বিদেশি লগ্নি ও কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা টানতে দশটি জায়গাকে ‘স্মার্ট সিটি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজ্য। আজ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর সফরের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। তার কারণ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ শনিবারই তাঁর একদিনের সিঙ্গাপুর সফর শেষে বলেছেন, স্মার্ট সিটি প্রকল্পে সহায়তা করতে রাজি সিঙ্গাপুর।
শনিবার ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েলটর্স এবং রিয়েলটর্স অ্যান্ড এস্টেট কনসালট্যান্টস অ্যাসোসিয়েশন অব কলকাতা আয়োজিত আলোচনাসভায় জানানো হয়, স্মার্ট সিটি-র তকমা দেওয়া হচ্ছে, নিউটাউন, বোলপুর, দুর্গাপুর, বাউড়িয়া, রঘুনাথপুর, জয়গাঁ, ফুলবাড়ি, গঙ্গাসাগর, হুগলি, কল্যাণীকে। নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন সভায় জানান, এই তালিকা-সহ পরিকল্পনার খুঁটিনাটি কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে।
পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওই সভায় বলেন, “স্মার্ট সিটিগুলি মূলত গড়ে উঠবে তথ্যপ্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। সেই কারণে আমরা যে সিঙ্গাপুর যাচ্ছি, সেখানে একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরি এবং আবাসন-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোর কাজে দক্ষ সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করব। পাশাপাশি, মোনো-রেল-এর মতো গণ পরিবহণ ব্যবস্থা তৈরি করতে সরকার পিপিপি মডেলে কাজ করতে চায়। সে জন্য এই ধরনের কাজে দক্ষ, এমন সব বিদেশি সংস্থার সঙ্গেও কথা বলা হবে।”
গত জুলাই মাসে পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘স্মার্ট সিটি’-র প্রসঙ্গ উঠে আসে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, উন্নয়নের ফলে গ্রাম ছেড়ে শহরে বাস করার প্রবণতা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। যাদের লক্ষ্য উন্নতমানের জীবনযাত্রা। আর এই নতুন মধ্যবিত্তদের জন্য চাই নতুন শহর। বর্তমান বড় শহরগুলির পাশে ছোট ছোট এ সব শহরে গড়ে উঠবে আবাসন-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো। এ ধরনের শহরকেই ‘স্মার্ট সিটি’ বলেছেন জেটলি। দেশ জুড়ে ১০০টি স্মার্ট সিটি তৈরির পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। বরাদ্দ হয়েছে ৭০৬০ কোটি টাকা।
দেবাশিসবাবু জানান, এ ধরনের স্মার্ট সিটির নাগরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলবে রাজ্য। রাস্তাঘাট, নিকাশি, আলো ও জলের মতো ন্যূনতম পরিষেবা ব্যবস্থার দায় সরকার নেবে। তবে আবাসন ও সামাজিক পরিকাঠামো তৈরির জন্য দেশি-বিদেশি নির্মাণ সংস্থার লগ্নির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর সফর চলাকালীন এ ধরনের প্রকল্পে বিনিযোগ করতে আগ্রহী সংস্থা এগিয়ে আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন। প্রসঙ্গত, সিঙ্গাপুরের সংস্থা কেপেল ম্যাগাস রাজারহাটে আবাসন তৈরিতে বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু সেই ব্যবসা বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থাকে বিক্রি করে দিয়ে প্রকল্প থেকে সরে গিয়েছে এই সংস্থা।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এ ধরনের শহরে আবাসন তৈরির জন্য প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানতে কেন্দ্র প্রকল্পের মাপ ২০ হাজার বর্গ মিটারে নামিয়ে এনেছে। আগে ৫০ হাজার বর্গ মিটারের নীচে কোনও প্রকল্প প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নেওয়ার ছাড়পত্র পেত না। একই সঙ্গে নামিয়ে আনা হয়েছে লগ্নির পরিমাণ। নতুন নিয়মে ন্যূনতম লগ্নির পরিমাণ ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার (৩০ কোটি ডলার)। আগে তা ছিল ১ কোটি ডলার। প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়সীমা অবশ্য তিন বছরই রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy