Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ট্রাইয়ের নাম করে ফের ভুয়ো টাওয়ার সংস্থার প্রতারণা

কৌশল বদলে নতুন ভাবে প্রতারণার জাল ফেলছে ভুয়ো মোবাইল টাওয়ার সংস্থা। আগে টাওয়ার বসানোর জন্য এ ধরনের সংস্থা আগাম করের টাকা দাবি করছিল জমি বা বাড়ির আগ্রহী মালিকদের কাছে। এ বার টাওয়ার বসানোর জন্য টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই-এর ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) জোগাড় করতে অর্থ দাবি করছে ওই সব ভুয়ো সংস্থা। ট্রাই-এর পূর্বাঞ্চলীয় দফতরে এ ধরনের অভিযোগ এসেছে।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:২১
Share: Save:

কৌশল বদলে নতুন ভাবে প্রতারণার জাল ফেলছে ভুয়ো মোবাইল টাওয়ার সংস্থা।

আগে টাওয়ার বসানোর জন্য এ ধরনের সংস্থা আগাম করের টাকা দাবি করছিল জমি বা বাড়ির আগ্রহী মালিকদের কাছে। এ বার টাওয়ার বসানোর জন্য টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই-এর ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) জোগাড় করতে অর্থ দাবি করছে ওই সব ভুয়ো সংস্থা। ট্রাই-এর পূর্বাঞ্চলীয় দফতরে এ ধরনের অভিযোগ এসেছে। ট্রাই-কর্তারা যদিও স্পষ্ট জানান, তাঁরা টাওয়ার বসানোর জন্য যেমন কর নেন না, তেমনই ওই ধরনের সার্টিফিকেটও দেন না। ফলে সেই বাবদ অর্থ নেওয়ারও প্রশ্ন নেইা।

জমি-বাড়িতে মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে ভাড়া বাবদ আয়ের চাহিদা যথেষ্ট। মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি এ জন্য জমি-বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুক্তি করে। আর চাহিদা ও বাজারের সম্ভাবনার সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে প্রতারণার ছক কষেছে একাধিক ভুঁইফোঁড় সংস্থা।

এর আগে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অনেকেই কর বাবদ এ ভাবে বিপুল অঙ্কের টাকা আদায় নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ট্রাই ও টেলিকম দফতরে। চাকরির টোপও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরে টাওয়ার বসানো দূরস্থান, সংস্থারই হদিস মেলে না। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে জাল ছড়ায় সংস্থাগুলি। কিছু ভুয়ো সংস্থা স্বীকৃত ব্র্যান্ড-নাম বা লোগো সামান্য বদলে ব্যবহার করে জনমানসে আস্থা কুড়নোরও চেষ্টা করে। এ ভাবে বহু মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে টেলিকম দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা। আনন্দবাজারেও প্রতারণার খবর প্রকাশিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি, তার পরে ক’দিন একটু কমে এ ধরনের ঘটনা।

আবার সেই প্রতারণা চক্র ট্রাইয়ের নাম করে এনওসি আদায়ের মিথ্যা কারণ দেখিয়ে জাল বিছিয়েছে নতুন করে। ট্রাই সূত্রের খবর, ভুয়ো সংস্থাগুলি জমি-বাড়ির মালিকদের প্রথমে বলছে, টাওয়ার বসাতে ট্রাই ও টেলিকম দফতরের এনওসি তাঁদেরই জোগাড় করতে হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর বা শাখা তা দেয় না বলে কেউ তা হাতে পান না। তখন সংস্থার প্রতিনিধিরা তাঁদের বলে, নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিলে তারাই তাঁদের হয়ে তা জোগাড় করে দেবে। সরকারি কর্তাদের বক্তব্য, এটাই ফাঁদ। এ ভাবেই প্রতারণা করছে ভুয়ো সংস্থাগুলি।

ট্রাইয়ের কলকাতা আঞ্চলিক দফতরের উপদেষ্টা রূপা পাল চৌধুরি বলেন, “এ রকম কিছু অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু ট্রাই কোনও এনওসি দেয় না। ফলে টাকা জমা নেওয়ারও প্রশ্ন নেই। সচেতনতা বাড়াতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। টেলিকম পরিষেবা নিয়ে আয়োজিত কর্মশালাতেও বিষয়টি উল্লেখ করে বলে দিচ্ছি, এ জন্য কোনও অর্থ কাউকে না-দিতে। সেপ্টেম্বরে মুর্শিদাবাদে কর্মশালা হবে।”

সরকারি কর্তা ও শিল্পমহলের বক্তব্য, সরকার স্বীকৃত টাওয়ার সংস্থার তালিকা আছে। নিয়ম অনুযায়ী, আলোচনার মাধ্যমে টাওয়ার বসানোর শর্ত ঠিক করে বাড়ি-জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে সংশ্লিষ্ট টাওয়ার সংস্থা। তার পরে সরকারি সায় পেলে টাওয়ার বসে। বিনিময়ে চুক্তি মতো মাসিক ভাড়া পান মালিক। এ জন্য আগাম টাকা দিতে হয় না। সরকারি কর্তাদের আর্জি, অভিযোগ থাকলে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে যেতে হবে। কারণ, সরকারি স্তরে অভিযোগ না-পেলে টেলিকম দফতর বা ট্রাই নিজে থেকে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না।

অন্য বিষয়গুলি:

tower agency trai fraud tower agency in kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE