের খোলা অর্থনীতিতে আগল দেওয়ার এই প্রবণতা ভারতকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে স্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

হাতে-হাত: চিনের অর্থমন্ত্রী জিয়াও জাই-এর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন অরুণ জেটলি। শনিবার নয়াদিল্লিতে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের দ্বিতীয় বার্ষিক সভার সূচনা পর্বে। জাই চিনের তরফে ওই ব্যাঙ্কের গভর্নরও। পিটিআই

হাতে-হাত: চিনের অর্থমন্ত্রী জিয়াও জাই-এর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন অরুণ জেটলি। শনিবার নয়াদিল্লিতে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের দ্বিতীয় বার্ষিক সভার সূচনা পর্বে। জাই চিনের তরফে ওই ব্যাঙ্কের গভর্নরও। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

নিজেদের অর্থনীতিকে ঘিরে পাঁচিল তুলতে চাইছে আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এত দিনের খোলা অর্থনীতিতে আগল দেওয়ার এই প্রবণতা ভারতকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে স্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। আর, তার মোকাবিলায় চিনকে পাশে নিয়েই এগোতে চায় ভারত।

শনিবার দিল্লিতে ব্রিকস-গোষ্ঠীর (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) দেশগুলির তৈরি ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক’-এর দ্বিতীয় বার্ষিক সভায় চিনের অর্থমন্ত্রী জিয়াও জাই-এর পাশে দাঁড়িয়ে এ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ভাল বলে দাবি করেও জেটলির যুক্তি, ‘‘ভারতের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হল বেশ কিছু দেশের রক্ষণশীল নীতির দিকে হাঁটার সম্ভাবনা। তার সঙ্গে রয়েছে আমেরিকার আর্থিক নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা।’’

তাৎপর্যপূর্ণ হল, অতীতে মনমোহন সিংহের জমানায় নয়াদিল্লি রক্ষণশীল নীতি নিয়ে এই চিনের দিকেই আঙুল তুলেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, চিন নিজেদের দেশে বাইরের পণ্য আমদানিতে বাধা তৈরি করে। অথচ নিজেদের তৈরি সস্তার পণ্য বিপুল পরিমাণে রফতানির মাধ্যমে অন্য দেশের বাজারে ‘ডাম্পিং’ করে।

এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় আমেরিকা চিনের থেকেও বেশি রক্ষণশীল হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত তাই অতীত নিয়ে তেমন না-ভেবে চিনকে সঙ্গে নিয়েই তার বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে চাইছে।

আরও পড়ুন: আটক ইউনিটেক কর্তা

জিয়াওয়ের এই মন্তব্যের মধ্যে কূটনৈতিক ব্যঞ্জনাও খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। কারণ, আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে দলাই লামার অরুণাচল সফরকে কেন্দ্র করে চিন রীতিমতো কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যুক্তি দিয়েছে, এর ফলে ভারত-চিনের সম্পর্ক টোল খাবে। তবে অরুণাচল নিয়ে বিবাদ হলেও, দু’পক্ষের অর্থনৈতিক সম্পর্কে তার আঁচ লাগুক, এমনটা চিন চাইছে না বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি।

বস্তুত, চিনের অর্থমন্ত্রীর উল্লেখ করা সমস্যার সমাধানেই ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন ও দক্ষিণ আফ্রিকা মিলে নতুন এই উন্নয়ন ব্যাঙ্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। আজ জেটলি বলেন, ২০১৭-য় ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.২ শতাংশ ছোঁবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী বছর তা ৭.৭ শতাংশে পৌঁছবে। আগামী পাঁচ বছরে ভারতের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৬৪,৬০০ কোটি ডলার লগ্নি প্রয়োজন হবে। যার শতকরা ৭০ ভাগই ব্যয় হবে বিদ্যুৎ, সড়ক, শহরের পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে। এই চাহিদা মেটাতে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে ২০০ কোটি ডলার ঋণও চেয়েছে নয়াদিল্লি।

অন্য বিষয়গুলি:

Xiao Jie Arun Jaitley India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE